বিদ্যার্থীদের পঠন-পাঠনে আগ্রহ বাড়বে। কর্মপ্রার্থীদের কর্মপ্রাপ্তির যোগ। বিশেষত সরকারি বা আধা সরকারি ক্ষেত্রে যোগ প্রবল। ... বিশদ
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এক বছর এক মাস ধরে তাপসের মতো কেবল বাংলার নয়, দেশের অন্যতম জনপ্রিয় নেতাকে জেল খাটতে হয়েছে। ও (তাপস) নিজেকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত, ক্ষতবিক্ষত করে ফেলেছিল। দুর্বিষহ, দুর্দশাগ্রস্ত, আহত, ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় তাঁর এই চলে যাওয়া। চলচ্চিত্র জগতে এই মৃত্যূ অপূরণীয় ক্ষতি। অথচ মৃত্যুর আগে পর্যন্ত সে জানতেই পারল না, তার অপরাধটা ঠিক কী! আমি সুদীপদাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। সুদীপদা আর তাপস একই সময়ে ছিল। শুনলাম, ও নাকি একটা বিনোদন চ্যানেলের ডিরেক্টর ছিল। সেই হিসেবে মাইনে পেয়েছিল। সেই জন্য তাকে এতদিন জেলে রেখে দেওয়া হল। সুদীপদার ব্যাপারটিও আপনারা জানেন। ইকোনমিক ক্লাস থেকে এগজিকিউটিভ ক্লাসে একটি টিকিট আপগ্রেডেশনের ব্যাপার ছিল। আর কিছু নয়। টাকা রিটার্নও হয়েছিল। কোর্টে সেই কেস চলছে।
সার্বিকভাবে শিল্পীদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শিল্পীরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রোডাকশন হাউস, বিভিন্ন কোম্পানি, বিভিন্ন চ্যানেলে কাজ করেন। ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হিসেবেও শিল্পীরা কাজ করেন। সেই কাজ করতে গিয়ে তাঁদের জীবন দুর্বিষহ, দুর্দশার মধ্যে পড়ে যদি মূল্যবান প্রাণ অকালে ঝরে যায়, সেটা কি ঠিক হচ্ছে? নতুন করে শিল্পীদের এবার ভাবতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের জঘন্য প্রতিহিংসাপরায়ণ পরিকল্পনা থেকে কেউ রেহাই পাচ্ছেন না। তিনটি মৃত্যু চোখের সামনে দেখলাম। সুলতান আহমেদের মৃত্যুর আগে আমি তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তারা আমায় জানিয়েছিল, একটা চিঠি এসেছিল, তারপর একটা ফোন, বেশ বিচলিত লাগছিল সুলতান সাহেবকে। বাথরুমে গেলেন এবং সেখানেই মারা গিয়েছিলেন। প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রীও মারা গিয়েছেন। স্বামীর উপর মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে পারলেন না। সেও একজন খেলোয়াড় হিসেবে কোথাও কাজ করতেই পারে। তিনজনেই অকালে, অসময়ে চলে গেল। তিনি বলেন, কী খেলা চলছে জানি না। অন্যায় করলে তো কোর্টে বিচার করা উচিত। খুনের কেসেও তো তিনমাসের মধ্যে চার্জশিট দিতে হয়। এদের ক্ষেত্রে কী চার্জশিট দিয়েছে? কেসগুলি কোন পর্যায়ে রয়েছে, তা জানি না। একইভাবে জেলে থাকা শ্রীকান্ত মোহতার কথাও এদিন বলেন তিনি। তাঁর কথায়, ওরও শরীর ভালো নয়। শুনেছি, কিছুদিন আগেও হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। শুনলাম স্ট্রোক হয়ে গিয়েছে। কেউ যদি আইন ভাঙে, তাহলে আইন আইনের পথে চলবে। বিচারে কারও শাস্তি হলে আপত্তি নেই। কিন্তু এতদিন ধরে জেলের মধ্যে বন্দি করে রাখাটা কী কৌশল? আমি ঠিক বুঝতে পারছি না। মন্তব্য মুখ্যমন্ত্রীর।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সুলতান আহমেদের মৃতদেহও দেখিনি। তাপসের মুখের দিকেও আজ তাকাতে পারছি না। তার তো যাবার কথা নয়। আমি মর্মাহত, শোকাহত, দুঃখিত। তাপসকে সবাই ভালবাসত। দাদার কীর্তি থেকে শুরু করে গুরুদক্ষিণা, বাংলার ঘরে ঘরে সবাই জানে। দাদার কীর্তি ওর অমর কীর্তি হয়ে বেঁচে থাকবে।
রবীন্দ্রসদনে প্রয়াত অভিনেতা তথা তৃণমূল সংসদ সদস্য তাপস পালকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।