স্বাস্থ্য বেশ ভালোই থাকবে। আর্থিক দিকটিও ভালো। সঞ্চয় খুব ভালো না হলেও উপার্জন ভালো হবে। ... বিশদ
প্রতিবছর মে মাসের শেষের দিক নাগাদ আম রপ্তানি নিয়ে আম পাকার মরশুমে ব্যবসায়ী মহলে তৎপরতা শুরু হয়ে যায়। কিন্তু এবছর লকডাউনের কারণে রাজ্য বা দেশের বাইরে আম রপ্তানির আশাই একপ্রকার ছেড়ে দিয়েছেন মালদহের ব্যবসায়ীরা। যদিও জেলার উদ্যান পালন দপ্তরের কর্তাদের বক্তব্য, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আম রপ্তানি যাতে করা সম্ভব হয় সেজন্য তাঁরা চেষ্টা চালাচ্ছেন। জেলার আম ব্যবসায়ীরা বলেন, এখনও পর্যন্ত বাইরে থেকে আসা আম রপ্তানির বরাত শূন্য। কোনও রাজ্য থেকেই কেউ আম রপ্তানির জন্য এজেলার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। যে কারণে সকল আম ব্যবসায়ীরা চরম উৎকণ্ঠায় রয়েছেন।
এবিষয়ে জেলার উদ্যান পালন দপ্তরের সহ অধিকর্তা রাহুল চক্রবর্তী বলেন, বিদেশ থেকে আমদানি জন্য আমরা কোনও প্রস্তাব পাইনি। তবে দেশের বাজারে যেখানে চাহিদা রয়েছে, সেখানে আমরা আম পাঠাবার জন্য যোগাযোগ শুরু করেছি। মালদহ ম্যাংগো মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি উজ্জল সাহা বলেন, এক লক্ষ মেট্রিক টন আম জেলার বাইরে নিয়ে যাওয়া নিয়ে কোনও সবুজ সঙ্কেত আমরা পাইনি। আম রপ্তানির বরাত নেই। ঝড়-বৃষ্টি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরেও আমের ফলন মোটামুটি ভালোই ছিল। কিন্তু যদি জেলায় উৎপাদিত আম বাইরে না যায়, তাহলে মালদহের আমকেন্দ্রিক অর্থনীতিতে বড় ধাক্কা লাগতে পারে। মালদহের বাসিন্দাদের একটা বড় অংশই উপার্জনের ব্যাপারে আমের উপর নির্ভরশীল। স্বাভাবিকভাবেই আম রপ্তানি নিয়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
এবছর আমের মরশুমের শুরুতেই তিন লক্ষ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। লকডাউনের কারণে পরিচর্যার অভাব, একাধিকবার ঝড়-বৃষ্টি, কালবৈশাখী থেকে শুরু করে সম্প্রতি উম-পুন দুর্যোগের কারণে সব মিলিয়ে এক লক্ষ মেট্রিক টন আম তো নষ্টই হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে বাদবাকি দুই লক্ষ মেট্রিক টন আম নিয়ে আশায় বুক বেঁধেছেন আম চাষিরা। আম উৎপাদক মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্যান্য বছর প্রায় একলক্ষ মেট্রিক টন আম দেশ বিদেশে রপ্তানি করা হয় মালদহ থেকে। বর্তমানে আম পরিপুষ্ট হওয়ার সময় এসেছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত আম রপ্তানি নিয়ে সরকারের তরফে কোনও অনুমতি মেলেনি। যদিও আম চাষিদের স্বার্থে উদ্যান পালন দপ্তর সবরকম প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ব্যবসায়ী মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওড়িশা, অসম, সিকিম, মেঘালয়, দিল্লি সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মালদহের আমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সেইসঙ্গে দেশের বাইরেও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে মালদহের আম পাড়ি দেয়। কিন্তু লকডাউনের কারণে দেশে বা দেশের বাইরে আদৌ এবার আম পাঠানো সম্ভব হবে কি না, তা নিয়েই সন্দেহ দেখা দিয়েছে।