বিদ্যার্থীরা কোনও বৃত্তিমূলক পরীক্ষার ভালো ফল করবে। বিবাহার্থীদের এখন ভালো সময়। ভাই ও বোনদের কারও ... বিশদ
মালদহে বাড়ি ফিরে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের সংখ্যা যত বাড়ছে, জেলায় করোনা পজিটিভের সংখ্যাও তত বাড়ছে। সেইসঙ্গে বাড়ছে তাঁদের নিয়ে আতঙ্ক। মালদহের একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা পরিযায়ী শ্রমিকরা কোয়ারেন্টাইন সেন্টার থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার পর যাতে সামাজিক বয়কট বা অন্য কোনও সমস্যার শিকার না হন, সেজন্য সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে চাইছে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। জেলার একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় এধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। করোনা মোকাবিলার পাশাপাশি গুজব রুখতেও মরিয়া পঞ্চায়েত। কোয়ারেন্টাইন সেন্টার থেকে ফিরে শ্রমিকরা যাতে সুস্থ পরিবেশে বসবাস করতে পারেন, সেবিষয়েও বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। রবিবার সকালে পুরাতন মালদহের মুচিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি প্রাথমিক স্কুলের কোয়ারেন্টাইন সেন্টার থেকে একসঙ্গে ৪৫ জন পরিযায়ী শ্রমিককে ছেড়ে দেওয়া হয়। তাঁদের প্রত্যেকের লালারস পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ ছিল বলে পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে।
পুরাতন মালদহের মুচিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি প্রধান শুভলক্ষ্মী গাইন চৌধুরী বলেন, রবিবার আমাদের এলাকার মোট ৪৫ জন শ্রমিককে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা গ্রামে নিজের নিজের বাড়ি গিয়ে থাকবেন। প্রত্যেকের লালারস সংগ্রহ করা হয়েছিল। রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় বাড়িতে থাকার জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হল। তবে এলাকাবাসী তাঁদের যাতে কোনওভাবে বিরক্ত না করেন, সেজন্য আমরা উদ্যোগ নিয়েছি। এলাকায় জোর প্রচার করা হচ্ছে। তাঁরা পরিযায়ী শ্রমিক হলেও আদতে গ্রামেরই বাসিন্দা। তাঁদের যাতে কোনও প্রকার অসুবিধা না হয়, সে বিষয়টি পঞ্চায়েত নজর রাখছে।
মঙ্গলবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের স্বামী জামিরুল ইসলাম বলেন, শ্রমিকরা গ্রামে ফিরে যাতে সুস্থভাবে বসবাস করতে পারেন, সেবিষয়টি আমরা দেখছি। প্রতিদিন কোয়ারেন্টাইন সেন্টার পরিদর্শনের পাশাপাশি গ্রামে গিয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। আমাদের এলাকার যেসব বাসিন্দা করোনা পজিটিভ ছিল, তাঁরা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। তাঁদের সমস্যা যাতে না হয়, সেজন্য এলাকায় বিভিন্ন ভাবে প্রচার করা হচ্ছে।
চাঁচল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান কংগ্রেসের উৎপল তালুকদার বলেন, যাঁরা কোয়ারেন্টাইন সেন্টার থেকে বাড়ি ফিরছেন, তাঁদের সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে ভালোভাবে মেনে নেওয়া উচিত। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে তাঁদের অন্যচোখে দেখা হচ্ছে। তাই আমরা এলাকায় প্রচার করছি যাতে শ্রমিকদের সঙ্গে কেউ অন্যরকম আচরণ না করেন। অপপ্রচার ও গুজব রুখে দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য। এতে প্রশাসনও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে।
মালদহের প্রায় প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতেরই একাধিক বাসিন্দা কোয়ারেন্টাইন সেন্টার রয়েছেন। অনেকে আবার করোনা আক্রান্ত হওয়ায় কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কেউ বা এর মধ্যে বাড়ি ফিরে এসেছেন। তবে সার্বিকভাবে দেখা যাচ্ছে, যাঁরা বাড়ি ফিরছেন, তাঁদের সামাজিকভাবে বয়কট করার একটা প্রবণতা তৈরি হচ্ছে এলাকায়। এমনটা যাতে না হয়, সেজন্য পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ এলাকায় প্রচার করছে। এদিন যে ৪৫ জন শ্রমিককে ছাড়া হয়েছে, তাঁরা প্রত্যেকে মুচিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ইংলিশটোলা, বারুইপাড়া এলাকার বাসিন্দা। অনেকেই শ্রমিকের কাজে কেরলে গিয়েছিলেন। লকডাউনের কারণে ফিরে এসে মুচিয়া মহাদেবপুর প্রাইমারি স্কুলের কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে ছিলেন।