ইন্দ্র মহন্ত, বালুরঘাট, সংবাদদাতা: চিঙ্গিসপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে কন্যাশ্রী প্রাপকদের ৩০টির বেশি আবেদনে একই ফোন নম্বর থাকায় বিতর্ক তৈরি হয়েছে। আরও চাঞ্চল্যকর ব্যাপার হল যে ফোন নম্বর দেওয়া রয়েছে সেটি স্কুলের এক কর্মীর ফোন নম্বর। এখন হাতে হাতে মোবাইল ফোন থাকলেও ছাত্রীদের নিজেদের বা পরিবারের কারও ফোন নম্বর না দিয়ে সেখানে স্কুলের একজন কর্মীর নম্বর কেন দেওয়া হল তা নিয়ে তদন্তের দাবি উঠেছে। প্রশাসনও জানিয়েছে বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। এনিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। মঙ্গলবারই জেলা প্রশাসনের নির্দেশে তিনজন সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শক বিদ্যালয়ে তদন্ত করতে যান। সেখানে প্রধান শিক্ষক সহ বাকিদের কাছে অভিযোগ শোনা হয়, যাচাই করা হয় একাধিক তথ্য। এনিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক নিখিল নির্মল বলেন, অনেক সময় কারও ফোন না থাকলে প্রতিবেশী অথবা শিক্ষকদের নম্বর মেয়েরা দিয়ে থাকে। তবে একই নম্বর এতগুলি আবেদনে দেওয়া নিয়ম বিরুদ্ধ। ঘটনার তদন্ত চলছে। তদন্তের স্বার্থে এখন কিছু বলতে পারব না। সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শক অভিজিৎ কর বলেন, অভিযোগের তদন্ত করতে ওই স্কুলে গিয়েছিলাম। আমরা তিনজন সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শক গিয়েছিলাম। তদন্ত শেষ হলে রিপোর্ট জমা দেব। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মানবেশ লাহাও বলেন, যা বলার প্রশাসন বলবে। এই বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। এদিকে ওই স্কুলের কর্মীর দাবি, বহু ক্ষেত্রেই অনেক ছাত্রীর ফোন নম্বর পাওয়া যায় না। তাই আমি একাধিক ফর্মে আমার নম্বর দিয়ে দিয়েছি।
এবছর চিঙ্গিসপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রায় ৯০ জন ছাত্রী কন্যাশ্রী প্রকল্পে ২৫ হাজার টাকা করে পেয়েছে। তাদের মধ্যে প্রায় ৩০ জনের আবেদনে বিদ্যালয়ের এক কর্মীর ফোন নম্বর দেওয়া রয়েছে। পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের কাছে পোর্টালে মেয়েদের যে তথ্য রয়েছে সেখানেও সেই নম্বর দেওয়া রয়েছে। ৯০ জনের মধ্যে প্রায় ৩০ জনের আবেদনে বিদ্যালয়ের কর্মীর কেন নম্বর দেওয়া হল তা নিয়েই অনকে প্রশ্ন তুলেছেন। কন্যাশ্রী প্রাপক এই ৩০ জনের মধ্যে অনেকের নিজস্ব মোবাইল ফোন রয়েছে। স্বাভাবিকভাবে তাদের নিজের মোবাইল নম্বর না দেওয়া নিয়ে রহস্য তৈরি হয়েছে। কন্যাশ্রীর সঙ্গে জড়িত যাবতীয় তথ্যের মেসেজ ওই ফোন নম্বরে আসে। টাকা ঢোকার মেসেজও সেই নম্বরে আসবে। যদিও কর্তৃপক্ষের দাবি, অনেকের মোবাইল না থাকার কারণে সেই সব আবেদনে বিদ্যালয়ের এক কর্মীর নম্বর দেওয়া রয়েছে।
পুরো বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা মহলের পাশাপাশি প্রশাসনে হইচই পড়ে গিয়েছে। ঘটনার তদন্তে মঙ্গলবারই জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের তরফে এআইদের স্কুলে পাঠানো হয়।