অসীম দত্ত, শিলিগুড়ি: যেমন করেই হোক মানুষকে গরিব বানিয়ে রাখ। পেটের ভাত জোগাড় করার প্রাণান্তকর চেষ্টা করতে গিয়ে তারা আর কিছু ভাবার সময়ই পাবে না। সেই সুযোগে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করে নেবে। গণতন্ত্রকে পঙ্গু করতে সেটাই বিজেপির উদ্দেশ্য বলে আক্রমণ করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। 
মঙ্গলবার বাগডোগরার গোঁসাইপুরে দার্জিলিং কেন্দ্রের প্রার্থী গোপাল লামার সমর্থনে প্রচারে এসেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। মূল্যবৃদ্ধি, আবাস ও একশো দিনের টাকা আটকে রাখা সহ বিজেপির একাধিক জনবিরোধী কাজের বিরুদ্ধে মুখর হন তিনি। জনগণের হকের টাকা মেরে বিজেপি দিল্লিতে ফাইভ স্টার পার্টি অফিস বানিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন  অভিষেক। তাঁর  কথায়, বিজেপির উদ্দেশ্য হল মানুষকে বঞ্চিত করা। অনেক হয়েছে অত্যাচার, নিপীড়ন, শোষণ, অপশাসন। এবার বিজেপিকে বিসর্জন দিন। গরিব মানুষের ১০০ দিনের কাজ, আবাসের টাকা বন্ধ করে  দিল্লিতে ফাইভ স্টার পার্টি অফিস, দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী ও উপরাষ্ট্রপতির বাসভবন তৈরি হচ্ছে ২ হাজার কোটি টাকা খরচ করে।
ভোট প্রচারের শুরু থেকেই মোদি বলতে শুরু করেছেন ১০ বছরে শুধু ট্রেলার দেখেছেন। এরপর আপনারা ছবি দেখতে পাবেন। সে প্রসঙ্গে অভিষেকের তোপ, আপনারা কী ট্রেলার দেখলেন? ৪০০ টাকার গ্যাস এখন হাজার টাকা। ৫০ টাকার পেট্রল ১০০ টাকা, তিন টাকার ডিম হয়েছে সাত টাকা, এই যদি ট্রেলারের নমুনা হয়, তাহলে ফের ক্ষমতায় এলে কী দুর্ভোগ অপেক্ষা করছে, সেটা হিসেব করে নিন! অভিষেকের আহ্বান—
২৬ তারিখ দ্বিতীয় দফার ভোটে বিজেপিকে বাংলা ও দেশ থেকে বিসর্জন দিন। 
আধার, প্যান লিঙ্ক করার নামে মাঝে মধ্যেই ‘হেনস্তা’ করা হয় সাধারণ মানুষকে। সেই প্রসঙ্গ তুলে অভিষেকের আক্রমণ, গরিব মানুষদের কাছ থেকে প্যান, আধার লিঙ্কের নামে এক হাজার টাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে চুরি করেছে মোদি সরকার। কেউ বলতে পারবেন, দুয়ারে সরকার শিবিরে ফর্ম ফিলাপ করতে মমতা সরকার টাকা নিয়েছে? ১০০ দিনের ফর্ম ফিলাপে টাকা নেওয়া হয়েছে?  দিদি দু’হাত ভরে দিচ্ছেন, আর মোদি সব লুটে নিচ্ছে। 
কাজের ভিত্তিতে বিজেপিকে প্রতিযোগিতায় নামার চ্যালেঞ্জও এদিন ছুড়েছেন অভিষেক। তাঁর মন্তব্য, ১০ বছরে দেশের কী উন্নয়ন করেছে, বিজেপি তার রিপোর্ট কার্ড পেশ করুক। ১২ বছরে তৃণমূল সরকার রাজ্যবাসীর সুখ. শান্তির জন্য কী করেছে তার পরিসংখ্যান নিয়ে লড়াই হবে।
এক দেশ, এক ভোট নিয়ে অনেক আগে থেকেই সওয়াল করছে বিজেপি। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আওয়াজ উঠেছে, পদ্মব্রিগেড আর দেশে নির্বাচন করাতেই চায় না।  তা নিয়েও এদিন আক্রমণ শানান  অভিষেক। তাঁর মন্তব্য, দেশে ভোট না করার চক্রান্ত করছে বিজেপি। সবই মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করার পরিকল্পনা। মালদহের বৈষ্ণবনগরের সভাতেও আক্রমণের ঝাঁঝ বিন্দুমাত্র কমাননি অভিষেক। সেখানেও একের পর এক অভিযোগ বাণে বিদ্ধ করেন বিজেপিকে। তাঁর স্পষ্ট বার্তা—ইডি, সিবিআই সহ যত এজেন্সিই লেলিয়ে দেওয়া হোক। মাথা নত করার বান্দা তিনি নন। তাঁর হুঁশিয়ারি, কেন্দ্রের অত্যাচারী শাসকদের বিরুদ্ধে আমৃত্যু লড়াই করব। মাথা নোয়ালে মানুষ, ঈশ্বর, আল্লাহর কাছে করব। দিল্লিশ্বরের কাছে নয়।