রাজীব বর্মন, দেওয়ানহাট: এ বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যে দশম হলেন কোচবিহার উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের কলা বিভাগের ছাত্রী অঙ্কিতা ঘোষ। এর আগে কোচবিহার ১ নম্বর ওয়ার্ডের এই স্কুল থেকে মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক কোনও পরীক্ষাতেই কেউ মেধা তালিকায় স্থান পাননি। ফলে এ বছর অঙ্কিতার হাত ধরেই প্রথমবার মেধা তালিকায় নাম উঠল কোচবিহার উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের। অঙ্কিতা ঘোষের হাত ধরেই ৭৪ বছরের পুরনো এই স্কুল মেধা তালিকায় জায়গা করে নেওয়ায় আবেগে আপ্লুত তাঁর পরিবার সহ স্কুলের শিক্ষিকা সহ প্রাক্তনীরা। দশম স্থানাধিকারী অঙ্কিতার ইচ্ছে ডব্লুবিসিএস অফিসার হওয়ার। তাঁর মোট নম্বর ৪৮৭। বাংলায় ৯৫, দর্শন ও ভূগোলে ৯৭ করে, সংস্কৃতে ১০০ এবং শারীরশিক্ষায় ৯৮ নম্বর পেয়েছেন। কোচবিহার শহর সংলগ্ন টাকাগাছে নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে অঙ্কিতা। বাবা স্বপন ঘোষ ছোট একটি মিষ্টির দোকান চালান। মা অঞ্জনা ঘোষ গৃহবধূ। চার বোনের মধ্যে অঙ্কিতা ছোট। বাবা-মা’র পাশাপাশি বাড়িতে থাকা দুই দিদি তাঁকে সবসময় অনুপ্রেরণা দিতেন বলেই এমন ফল, জানান অঙ্কিতা। দুপুরে ফল ঘোষণা হওয়ার পর অঙ্কিতার বাড়িতে আসেন তাঁর স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শুচিস্মিতা চক্রবর্তী সহ অন্য শিক্ষিকারা। ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি অঙ্কিতাকে মিষ্টিমুখ করান।
অঙ্কিতা বলেন, আমরা চার বোন। আমি সকলের ছোট। বাবা, মার পাশাপাশি দিদিরা সব সময় বলত আমরা পেলাম না, তোকে ভালো ফল করতেই হবে। টিভিতে তোকে দেখতে চাই। আজকে ওদের গাইড ও অনুপ্রেরণায় এমন ফল করতে পেরে ভালো লাগছে। স্কুলের শিক্ষিকা ও গৃহশিক্ষকদের অবদান তো আছেই। স্কুলের ইতিহাসে প্রথম কেউ বোর্ডের পরীক্ষায় মেধা তালিকায় জায়গা পেল, এটা আরও ভালো লাগছে। আপাতত ইংরেজি বিষয়ে অনার্স নিয়ে পাড়ব। ভবিষ্যতে ডব্লুবিসিএস অফিসার হওয়ার ইচ্ছে আছে।
অঙ্কিতার মা অঞ্জনা ঘোষ বলেন, আমার চার মেয়েই পড়াশোনায় ভালো। তবে ছোট মেয়ের প্রতি সকলের প্রত্যাশা একটি বেশি। ওর এমন ফল আমাদের সকলকে গর্বিত করেছে। কোচবিহার উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শুচিস্মিতা চক্রবর্তী বলেন, এর আগে কেউ আমাদের স্কুল থেকে মেধা তালিকায় আসেনি। এবারেই প্রথম আমাদের স্কুলের কেউ মেধা তালিকায় স্থান পেল। অঙ্কিতার জন্য আমরা গর্বিত। আমরা ওকে সংবর্ধনা দেব। অঙ্কিতা স্কুলকে পথ দেখাল। নিজস্ব চিত্র