নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: মানুষের সাফল্য ও ব্যর্থতার রোজনামচায় যখন হতাশা জায়গা করে নিচ্ছে। প্রবণতা বাড়ছে আত্মহত্যার। তখন একটি গল্পে সমসাময়িক সময়ে আশার আলোর খোঁজ দিতে চেয়েছিলেন জলপাইগুড়ির গল্পকার মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য। আজকের কথা নয়, অন্তত বছর ছ’য়েক আগে মানবিক মনের সব জটিল অঙ্ক বুঝে তিনি লিখেছিলেন ‘ডার্করুম’ নামে একটি গল্প। তিস্তাপাড়ের সেই গল্পের বাস্তবিকরূপ এবার শর্টফিল্মের মাধ্যমে তুলে ধরলেন তাঁরই কন্যা রেশ ভট্টাচার্য। জলপাইগুড়ির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নতুনপাড়ার বাসিন্দা রেশ সমসাময়িক সময়ের সম্পর্কের টানাপোড়েন, একাকিত্ব, সেখান থেকে বেরিয়ে আসার রাস্তা, এসব নিয়েই তৈরি করেছেন শর্টফিল্ম ‘ডার্করুম’। মূলত বাবার বছর ছ’আগের সেই বার্তাকে সমাজে ছড়ানোই এখন তাঁর লক্ষ্য। একইসঙ্গে রেশ চান দৈনন্দিন জীবনের চাপে যাঁরা আত্মহননের পথ খুঁজে নিতে বাধ্য হন, তাঁরা যেন এই ছবি থেকে আরও একটা নতুন দিশা খুঁজে পান। জলপাইগুড়ি তথা তিস্তাপাড়ের পটভূমিতেই গোটা ‘ডার্করুম’ এর চিত্রায়ণ হয়েছে। কলাকুশলীও সকলেই জলপাইগুড়ির বাসিন্দা। কলকাতায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তরের পাবলিক রিলেসন্স ও ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের ছাত্রী রেশ ভট্টাচার্য বলেন, আমার পড়াশোনার বিষয়ের মধ্যে ফিল্ম মেকিংও রয়েছে। তাই বাস্তব অভিজ্ঞতার জন্যই এ ধরনের একটা প্রচেষ্টা। আর তাতে বড় সুবিধা ছিল, আমার বাবার লেখা বেশকিছু ছোট গল্প। সেগুলির মধ্য থেকে সংলাপ নির্ভর ওই ‘ডার্করুম’ গল্পটিকে বেছে নিই। আর গোটা গল্পটিকে ১০ মিনিটের একটি শর্টফিল্মে রূপান্তর করতে আমি জলপাইগুড়ির কলাকুশলীদের সহযোগিতা পাই। একেবারে তিস্তা নদীর পাড়ে গোটা গল্পের দু’দিনের শ্যুটিং হয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবারই এই শর্টফিল্মের বিশেষ শোয়ের আয়োজন হয়েছে জলপাইগুড়ি শহরে। শীঘ্রই একটি ইউটিউব চ্যানেলে শর্টফিল্মটি দেখা যাবে। ইতিমধ্যে চিত্রায়ণ ও এডিটিংয়ের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। যাঁদের সম্পূর্ণ সহযোগিতা পেয়েছি, তাঁর মধ্যে আমাদের এই শর্টফিল্মে মূল চরিত্রে রয়েছেন অভিনেতা অভ্র সরকার এবং জিষ্ণু সেন। ভয়েস দিয়েছেন শুভ্র চট্টোপাধ্যায়, সিনেমাটোগ্রাফার রুবল সরকার।
এদিকে মেয়ে রেশ ভট্টাচার্যের প্রথম শর্টফিল্ম নিয়ে উচ্ছ্বসিত গল্পকার মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, চাকরির পাশাপাশি দীর্ঘবছর গল্প লিখি। বিভিন্ন পত্রপত্রিকাতেও সেগুলি জায়গা পায়। তারজন্য সম্মান ও পুরস্কার মিলেছে। তবে বড় পাওয়া মেয়ের পরিচালনায় আমার গল্পের চিত্রায়ণ। আশা করি ‘ডার্করুম’ দর্শকদের মন ছুঁয়ে যাবে। নিজস্ব চিত্র