ব্যবসায় বাড়তি বিনিয়োগ প্রত্যাশিত সাফল্য নাও দিতে পারে। কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতি শ্বাসকষ্ট ও বক্ষপীড়ায় শারীরিক ক্লেশ। ... বিশদ
কৃষকরা জানিয়েছেন, লকডাউনের আগে পাইকারি সব্জির ব্যবসায়ীরা জেলার বিভিন্ন বাজার এলাকার হাটগুলি থেকে সব্জি কিনে শিলিগুড়ি, কলকাতা, দিল্লি, অসম, নেপাল সহ বিভিন্ন জায়গায় পাঠাতেন। এছাড়াও পাইকারি সব্জির ব্যবসায়ীরা কৃষকদের থেকে গ্রামে গ্রামে ঘুরে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় ঠেক করে উৎপাদিত বিভিন্ন সব্জি কিনে অন্য জেলা সহ ভিনরাজ্যে পাঠাতেন। ফলে সব্জি চাষ করে লাভের মুখ দেখতেন গ্রামের প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র সব্জি চাষিরা। কিন্তু এখন লকডাউন ও করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের আশঙ্কায় পাইকারি সব্জির কেনার ব্যবসায়ীরা না আসায় সব্জির দাম একেবারেই পড়ে গিয়েছে।
যদিও অনেক কৃষক তাঁদের উৎপাদিত কাঁচামাল স্থানীয় বাজারে বিক্রির চেষ্টা করলেও ব্যাপক জোগান হয়ে যাওয়ায় সেভাবে চাহিদা না থাকার জন্য সব্জির দাম একেবারে কমে গিয়েছে, জানায়িছেন কৃষকরা। দিনহাটার মহকুমার বড় কাঁচামাল বাজারগুলির মধ্যে অন্যতম ভেটাগুড়ি বাজারে সোমবার লঙ্কা ১৬ টাকা, ঢ্যাঁড়স ১৮ টাকা, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধকপি তিনটাকা করে, টম্যাটো ছ’টাকা, গাজর চার টাকা, করলা ১৮ থেকে ২০ টাকা প্রতি কেজি পাইকারি হিসেবে বিক্রি হয়। কৃষকরা জানিয়েছেন, অন্যান্য বছর এসময় নতুন সব্জি ঢ্যাঁড়স, করলা, টম্যাটো, শসা সহ অন্যান্য সব্জির দাম অনেকটাই বেশি থাকে।
পুঁটিমারির বাসিন্দা সব্জিচাষি পীতাম্বর শর্মা বলেন, বাজারে ২০ কেজি লঙ্কা এনেছি। মাত্র ১৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হল। অন্যবছর এ সময় ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি কাঁচালঙ্কা বিক্রি হয়। কম দামে বিক্রি করে খরচের টাকাই উঠছে না।
ব্রহ্মানির চৌকির বাসিন্দা ফুল চাঁদ বর্মন বলেন, এখন ঢ্যাঁড়স নতুন সব্জি। ২০ কেজি বিক্রি করতে নিয়ে এসেছিলাম। চাহিদা না থাকায় মাত্র ১৮ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে হল। এই সব্জি লকডাউন না হলে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতো। কৃষকদের কথা মাথায় রেখে সরকারের এই সব্জি বাইরে পাঠানোর ব্যবস্থা করা উচিত। অনেক কৃষক আবার বলেন, বাজারে সব্জির দাম না থাকায় গাছেই নষ্ট হচ্ছে ফসল। খরচের টাকা না উঠলে বাজারে নিয়ে এসে কি লাভ?
দিনহাটা ব্যাবসায়ী সমিতির সম্পাদক রানা গোস্বামী বলেন, কৃষকদের উৎপাদিত কাঁচামাল সংরক্ষণের কোনও ব্যবস্থা নেই আমাদের জেলায়। লকডাউনের ফলে বাইরে থেকে জেলার বিভিন্ন বাজারে পাইকারি সব্জি যাঁরা কেনেন তাঁরা আসতে পারছেন না। তাছাড়া যদিও তাঁরা কেউ এসে কেনেন তা তাঁরা এখন বাইরে রাজ্যে পাঠাতে পারবে না। যান চলাচল তো বন্ধ। সেজন্য গ্রামের কৃষকরা সব্জির দাম পাচ্ছেন না। ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। এরফলে গ্রাম থেকে শহরে পর্যাপ্ত পরিমাণে সব্জি সহ অন্যান্য কাঁচামাল না পৌঁছনোয় সেখানে চড়া দামে সব্জি কিনতে হচ্ছে মানুষকে। কৃষকদের উৎপাদিত এসব নিত্যপ্রয়োজনীয় কাঁচামালের কথা মাথায় রেখে সরকারের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।