সংবাদদাতা, হরিশ্চন্দ্রপুর: হরিশ্চন্দ্রপুরের কিশোরী খুনের ঘটনায় মৃতদেহ উদ্ধারের পর ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই দু’জনকে গ্রেপ্তার করল পুলিস। জানা গিয়েছে, পুলিসের তদন্তের বড় সহায় হয়ে দাঁড়িয়েছে মৃতার মোবাইলের কললিস্ট। সেই মোবাইল ফোনের সূত্র ধরেই হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিস ওই ছাত্রীর প্রেমিক ও তার এক সঙ্গীকে গ্রেপ্তার করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। ওই কিশোরীকে হত্যার আগে তার উপর শারীরিক নির্যাতনও করা হয়েছিল বলে অনুমান পুলিসের।
পুলিস সূত্রে জানা যায়, ধৃত একজনের নাম সাহাবুল হক। এর সঙ্গেই মৃতার সম্পর্ক ছিল বলে জানা গিয়েছে। সাহাবুলের সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়ছে শামিম আখতারকেও। সম্পর্কে শামিম সাহাবুলের পিসতুতো ভাই। দু’জনেরই বাড়ি চাঁচল থানার ধানগাড়া বিষণপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। বৃহস্পতিবার ভোরে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিস তাদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে আসে। দিনভর এই দুই অভিযুক্তকে থানায় রেখে পুলিস জিজ্ঞাসাবাদ করে। জানা গিয়েছে, পুলিসের কাছে প্রাথমিকভাবে ধৃতরা স্বীকার করেছে যে তারা ওই ছাত্রীকে খুন করে মাটিতে পুঁতে দিয়েছিল। তবে এই ঘটনায় তাদের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না, তা পুলিস খতিয়ে দেখছে। তদন্তের স্বার্থে পুলিস ঘটনার পুনর্নির্মাণ করবে বলে জানা গিয়েছে। সমস্ত আঁটঘাট বেঁধেই পুলিস ছাত্রী খুনের ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বলে জানা গিয়েছে। ঘটনায় জড়িত কেউ রেহাই পাবে না বলে পুলিসের দাবি।
হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি সঞ্জয়কুমার দাস বলেন, নিহত ছাত্রীর মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে দু’জন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এদিন সকালে। দু’জনকেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। শুক্রবার তাদের চাঁচল মহকুমা আদালতে তোলা হবে। তদন্তের স্বার্থে তাদের পুলিস হেফাজতে নেওয়া হবে সেই সঙ্গে ঘটনার পুনর্নিমাণ করা হবে। চাঁচল মহকুমা পুলিস আধিকারিক সজলকান্তি বিশ্বাস বলেন, ছাত্রী খুনের ঘটনায় দু’জনকে পুলিস গ্রেপ্তার করেছে। এই খুনের পেছনে আর কেউ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে মৃতের পরিবারের সদস্যরা দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করার জন্য পুলিসকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। মৃতের দাদা বলেন, আমার বোনকে নির্মম ভাবে অত্যাচার করে খুন করে মাটিতে পুঁতে দেওয়া হয়েছে। আমরা দোষীদের ফাঁসি চাই। এদিন থানায় গিয়ে পুলিসকে সেই দাবি জানিয়ে এসেছি। মৃত ছাত্রীর মা বলেন, আমার স্বামীকেও নয় বছর আগে দুষ্কৃতীরা হত্যা করেছিল। আবার আমার মেয়েকে অত্যাচার করে খুন করা হয়েছে। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি। তারা যাতে কোনওভাবেই ছাড়া না পায়। মৃতের এক আত্মীয় বলেন, সাহাবুল হকের সঙ্গে মৃত ওই কিশোরীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সাহাবুল ওই কিশোরীকে ডেকে নিয়ে প্রথমে তার পিসতুতো ভাই শামিমের বাড়িতে রাখে। পরে দুইজনেই তার উপর শারীরিক নির্যাতন চালায়। পরে নিজেদের কুকীর্তি ধামাচাপা দিতে মেয়েটিকে খুন করেছে।
উল্লেখ্য হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লকের দেগুন নয়াটোলা মাঠে মাটির তলা থেকে বুধবার এক দশম শ্রেণীর ছাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃত ওই ছাত্রীর বাড়ি হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লকের রাঙাইপুর পহলমান গাছি গ্রামে।