প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসবে। প্রেম-প্রণয়ে আগ্রহ বাড়বে। তবে তা বাস্তবায়িত হওয়াতে সমস্যা আছে। লোহা ও ... বিশদ
কলকাতার অখিল মিস্ত্রি লেনে জন্ম নিমাইবাবুর। চার বছর পর চলে আসেন কালীঘাট রোডের বাড়িতে। সাউথ সাবআর্বান স্কুল ও পরে চারুচন্দ্র কলেজে পড়াশোনা। এই সময়েই পাকেচক্রে রবি ঘোষ ও সত্য বন্দ্যোপাধায়ের চোখে পড়ে যান। তারপর থেকেই একের পর এক নাটকে অভিনয়ের সূত্রপাত। কিন্তু, ভাগ্য তাঁর জন্য অন্যকিছু লিখেছিল। যৌবনে বন্ধু গোপাল ঘোষের ক্যাননেট কিউ এল ১৭ ক্যামেরা দিয়ে ফটোগ্রাফিতে হাতেখড়ি নিমাই ঘোষের। তারপর খেলার ছলেই প্রতিদিন ছবি তুলতে বেরিয়ে পড়া। একদিন পৌঁছলেন রামপুরহাটে। শুনলেন সত্যজিৎ রায় ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’-এর শ্যুটিং করছেন। লোকেশনে গিয়ে একের পর এক ছবি তুলতে শুরু করলেন নিমাইবাবু। পরে সেই ডেভেলপড ছবি দেখে বংশীচন্দ্র গুপ্ত সোজা নিমাইবাবুকে নিয়ে নিউ থিয়েটার্সে সত্যজিৎ রায়ের কাছে হাজির। সত্যজিৎ ছবি দেখে নাকি বলেছিলেন, ‘করেছেন কী মশাই! আপনি তো আমার অ্যাঙ্গেল মেরে দিয়েছেন!’ বাকিটা ইতিহাস। মাণিকবাবুর সঙ্গে নিমাইবাবুর কর্মজীবন প্রায় ২৫ বছর দীর্ঘ (‘আগন্তুক’ পর্যন্ত)। সারা জীবনে সত্যজিৎবাবুর শ্যুটিংয়ের প্রায় দেড় লক্ষ ছবি তুলেছিলেন নিমাইবাবু। সত্যজিৎকে নিয়ে তাঁর একাধিক বই রয়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থা তাঁর তোলা ছবি নিয়ে একাধিক বই প্রকাশ করেছে। তাঁকে নিয়ে তৈরি হয়েছে তথ্যচিত্রও।
কর্মসূত্রে জীবনে প্রচুর খ্যাতনামা ব্যক্তিত্বদের কাছ থেকে দেখেছেন নিমাইবাবু। তবে এই প্রসঙ্গে বলতেই হয় ইতালির চলচ্চিত্র পরিচালক মাইকেলঅ্যাঞ্জেলো আন্তনিওনি এবং ফরাসি ফটোগ্রাফার অঁরি কার্তিয়র ব্রেঁসর সঙ্গে সাক্ষাতের কথা। আন্তনিওনির ৯৬তম জন্মদিনে তাঁর স্ত্রীর (এনরিকা) আমন্ত্রণে রোমে গিয়েছিলেন তিনি। আর শুধুমাত্র ব্রেঁসর সঙ্গে দেখা করতে লন্ডন থেকে এক দিনের জন্য প্যারিস পাড়ি দিয়েছিলেন।
২০০৭ সালে জাতীয় পুরস্কারে জুরির দায়িত্ব পালনও করেছিলেন তিনি। ২০১০ সালে ভারত সরকার তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করে। নিমাই ঘোষের স্ত্রী, পুত্র ও কন্যা বর্তমান। পুত্র সাত্যকি ঘোষও মুম্বই নিবাসী ফটোগ্রাফার। এইদিন দেশজুড়ে লকডাউনের জেরে মুম্বই থেকে তিনি বাবার শেষকৃত্যে উপস্থিত থাকতে পারছেন না। এদিন বিকেলে কেওড়াতলা মহাশ্মশানে শিল্পীর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।