পারিবারিক ঝামেলার সন্তোষজনক নিষ্পত্তি। প্রেম-প্রণয়ে শুভ। অতিরিক্ত উচ্চাভিলাষে মানসিক চাপ বৃদ্ধি।প্রতিকার: আজ দই খেয়ে শুভ ... বিশদ
বছর ১৯’র ওই যুবক নবাব দেবশর্মা বলেন, আমার এখানে এলে ঈশ্বরের কথা শুনতে হবে। বিশ্বাস রাখতে হবে। তবেই সমস্ত রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। এখানে এসে জটিল ব্যাধি থেকে অনেকেই মুক্তি পেয়েছেন। যাঁরা আসেন তাঁরা বলেন, এখানে এসে মানসিক শান্তি পাচ্ছি। আমাদের বহু রোগ সেরে যাচ্ছে। আগে যে যন্ত্রণা অনুভব করতাম তা এখন উধাও হয়ে গিয়েছে।
প্রতি শুক্রবার করে ঝিটকিয়া রেল স্টেশন সংলগ্ন নবাবের বাড়িতে হাজার হাজার মানুষ তাঁর বাণী শুনতে আসেন। তাঁর ধর্মকথা শুনে আবার তাঁরা বাড়ি ফিরে যায়। বাইরে প্যান্ডেল করে লোক বসাতে হয়। অসহ্য গরম কিংবা তুমুল বৃষ্টি উপেক্ষা করেই হাজার হাজার লোক ভিড় করছেন। পরনে নেই কোনও গেরুয়া বস্ত্র। নেই রসকলি। স্মার্ট বেশে সদা হাস্যময় মুখ নিয়েই তিনি ধর্মকথা বলে চলেছেন। লোকে বিভোর হয়ে শুনছেন। আত্মতৃপ্তি লাভ করে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। পাড়া-গাঁয়ে ছড়িয়ে দিচ্ছেন সাধুবাবার কথা।
নবাবের দাবি, স্থানীয় বাহিন হাইস্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছেন। এরপর কলেজে ভর্তি হলেও পড়াশুনা আর করেননি। তিনি সাধুসন্তদের মতো সাধারণ মানুষের সংস্পর্শে এসে তাঁদের সমস্ত দুঃখ থেকে মুক্তি দেওয়ার কাজে নেমে পড়েছেন। তবে মুক্তি পেতে হলে তাঁর আয়োজিত সভায় উপস্থিত থাকতে হবে নিয়মিত— এমনই নিদান নবাবের।
তবে এসবের বিনিময়ে তিনি কি কোনও অর্থ দাবি করেন? উত্তরে নবাব দেবশর্মা বলেন, এখানে অংশ নিতে কোনও টাকা লাগে না। শুধু উপরওয়ালার কথা শুনতে হয়। তাঁর পথ অনুসরণ করতে হয়। তবে কেউ খুশি হয়ে কিছু অর্থ দান করলে তা আমি নিই। একটি অনুষ্ঠানে তাঁর ১০-১৫ হাজার টাকাও কখনও হয়ে যায়। সেই টাকার সিংহভাগই তিনি পাঠিয়ে দেন তাঁর গুরুদেবের কাছে। কে সেই গুরুদেব? তিনি বলেন, গুরুদেব থাকেন হৃষিকেশে। সেখানেই টাকা পাঠিয়ে দিই। সাধারণ কৃষক পরিবারের ছেলে নবাব বলেন, জেলার রসাখোয়ার মহেশপুরের এক ব্যক্তির কাছ থেকে তিনি এসব মহৎ বাণী শিখেছেন। ওই ব্যক্তির সম্মতি নিয়েই এখন সবাইকে বাণী শোনাচ্ছেন।
এই প্রসঙ্গে রায়গঞ্জের চিকিৎসক জয়ন্ত ভট্টাচার্য বলেন, যে পদ্ধতি অবলম্বন করে গ্রামের মানুষের রোগ সারিয়ে দেওয়ার দাবি করা হচ্ছে তা অর্ধসত্য। কিছু শারীরিক সমস্যা টেনশন থেকে হয়। যে কোনও ধর্মস্থানে গেলে কিংবা ধর্মীয় সভায় সময় অতিবাহিত করলে সেই মানসিক শান্তি মেলে। এতে গ্যাস, অম্বল, মাথাব্যাথার মতো বেশ কিছু রোগ থেকে মুক্তি মিলতে পারে। কিন্তু তা বলে দূরারোগ্য ব্যাধি সারানোর দাবি যেটা করা হচ্ছে তা পুরোপুরি ভিত্তিহীন।
পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের উত্তর দিনাজপুর জেলার সহ সম্পাদক বিপুল মৈত্র বলেন, ওই যুবকের কর্মকাণ্ডের বিষয়ে আমরা জানতে পেরেছি। এভাবে রোগ সারানো যায় না। আমরা ওই গ্রামে যাব।