বাংলা নিউজ এজেন্সি: করোনা ভাইরাসের শৃঙ্খল ভাঙতে একসপ্তাহ হল দেশজুড়ে লকডাউন চলছে। স্বাভাবিকভাবেই নিম্ন আয়ভুক্ত মানুষের রুটিরুজিতে টান পড়েছে। এমন অবস্থায় কোনও মানুষ যাতে অভুক্ত না থাকে, সেজন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্যোগী হয়েছেন। রেশনে বিনামূল্যে খাদ্যশস্য দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। এতেই উত্তরবঙ্গের কোচবিহার থেকে জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার থেকে শিলিগুড়ি সর্বত্রই এনিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ ছড়িয়েছে। কোথাও কম চাল, আটা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তো কোথাও পুরনো কার্ডে রেশন না মেলার অভিযোগ সামনে এসেছে। শুধু তাই নয়, অধিকাংশ রেশন দোকানেই সামাজিক দূরত্ব না মেনে ঘাড়ের উপর নিঃশ্বাস ফেলে খাদ্যসামগ্রী সংগ্রহ করতে উপভোক্তাদের লম্বা লাইন দেখা গিয়েছে।
শিলিগুড়ির মাটিগাড়া-১ গ্রাম পঞ্চায়েতে রেশন দোকানে নিম্নমানের সামগ্রী দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। শুধু তাই নয়, একাংশ গ্রাহক পরিমাণে কম ও নিম্নমানের সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে বলে সরব হন। এনিয়ে বিক্ষোভ হয়। অন্যদিকে পুরনো কার্ডে রেশন দেওয়া হচ্ছে না, এমন অভিযোগ এনে বাগরাকোটে খাদ্য নিয়ামকের দপ্তরে বিক্ষোভ দেখান শতাধিক বাসিন্দা। তাঁদের দাবি, সরকার টোকেন দেওয়ার কথা বললেও তা মিলছে না।
শিলিগুড়ির খাদ্য নিয়ামক শুভাশিস পালিত বলেন, রাজ্য সরকারের নির্দেশ মেনেই আমরা কাজ করছি। যাঁদের কার্ড নেই, তাঁদের জন্য টোকেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু টোকেন বানানো এবং তা বিতরণ করতে সময় লাগবে। যাঁদের কার্ড আছে, তাঁরা রেশন সংগ্রহ করেছেন। নিম্নমানের সামগ্রী দেওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়। শিলিগুড়ি মহকুমায় ১৪৬ জন ডিলার আছেন। আমাদের উপভোক্তা ১ লক্ষ ৬৩ হাজার।
জলপাইগুড়ির জেলার ময়নাগুড়ি ব্লকের বেশকিছু জায়গায় রেশন দেওয়াকে কেন্দ্র করে এদিন অশান্তি ছড়ায়। পানবাড়িতে এক ডিলারের বিরুদ্ধে নিম্নমানের চাল দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা রেশন দোকানে সামনে তুমুল বিক্ষোভ দেখান। পরে ময়নাগুড়ি থানার পুলিস পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। খাদ্যদপ্তরের ময়নাগুড়ির আধিকারিক সুপ্রকাশ মণ্ডল বলেন, ডিস্ট্রিবিউটরের থেকেই খারাপ চাল এসেছিল। আমরা ওই চাল বিতরণ বন্ধ করে অন্য বস্তা থেকে চাল দিয়েছি। ময়নাগুড়ির রথেরহাটের এক রেশন ডিলারের বিরুদ্ধেও নিম্নমানের সামগ্রী দেওয়ার অভিযোগ গ্রামবাসীরা তোলেন। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে উপভোক্তার মাথাপিছু যে পরিমাণ চাল বরাদ্দ করা হয়েছে, তার থেকে কম চাল দেওয়ার অভিযোগ ওঠে রথেরহাটের এক ডিলারের বিরুদ্ধে। এনিয়ে সেখানে বিক্ষোভ শুরু হলে পুলিস গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
আলিপুরদুয়ার-২ ব্লকের রেশন দোকানেও ডিলারদের বিরুদ্ধে কম সামগ্রী দেওয়ার বলে অভিযোগ তোলেন গ্রাহকরা। আরকেএসওয়াই-১ কার্ড রয়েছে এমন গ্রাহকদের অভিযোগ, নির্ধারিত ওজন থেকে কম ওজনে চাল, গম দেওয়া হচ্ছে। জলপাইগুড়ি, কোচবিহারের বিভিন্ন অংশে গ্রাহকদের থেকে রেশনে কম চাল, গম, আটা, চিনি দেওয়ার অভিযোগ গ্রাহকরা এনেছেন।
সব জায়গাতেই এদিন রেশন দেওয়ার খবর পৌঁছতে গ্রাহকরা সকাল সকাল লাইনে দাঁড়িয়ে পড়েন। অধিকাংশ জায়গাতেই সামাজিক দূরত্ব না মেনে গ্রাহকদের খাদ্যশস্য সংগ্রহ করতে দেখা যায়।