কর্মপ্রার্থীদের বিভিন্ন দিক থেকে শুভ যোগাযোগ ঘটবে। হঠাৎ প্রেমে পড়তে পারেন। কর্মে উন্নতির যোগ। মাঝেমধ্যে ... বিশদ
বুধবার ক্যাপিটলে হানাদার ট্রাম্প সমর্থকদের রুখতে নামানো হয় বিশাল পুলিসবাহিনী। উস্কানিমূলক ভাষণের পর পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠায় শান্তি ফেরানোর আবেদন জানান ট্রাম্প। আর্জি জানান, সমর্থকদের ফিরে যাওয়ার জন্য। তবে ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী চারপাশ থেকে ক্যাপিটল ভবনকে অবরুদ্ধ করা সত্ত্বেও জনস্রোত ঠেকানো যায়নি। ভিতরে ঢুকে পড়ে কাতারে কাতারে ট্রাম্প সমর্থক। তাদের হাতে ছিল ট্রাম্পের সমর্থনে পতাকা। মুখে ট্রাম্প-প্রশস্তির স্লোগান। অধিবেশন কক্ষের ভিতরে আতঙ্কে টেবিলের নীচে লুকানোর চেষ্টা শুরু করেন আইনপ্রণেতারা। নিরাপত্তা বলয় ভেদ করে হলের চারপাশে দাপিয়ে বেড়াতে শুরু করে হানাদাররা। ভিড়ের মধ্যে থেকে এক ট্রাম্প সমর্থকের চিৎকার, কোথায় ওরা? হামলাকারীদের নিশানায় ট্রাম্পের বিরোধী শিবিরের আইনপ্রণেতারা। স্বাভাবিকভাবেই অধিবেশন কক্ষের ভিতরে বিরোধী শিবিরের খোঁচার মুখে পড়তে হয় ট্রাম্প শিবিরকে। তাঁদের কটাক্ষ, কোথায় আপনাদের নেতা? তাঁকে ডেকে আনুন। হামলাকারীদের হাত থেকে রক্ষা করতে এরপরই নিরাপত্তা অফিসাররা আইনপ্রণেতাদের সুড়ঙ্গপথে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যান। তবে মুহূর্তের মধ্যে সেনেটের প্রিসাইডিং অফিসারের চেয়ার, হাউস স্পিকারের দপ্তর ও সেনেটের ডায়াস পর্যন্ত চলে আসে উগ্র ট্রাম্প সমর্থকরা। তাদের মধ্যেই একজন গলা ফাটিয়ে বলতে থাকে, এই ভোটে জয়ী হয়েছেন ট্রাম্পই।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিসের প্রায় ৪ ঘণ্টা সময় লেগে যায়। পুলিস পরে জানায়, নিহত ৪ জনের মধ্যে এক মহিলার গুলিতে মৃত্যু হয়েছে। বাকিরা মারা গিয়েছেন অসুস্থ হয়ে। জখম হয়েছেন বহু মানুষ। গ্রেপ্তারের সংখ্যাটাও বহু। উদ্ধার হয়েছে দু’টি পাইপ বোমা। মিলেছে বন্দুক। ক্যাপিটলের বাগান থেকে উদ্ধার হয়েছে মোলোটভ ককটেল। আইনপ্রণেতাদের নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রায় দেড় ঘণ্টা পর আসে ট্রাম্পের বার্তা। শান্তি ফিরিয়ে আনতে সমর্থকদের ফিরে যাওয়ার আবেদন জানান তিনি। অন্যদিকে, হিংসা ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয় ট্যুইটার, ফেসবুকের মতো সোশ্যাল সাইটগুলি। এর আগে ক্যাপিটলে এই হানাদারি বন্ধের দাবিতে ট্যুইটারে সোচ্চার হন কমলা হ্যারিস। মার্কিন মুলুকের এই ঘটনার নিন্দায় সরব হন বিশ্বনেতারাও। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ট্যুইট, ওয়াশিংটনে হিংসার এই খবরে ব্যথিত। শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতার হস্তান্তর প্রক্রিয়া জারি রাখা দরকার। বেআইনি বিক্ষোভের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে আটকানো যায় না। ঘটনার নিন্দা করেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ সহ অন্য রাষ্ট্রনেতারাও।
ক্যাপিটল ভবনে হিংসার নজির এর আগে মাত্র একবারই রয়েছে। ১৮১৪ সালে। এই ভবন চালু হওয়ার ১৪ বছর পর। সেবার যুদ্ধের সময় ক্যাপিটলে হামলা চালিয়েছিল ব্রিটিশ বাহিনী। চলেছিল লুট। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল উত্তর ও দক্ষিণ দিকের অংশে। কিন্তু আচমকা ঝড়বৃষ্টির কারণে ভবনটি পুরো ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পায়। কিন্তু এক্ষেত্রে হামলাকারীর ভূমিকায় আমেরিকার নাগরিকরাই। নিশ্চিতভাবেই যা নজিরবিহীন। আতঙ্কে আসনের নীচে লুকিয়ে পড়েছেন মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যরা। -পিটিআই