পড়শির ঈর্ষায় অযথা হয়রানি। সন্তানের বিদ্যা নিয়ে চিন্তা। মামলা-মোকদ্দমা এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেমে বাধা।প্রতিকার: একটি ... বিশদ
বাজেয়াপ্ত সাপগুলির মধ্যে বড় সাইজের কিং কোবরা, পাহাড়ি চিতি, গোখরো, লাউডগা প্রজাতির সাপ রয়েছে। এদিন বাজেয়াপ্ত সাপগুলি বনদপ্তর হাতে তুলে দেয় জিআরপি। সাপগুলি উদ্ধার করলেও জিআরপি কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। মালদহ টাউন স্টেশনে একসঙ্গে এত বিপুল পরিমাণে সাপ বাজেয়াপ্ত হওয়ায় রেলপথে চোরাচালানের সক্রিয়তা ফের প্রমাণ হল। এদিকে বিষধর সাপ থেকে বিষ উৎপাদনের সম্ভাবনা থাকলেও নির্বিষ লাউডগা সাপ কী উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল এনিয়ে জিআরপি ও বন দপ্তরের কর্তাদের মনে ধন্দ দেখা দিয়েছে। নির্বিষ লাউডগা সাপ থেকে আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরির সম্ভাবনা থাকতে পারে বলে তাঁরা মনে করছেন। সম্প্রতি মালদহে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া প্রচুর তক্ষক উদ্ধার হয়। চীন, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, জাপানে আয়ূর্বেদিক ওষুধ তৈরির জন্য তক্ষকের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এখান থেকেই বন দপ্তর ও জিআরপি’র অফিসাররা মনে করছেন নির্বিষ জ্যান্ত লাউডগা সাপ আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরির জন্য নিয়ে যাওয়া হতে পারে। সেই সাপের রক্ত বা চামড়া সেক্ষেত্রে কাজে লাগতে পারে বলে তাঁদের অনুমান।
এবিষয়ে মালদহ টাউন স্টেশনে জিআরপি’র আইসি ভাস্কর প্রধান বলেন, কাঞ্চনজঙ্ঘা ডাউন এক্সপ্রেসের সাধারণ কামরার সিটের তলা থেকে সাতটি ব্যাগ এবং বস্তার মধ্যে সাপগুলি রাখা ছিল। কিছু সাপ লোহার তারের জালি দেওয়া বাক্সের মধ্যে রাখা ছিল। বিষাক্ত ও নির্বিষ দু’ধরনের সাপই উদ্ধার হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে সাপগুলি পাচারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। আমরা বাজেয়াপ্ত সাপগুলি বনদপ্তরের হাতে তুলে দিয়েছি। এবিষয়ে জেলা বন দপ্তরের এডিএফও সিতাংশু গুপ্ত বলেন, বিষধর সাপগুলি বিষ উৎপাদনের জন্য নিয়ে যাওয়া হতে পারে। তবে নির্বিষ লাউডগা সাপ কী উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তা আমরা বুঝতে পারছি না। এ ধরনের এত পরিমাণে সাপ আগে কখনও বাজেয়াপ্ত হয়নি। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এত সাপ কোথায় ছাড়া হবে এনিয়ে ওয়াইল্ড লাইফ বিভাগকে জানানো হয়েছে। তারা যেভাবে নির্দেশ দেবে সেভাবে সাপগুলি ছাড়া হবে।
শনিবার দুপুর ১টা নাগাদ মালদহ টাউন স্টেশনে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস এসে দাঁড়ায়। জিআরপি রুটিন তল্লাশি চালানোর সময় ওই এক্সপ্রেস ট্রেনের সাধারণ কামরায় সিটের তলা থেকে সাপগুলি বাজেয়াপ্ত করে। সাপগুলি ছোট ছোট বাক্সের মধ্যে গাদাগাদি করে রাখা ছিল। দুটি বড় মাপের কিং কোবরাকে বস্তা থেকে উদ্ধার করে রেল পুলিস। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় বন দপ্তরকে। এত জ্যান্ত সাপকে গণনা করতে গিয়ে বেগ পেতে হয় বন দপ্তরের কর্মীদের। সর্প বিশেষজ্ঞদের মতে একসঙ্গে বেশি বিষ উৎপাদনের জন্য এই কিং কোবরা চোরাচালানকারীরা পাচার করে থাকে। অন্যান্য কোবরা প্রজাতির সাপের মধ্যেও প্রচুর বিষ থাকে। একবার সাপের বিষ বের করার পর ৮০-৯০ দিনের মাথায় ফের প্রচুর বিষ বের করা সম্ভব। বার বার বিষ করার জন্যই জ্যান্ত সাপ নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তবে লাউডগা প্রজাতির সাপ নির্বিষ হওয়ায় তা পাচার করার কারণ নিয়ে ধন্দ রয়েছে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, লাউডগা সাপগুলির থেকে রক্ত বা লালা বের করা বা সেগুলির চামড়া কোনও কাজে লাগতে পারে। সাপগুলি বিদেশে পাচারের সম্ভবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। যে সাপগুলি বাজেয়াপ্ত হয়েছে সবগুলিই দক্ষ চোরাশিকারির মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়েছে বলেই বন দপ্তর ও আরপিএফের অনুমান। সেগুলি অক্ষত রয়েছে। কিং কোবরা, লাউডগা এবং পাহাড়ি চিতি সাপ উত্তর-পূর্ব ভারতে বেশি দেখা যায়। তাই অসম অথবা উত্তরবঙ্গের জঙ্গল, পাহাড় থেকে সাপগুলি সংগ্রহ করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে।