কর্মপ্রার্থীদের কোনও চুক্তিবদ্ধ কাজে যুক্ত হবার যোগ আছে। ব্যবসা শুরু করা যেতে পারে। বিবাহের যোগাযোগ ... বিশদ
তিন বছর আগে এই দিনেই মোদির নোটবন্দি ঘোষণার পরমুহূর্তে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেশবাসীকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন। কালো টাকা ধরতে আর উগ্রপন্থী কার্যকলাপের মোকাবিলায় নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে ঘোষণা করেন মোদি। সেই ঘোষণার পর সবার আগে তা প্রত্যাহারের দাবিতে সরব হন মমতা। শুধু বিবৃতি নয়, কেন্দ্রের ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে নিজেই রাস্তায় নেমেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। নোট বাতিল হওয়ার পরপরই নগদ টাকার জোগানের অভাব দেখা দেয়। ফলে, সাধারণ মানুষকে নগদ জোগাড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যাঙ্ক ও এটিএমের সামনে অপেক্ষা করতে দেখা গিয়েছিল। সাধারণ মানুষ বিপদে পড়বে এবং কর্মসংস্থানে টান পড়বে, এককথায় দেশের অর্থনীতি ভয়ঙ্কর অবস্থার মুখোমুখি হবে, এমনই আশঙ্কার কথা বলেছিলেন মমতা। উল্লেখ্য, নোটের জোগান কমে যাওয়ায় অসংগঠিত ক্ষেত্রে বহু মানুষ বেকার হয়ে পড়েন সেই সময়ে। নগদ টাকার জন্য ব্যাঙ্কে লাইনে দাঁড়িয়ে কিংবা আতঙ্কে মারা গিয়েছিলেন বেশ কয়েকজন সাধারণ মানুষ। এদিন সেই স্মৃতি তুলে ধরে মমতা বলেন, তিন বছর আগে তিনি যে আশঙ্কা করেছিলেন দেশের অর্থনীতি সম্পর্কে, এখন সেটাই ঘটেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় মমতার দাবি, ২০১৬ সালে তিনি যে কথা বলেছিলেন, এখন বিশ্বের তাবড় অর্থনীতিবিদ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ ও বিশেষজ্ঞরা সবাই একই কথা বলছেন। অর্থনীতিতে মন্দা, ব্যাঙ্ক সঙ্কটে, কৃষক থেকে মজদুর, ব্যবসায়ী থেকে গৃহবধূ—সবাই এই মন্দার কবলে বিপন্ন বলে মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রদেশ কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এদিন দুপুর থেকে কোল ইন্ডিয়া অফিসের সামনে বিক্ষোভসভার আয়োজন করা হয়। সেখানে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র, বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, রাজ্যসভার সদস্য প্রদীপ ভট্টাচার্য এআইসিসি’র দুই প্রতিনিধি গৌরব গগৈ, বি কে হরিপ্রসাদ প্রমুখ ওই বিক্ষোভে অংশ নেন। নোট বাতিল কার্যকর না হলে তাঁকে যে শাস্তি দেওয়া হবে, তা তিনি মাথা পেতে নেবেন বলে ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এদিন সেকথার জের টেনে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেনবাবু বলেন, এখন দেশের বেকারিত্ব সর্বকালীন রেকর্ড করেছে। শিল্পের অবস্থা খারাপ। ছাঁটাই হচ্ছে। জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণহীন। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গচ্ছিত নগদ থেকে সোনা—সবেই হাত দিচ্ছে মোদি সরকার। এই অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক সঙ্কটের প্রেক্ষিতে মোদির এবার বলা উচিত, তিনি কী শাস্তির যোগ্য। বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান অবশ্য মোদিকে নোট বাতিলের প্রশ্নে যেমন বিঁধেছেন, তেমনই এর তৃতীয় বর্ষপূর্তির দিন তৃণমূল রাস্তায় না নেমে ফিল্ম উৎসবে মেতে রয়েছে বলে কটাক্ষ করেছেন। বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, দেশের অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে মানুষের নজর ঘোরাতে মোদি সরকার নানবিধ ধর্মীয় উস্কানিমূলক বিতর্ক ছড়িয়ে দিচ্ছে। তার ফাঁদে পা না দেওয়ার আবেদন নিয়েই তারা শ্রমিক, কৃষক, ছাত্র-যুব ফ্রন্টে লাগাতার কর্মসূচি নিয়ে চলেছে।