শরীর-স্বাস্থ্যের প্রতি নজর দেওয়া প্রয়োজন। কর্মক্ষেত্রে উন্নতির সম্ভাবনা। গুপ্ত শত্রুতার মোকাবিলায় সতর্কতা প্রয়োজন। উচ্চশিক্ষায় বিলম্বিত ... বিশদ
মালদহের জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র বলেন, এদিন বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমাদের বৈঠকে একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তার মধ্যে সীমান্ত দিয়ে মাদক পাচারের বিষয়টিও রয়েছে। এদিনের আলোচনা সংক্রান্ত বিস্তারিত রিপোর্ট আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেব।
মালদহের পুলিস সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, সীমান্ত দিয়ে মাদক পাচার নিয়ে আমরা সবসময়ই সতর্ক রয়েছি। নজরদারি চলে। এদিনের বৈঠকে মাদক পাচার নিয়ে কথা হয়েছে। আমরা আরও সতর্ক থাকব। সেইসঙ্গে এব্যাপারে বিস্তারিত রিপোর্ট আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
বাংলাদেশের চাঁপাই নবাবগঞ্জ, নোয়াগাঁও, জয়পুরহাট, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, নীলফামারি, লালমণিরহাট এবং কুড়িগ্রাম জেলার প্রশাসন ও পুলিসের আধিকারিকরা এদিনের বৈঠকে যোগ দেন। সেইসঙ্গে মালদহ ছাড়াও এরাজ্যের কোচবিহার, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, দার্জিলিং এবং জলপাইগুড়ির প্রশাসনিক কর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। সূত্রের খবর, এদিন বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা মাদক ট্যাবলেট ইয়াবা পাচারের বাড়বাড়ন্তের প্রসঙ্গ তোলেন। জানা গিয়েছে, এই ইয়াবা ট্যাবলেট এদেশে ঢুকছে মায়ানমার থেকে। তারপর মণিপুর সহ উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলি হয়ে সেই ট্যাবলেট ঢুকছে উত্তরবঙ্গে। বিভিন্ন জেলা ঘুরে সেসব মাদক ট্যাবলেট একাধিকবার হাতবদল হয়ে সীমান্ত পেরিয়ে চলে যাচ্ছে প্রতিবেশী দেশে। উত্তরবঙ্গের প্রায় সব জেলার সঙ্গেই বাংলাদেশের সীমানা থাকলেও ইয়াবা পাচারকারীদের পছন্দের তালিকায় মালদহের নাম উপর দিকেই রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
সূত্রের খবর, এদিন বৈঠকে আগত বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা মেনে নিয়েছেন যে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে বিপুল পরিমাণে ইয়াবা ট্যাবলেট ঢুকছে বাংলাদেশে। আগে গাঁজা পাচারের রমরমা দুশ্চিন্তায় ফেলেছিল প্রশাসন ও পুলিসকে। এখন সেই জায়গাটাই নিয়ে নিয়েছে এই ইয়াবা ট্যাবলেট। সীমান্ত দিয়ে কীভাবে এই ইয়াবার পাচার বন্ধ করা যায়, তা নিয়ে এদিনের বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে এই মাদক ট্যাবলেট বেশি পরিচিত লাল বা গোলাপি ট্যাবলেট নামে। সেদেশের যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়েছে এই মাদকের ব্যবহার। ২০০০ সাল নাগাদ বাংলাদেশে এই ইয়াবা ট্যাবলেটের প্রচলন শুরু হয়। ক্রমশ মাদক ব্যবহারকারীদের মধ্যে তার ‘জনপ্রিয়তা’ বাড়তে থাকে। ইয়াবার রমারমা ঠেকাতে ইতিমধ্যেই সেদেশে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে সেদেশের প্রশাসন ও পুলিস। এবার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে যাতে ইয়াবা সেদেশে আর ঢুকতেই না পারে সেজন্য এদিন দু’দেশের প্রতিনিধিদের বৈঠকে মাদক পাচারের প্রসঙ্গ তোলা হয়েছে বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের।
নভেম্বরের মাঝামাঝি ইংলিশবাজার শহরের একটি হোটেল থেকে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকার ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করে পুলিস। সেই সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয় সাত জনকে। ধৃতদের মধ্যে একজন বাংলাদেশের বাসিন্দা ছিল। আরও একজন ছিল মণিপুরের বাসিন্দা।
উল্লেখ্য, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘ সীমান্ত। ওই আন্তর্জাতিক সীমান্তের একটা বড় অংশ এরাজ্যের সঙ্গে রয়েছে। ওই দীর্ঘ সীমান্তের সর্বত্র কাঁটাতারের বেড়া নেই। সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে জালনোট, মাদক ও গোরু পাচার হয়ে থাকে। এমনিতেই আফিমের আঠা, ব্রাউন সুগার সহ মাদক পাচার নিয়ে দুষ্কৃতীদের বাড়বাড়ন্তে সতর্ক থাকতে হয় মালদহের পুলিসকে। তার উপর সেই পাচারের তালিকায় যুক্ত হয়েছে ইয়াবা ট্যাবলেটের নামও।