প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসবে। প্রেম-প্রণয়ে আগ্রহ বাড়বে। তবে তা বাস্তবায়িত হওয়াতে সমস্যা আছে। লোহা ও ... বিশদ
হাওড়া থেকে পাওয়া খবরে জানা গিয়েছে, লকডাউনের জেরে বুধবার হাওড়ার রাস্তাঘাট শুনশান থাকলেও সকালের দিকে বাজারের ভিড় ছিল আর পাঁচটা স্বাভাবিক দিনের তুলনায়ও বেশি। বুধবার সকালে সব বাজারেই ভিউ ছিল অস্বাভাবিক। ভবিষ্যৎ নিয়ে আতঙ্কগ্রস্ত মানুষের ভিড় কার্যত ভেঙে পড়ে বাজারে। করোনা সংক্রমণ এড়াতে ভিড় না করার যে বার্তা বারবার প্রশাসনের তরফে দেওয়া হচ্ছে, তা সকালের দিকে হাওড়ার কদমতলা, শিবপুর, হরগঞ্জ বাজারগুলির অবস্থা দেখে বোঝা দুষ্কর ছিল। ভিড় ভাঙতে পুলিস সক্রিয় হয় বেলার দিকে। কোথাও চলে লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে যাওয়া, কোথাও জমায়েত ছত্রভঙ্গ করতে লাঠি চালাতেও দেখা যায় পুলিসকে। দুপুরের পর থেকে অবশ্য রাস্তাঘাট, বাজার সবই জনশূন্য হয়ে যায়।
সকালের বাজারে ভিড় এড়াতে দুপুরে পুলিস অত্যাবশকীয় পণ্যের দোকানের সামনে চুন দিয়ে দাগ কেটে দেয়। নির্দিষ্ট দূরত্বে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে একে একে কেনাকাটা করতে মানুষকে বাধ্য করার জন্য এই ব্যবস্থা করে পুলিস। হাওড়া পুলিসের ডিসি (সদর) প্রিয়ব্রত রায় বলেন, আমরা বাজার শুধু নয়, পাড়ার ভিতরের মুদি দোকানের সামনেও ওভাবে দাগ কেটে দিচ্ছি৷
এদিকে, প্রশাসনের তরফে বারবার আশ্বস্ত করা হলেও মানুষকে টানা এতদিনের লকডাউনের ভয় তাড়া করছে। মুদি দোকানে চাল-ডালের জন্য হুড়োহুড়ি লাগিয়েছে মানুষ। ডিম, আলুর দর নানা জায়গায় নানা রকম চলছে। সেসব নিয়ে বচসা, উত্তেজনা ছড়িয়েছে বিভিন্ন বাজারে। দোকানদাররা বলছেন, কতদিন মালপত্র পাইকারিভাবে সরবরাহ হবে, কীভাবে হবে, সেসব কিছুই জানেন না তাঁরা। তাই বেশি করে কিনে নিতে অনেকক্ষেত্রে তাঁরাও মানুষকে উৎসাহিত করছেন। ওষুধের দোকান সবসময় খোলা থাকবে জানার পরও মানুষের ওষুধের দোকানে ভিড় করেন।
এদিকে চুঁচুড়া থেকে পাওয়া খবরে জানা গিয়েছে, বাসিন্দাদের ঘরের বাইরে বের হওয়া আটকাতে বুধবার দিনভর হুগলির বিভিন্ন জায়গায় রুটমার্চ করল চন্দননগর কমিশনারেট ও গ্রামীণ পুলিশের দল। পাশাপাশি এদিন ব্যবসায়ীদেরও ন্যায্য দামে পণ্য বিক্রির জন্য সতর্ক করা হয় পুলিশের তরফ থেকে। এদিন গোটা জেলা জুড়ে মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে থাকার বার্তা এবং কীভাবে বাজার ঘাটে যেতে হবে, সেই সংক্রান্ত বক্তব্য মাইকে করে জেলাজুড়ে প্রচার করা হয়। জেলায় নতুন করে কোনও বাসিন্দাকে আইসোলেশনের নিয়ে যাওয়া হয়নি বলে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে। ফলে জেলায় আইসোলেশন এর সংখ্যা এখনও ৩। অবশ্য তাঁদের প্রথম ধাপের পরীক্ষায় এখনও পর্যন্ত করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনা দেখা যায়নি। তবে হোম কোয়ারেন্টাইন এর সংখ্যা প্রায় ৮০০ এর কাছাকাছি বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
এদিকে ২১ দিনের গৃহবন্দি দশা ঘোষণার পরপরই মঙ্গলবার রাতেই বাজারে হুমড়ি খেয়ে পড়েছিল বাসিন্দারা। বুধবার সকালেও চিত্রটা কার্যত একই রকম দেখা গিয়েছে। দীর্ঘদিনের জন্য খাদ্যদ্রব্য মজুত করার চেষ্টায় বাজারে ডিমের দাম একলাফে বেড়ে গিয়েছে। দাম বেড়েছে মাছ-মাংসেরও। অন্যদিকে জেলার বিভিন্ন জায়গায় অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা নয় দাবি করে গোখাদ্যের গাড়ি আটকে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও অবশ্য বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। অবিলম্বে ওই ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জেলার পরিস্থিতি স্থিতিশীল আছে। নতুন করে কাউকে আমরা আইসোলেশন নিইনি। জেলা প্রশাসন প্রয়োজনীয় নজরদারি চালাচ্ছে। বাসিন্দাদের সচেতন করার জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে।