নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা এবং বিএনএ: রাজ্যে আরও দু’জন করোনায় মারা গেলেন। তাঁরা হচ্ছেন সাধন সাধুখাঁ (৫৭) এবং রণজিৎ কুমার দাস (৬৬)। সাধনবাবুর বাড়ি বেলঘরিয়ার রথতলায় এবং রণজিৎবাবুর বাড়ি দক্ষিণ শহরতলির নয়াবাদে। বুধবার সকাল সাড়ে ন’টায় এলাকার জেনিথ নার্সিংহোমে সাধনবাবুর মৃত্যু হয়। তাঁর সংস্পর্শে আসা দুই চিকিৎসকসহ ১০ জনকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে আটদিনের দীর্ঘ লড়াইয়ের পর সন্ধ্যায় পিয়ারলেস হাসপাতালে মারা যান রণজিৎবাবু। এদিকে পিজি হাসপাতাল থেকে করোনা সন্দেহে মঙ্গলবার রেফার হওয়া হাওড়ার বাসিন্দা এক ব্যক্তি এদিন এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালে মারা যান। করোনা পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ না করায় তাঁর মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি। রাতে জেনিথের মৃত করোনা আক্রান্তকে দাহ করা নিয়ে একপ্রস্ত অশান্তি হয় ধাপায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিস যায়। হাসপাতালের কর্ণধার ও বিশিষ্ট ফিজিশিয়ান ডাঃ নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ২০ বছর পুরনো ডায়াবেটিসের রোগী সাধনবাবুর দু’বছর ধরে ডায়ালিসিসও চলছিল। এই দুই সমস্যা করোনা আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুতে অনুঘটকের কাজ করে। পিয়ারলেসের চিফ এগজিকিউটিভ ডাঃ সুদীপ্ত মিত্র বলেন, বহু চেষ্টার পরও কোভিড ১৯ নিউমোনাইটিস সংক্রমণে আক্রান্ত রণজিৎবাবুকে বাঁচানো গেল না। এদিন বিকেলে নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, হার্ট, কিডনি, সুগার, নিউমোনিয়ায় রোগীদের মৃত্যুকে করোনা বলে ধরা ভুল হচ্ছে। তাঁর দাবি, রাজ্যে এখনও তিনজনই মারা গিয়েছেন এ রোগে। সেরে যাওয়া রোগীদের ধরলে আক্রান্ত ৩১। এদিকে রাজ্যে করোনা সন্দেহে গৃহবন্দি করার স্বাস্থ্য দপ্তরের মঙ্গলবারের পরিসংখ্যান ত্রুটিপূর্ণ বলে জানিয়েছে খোদ স্বাস্থ্য দপ্তরই। ১,০৩,৩৯১ জনের পরিবর্তে ১০,৩১৩ জনকে গৃহবন্দি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।
মঙ্গলবার রাতে হাওড়ার আইএলএস হাসপাতালে মৃত সুরেন্দ্র জৈনকে বুধবার দুপুরে শিবপুর শ্মশানঘাটে পুরকর্মীদের মাধ্যমে হু’র নিয়ম মেনে দাহ করা হয়। পুর কমিশনার বিজিন কৃষ্ণা জানান, পিপিই পরে কর্মীরা ওই কাজ করছেন। করোনায় দুই মৃতের বাড়ির এলাকা যথাক্রমে সালকিয়ার উত্তম ঘোষ লেন এবং রাজবল্লভ সাহা সেকেন্ড বাই লেন জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে। বেবিদেবীর ঘটনার পর হাওড়া হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মী মিলিয়ে প্রায় ৩০ জনকে ডুমুরজলা স্টেডিয়ামের কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে রাখা হয়েছে। রাতেই স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছিল, করোনা আক্রান্ত শেওড়াফুলির প্রৌঢ়ের পরিবারের আরও দু’জনের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। বুধবার সকালে জেলা প্রশাসনও জানায়, প্রৌঢ়ের ভাই ও ভাইপোর পরীক্ষার ফল পজিটিভ হয়েছে।
মঙ্গলবার গভীর রাতে স্বাস্থ্যভবন সূত্রে জানা গিয়েছিল, উত্তরবঙ্গে মৃতার সংস্পর্শে আসা বেশ কয়েকজনের শরীরে করোনা ভাইরাস মিলেছে। বুধবার জেলা প্রশাসনও জানায়, মৃতার আত্মীয় চারজনের করোনা ধরা পড়েছে। তাঁদের বাড়ি কালিম্পং। এদিকে, কমান্ড হাসপাতালের করোনা আক্রান্ত চিকিৎসকের সংস্পর্শে থাকা চারজনের শরীরেও এই ভাইরাস মিলেছে বলে নবান্নে জানান খোদ মমতাই।