সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক, কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার বা ... বিশদ
উম-পুনের জেরে এই জেলার অধিকাংশ ব্লকেই কমবেশি ক্ষতি হয়েছে। দাঁতন-১ ও ২, পিংলা, নারায়ণগড়, সবং, মোহনপুর, চন্দ্রকোণা-১ ব্লকে ক্ষতির পরিমাণ তুলনামূলক বেশি। ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। ঝড় মিটে যাওয়ার কয়েকদিনের মধ্যেই ক্ষয়ক্ষতির হিসেব দিয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাজ্যে রিপোর্টও পাঠানো হয়েছে। গত সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভিডিও কনফারেন্স করে এই জেলার ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। তিনি ২৮ জন ক্ষতিগ্রস্তের অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা পাঠিয়ে দেন। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার এক সপ্তাহের মধ্যেই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের হাতে টাকা পৌঁছে দেওয়ার জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, উম-পুনের তাণ্ডবে জেলায় আংশিক এবং সম্পূর্ণভাবে প্রায় ৬০ হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সকলকেই ২০ হাজার টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই জেলায় ১০ হাজার ক্ষতিগ্রস্তের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ২০ হাজার টাকা করে পাঠানো হবে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক অনুমোদন করা হয়েছে। প্রথম দফায় যে আর্থিক অনুমোদন করা হয়েছে, তাতে জেলার যেসব ব্লকে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি হয়েছে, সেখানকার চাষিদের আগে টাকা দেওয়া হবে।
জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ রমাপ্রসাদ গিরি বলেন, ঝড়ের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রথম দফায় ১৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহেই চাষিদের অ্যাকাউন্টে জমির পরিমাণ অনুযায়ী টাকা ঢুকে যাবে। পরে, ধাপে ধাপে যে টাকা অনুমোদন করা হবে, তা বাকি ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের অ্যাকাউন্টে পাঠানো হবে। জেলায় পান চাষিদের জন্য যে টাকা অনুমোদন করা হয়েছে, তা থেকে ১০ হাজার পানচাষিকে ৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। ক্ষতিগ্রস্ত বাকি চাষিদের মতো চলতি সপ্তাহে পানচাষিরাও টাকা পেয়ে যাবেন।
সবংয়ের পানচাষি বিশ্বনাথ খাটুয়া বলেন, লকডাউনের জেরে কোনও রোজগার ছিল না। জমা টাকা খরচ করে ফেলেছি। এর মধ্যে ঝড়ে আমার একটি পানের বরজ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এখন পরিচর্যার জন্য টাকার খুব প্রয়োজন ছিল। এই অবস্থায় রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ৫ হাজার টাকা পেলে তা আমাদের অনেক কাজে লাগবে। সরকার অত্যন্ত দ্রুত চাষিদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করছে, এটা আমাদের পরম সৌভাগ্যের বিষয়। ইতিমধ্যেই টাকা পাওয়ার জন্য পঞ্চায়েতে সব কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়ে গিয়েছে। শুনেছি, দু’দিনের মধ্যে অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকবে।
সোনাকানিয়ার বাসিন্দা দেবব্রত মাইতি বলেন, ঝড়ে আমার বাড়ি ভেঙে গিয়েছে। ত্রাণশিবিরে গিয়ে দু’দিন ছিলাম। ত্রাণ শিবির থেকে ফিরে খড়ের ছাউনি করে কোনওরকমে পরিবার নিয়ে রয়েছি। প্রশাসন আমাদের এই অবস্থার ছবি তুলে নিয়ে গিয়েছে। সরকার ২০ হাজার টাকা দেবে বলে জানতে পেরেছি। ওই টাকা পেলে ঘরটা তৈরি করে নিশ্চিন্তে রাত কাটাতে পারব। সরকার যে এত তাড়াতাড়ি টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা করবে তা ভাবতেও পারিনি।