স্বাস্থ্য বেশ ভালোই থাকবে। আর্থিক দিকটিও ভালো। সঞ্চয় খুব ভালো না হলেও উপার্জন ভালো হবে। ... বিশদ
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে বেশ কয়েকবার ঝড় হয়। সেইসঙ্গে ভারি বৃষ্টিপাতও হয়। সেই ঝড়ে বালুরঘাটের চকভৃগুর কুয়ারন এলাকায় শতাধিক বাড়ির টিনের চাল উড়ে গিয়েছে। মাটির বাড়ি ভেঙে গিয়েছে। চিঙ্গিশপুরে একটি বাড়ির উপর গাছ পড়ে যাওয়ায় দেওয়াল ভেঙে যায়। সেই ভাঙা দেওয়াল চাপা পড়ে একটি গোরুর মৃত্যু হয়েছে। ঝড়ের প্রকোপ থেকে বাঁচতে কৃষকরা ধান কেটে জমিতে রেখেছিলেন। সেই ধান জলে ডুবে গিয়েছে। বেশ কিছু এলাকায় জমা জলে ধানের গাছ পচতে শুরু করেছে। জেলা প্রশাসনের তরফে বালুরঘাট ব্লকে কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার হিসেব কষা শুরু হয়েছে।
জেলা মুখ্য কৃষি অধিকর্তা জ্যোর্তিময় বিশ্বাস বলেন, ঝড়ের কারণে আগেও কৃষকদের ক্ষতি হয়েছে। নতুন করে মঙ্গলবার রাতের ঝড়ে আরও বেশি ক্ষতি হয়েছে। ধান গাছ পড়ে গিয়েছে। সেই গাছগুলিতে পচন ধরতে শুরু করবে এবার। পাট গাছে পচে গিয়ে মরে যাচ্ছে। আমাদের আধিকারিকরা ব্লকজুড়ে রিপোর্ট তৈরির কাজ শুরু করেছে।
মাঝিয়ানের আবহাওয়া পর্যবেক্ষক সুমন সূত্রধর বলেন, ৩৭ কিলোমিটার বেগে ঝড় হয়েছে। বালুরঘাট ব্লকে ঝড়ের প্রকোপ বেশি ছিল। আগামী ৩১ তারিখ পর্যন্ত ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে।
কুয়ারনের বাসিন্দা দাউদ তিরকি, এলিজাবেথ সোরেনরা বলেন, আমাদের বাড়ি এবার ভেঙেই গিয়েছে। এক সপ্তাহ আগের উম-পুন ঝড়ে বাড়ির টিনের চাল উড়ে গিয়েছিল। এমনিতেই তা নিয়ে সমস্যায় ছিলাম। এবারে তো ভেঙেই গেল। এখন হাতে টাকা নেই। কিভাবে বাড়ি মেরামতের কাজ শুরু করব তা নিয়ে চিন্তায় আছি।
গত বুধবারই রাজ্যে তাণ্ডব করে গিয়েছে উম-পুন। দক্ষিণবঙ্গের উপরেই মূলত তার কোপ পড়লেও গৌড়বঙ্গের মালদহ ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাতেও সেজন্য কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সেই সুপার স্লাইকোনের প্রভাবে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় কৃষিতে প্রায় ৩০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে এখনও অবধি হিসেব পাওয়া গিয়েছে। জেলার ধান ও পাট তো বটেই সেইসঙ্গে ঢ্যাঁড়শ, কুমড়ো, লঙ্কা সহ একাধিক ফসলের ক্ষতি হয়েছে। তারপর দিন সাতেক কাটতে না কাটতেই আবার ঝড়ের ফলে ব্যাপক সমস্যায় পড়েছেন চাষিরা। একের পর এক ঝড়ের কারণে বালুরঘাট ব্লকের বাসিন্দাদের ঘুম ছুটেছে। একদিকে কৃষি কাজে ক্ষতি, অন্যদিকে বাড়িঘরের ক্ষতি হওয়ার ফলে আর্থিক মাশুলও গুণতে হচ্ছে। মঙ্গলবার রাতের ঝড়ের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চকভৃগু, কুয়ারন, গঙ্গাসাগর, দোগাছি, চিঙ্গিশপুর সহ একাধিক এলাকা। দমকা হাওয়ায় বাড়ির টিনের চাল বাড়ি থেকে অনেক দূরে গিয়ে পড়েছে। ঝড়ের মধ্যেই অনেকে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে সেগুলি খুজতে বেরিয়ে পড়েন। বহু কাঁচা বাড়ি ভেঙে গিয়েছে। একে তো জমিতে জল জমে যাওয়ার কারণে ধান কাটা বন্ধ। তার মধ্যে আবার ঝড়ে ধানগাছ পড়ে গিয়েছে। ধান ঝড়েও গিয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত ক্ষতির পরিমাণ জানা সম্ভব হয়নি। ক্ষতিগ্রস্তরা প্রশাসনের কাছে ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন।