উচ্চতর বিদ্যায় সফলতা আসবে। সরকারি ক্ষেত্রে কর্মলাভের সম্ভাবনা। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসবে। প্রেম-প্রণয়ে মানসিক অস্থিরতা ... বিশদ
কালিয়াচক থানার পুরনো ১৬ মাইল এলাকার গুরুটোলা গ্রামের বাসিন্দা জাওয়াদ আলি বিত্তশালী ছিলেন। শুধু তাঁর বাড়িটিই ১২ কাঠা জায়গার উপর নির্মিত। এছাড়াও বিপুল পরিমাণ কৃষি ও অকৃষি জমির পাশাপাশি অস্থাবর সম্পত্তিও ছিল উল্লেখযোগ্য পরিমাণে। দু’টি ডাম্পার, একটি এসইউভি সহ একাধিক মোটর বাইক ছিল। জাওয়াদ পরিবারের কাছে সঞ্চিত নগদ অর্থের পরিমাণ সম্পর্কে নিশ্চিত করে বলতে না পারলেও বাসিন্দাদের ধারণা, সবমিলিয়ে সম্পত্তির মূল্য কয়েক কোটি টাকা।
ওই পারিবারিক সম্পত্তির উত্তরাধিকারী বলতে তিনজন। বড় ছেলে আরিফ, ছোট ছেলে আসিফ এবং একমাত্র মেয়ে আরিফা ওরফে রিমা। কিন্তু কৈশোর থেকেই বিভিন্ন অনলাইন কার্যকলাপে হাত পাকিয়ে ফেলা আসিফের কাছে ধীরে ধীরে প্রকট হতে থাকে ভার্চুয়াল দুনিয়ার বৈভবের প্রলোভন। নৃশংস পারিবারিক হত্যাকাণ্ড প্রকাশ্যে আসার পর পুলিস সহ অনেকেরই অনুমান, ভার্চুয়াল বিনিয়োগের মাধ্যমে সম্পত্তি তৈরির নেশায় বুঁদ হয়ে থাকা আসিফের সম্ভবত মনে হয়েছিল তাদের বিপুল সম্পত্তি দাঁওয়ে লাগালে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই সীমাহীন বিত্তের মালিক হয়ে যেতে পারবে সে। তাই দ্রুত পারিবারিক সম্পত্তি হস্তগত করতেই সম্ভবত সে খুন করে পরিবারের সদস্যদের।
মালদহের অতিরিক্ত পুলিস সুপার (গ্রামীণ) অনীশ সরকার বলেন, প্রাথমিক তদন্তে যে বিষয়গুলি উঠে এসেছে, সেগুলির মধ্যে একটি অবশ্যই আসিফের পৈতৃক সম্পত্তি হস্তগত করার লক্ষ্য। তবে তদন্ত সবে শুরু হয়েছে। পুলিস ঘটনার সবদিক খতিয়ে দেখছে। স্থানীয়দের একাংশ জানিয়েছেন, দ্রুত আরও বেশি বিত্তশালী হয়ে ওঠার জন্য উৎসাহিত হয়ে আসিফ পারিবারিক সম্পত্তির কিছুটা আগেই বাবাকে দিয়ে বিক্রি করিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে পুরো সম্পত্তি এককভাবে করায়ত্ত করতে চেয়েই সে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। এক পুলিস আধিকারিক বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে শুধু তার মা-বাবাকে খুন করে আসিফের এককভাবে সম্পত্তির ভোগদখলের উদ্দেশ্য সফল হতো না। কারণ, বাকি দুই ভাইবোনও সেই সম্পত্তির ভাগীদার। তাই পথের কাঁটা সরাতে দাদা ও বোনকে শিকারের নিশানা বানিয়েছিল আসিফ। বোনের মৃত্যু হলেও দাদা আরিফ কোনওমতে প্রাণে বেঁচে যায়। এতগুলি খুনের সাক্ষী রাখবে না বলেই আসিফ সম্ভবত মেরে ফেলেছে তার ঠাকুমাকেও। তবে শুধুই কি সম্পত্তি নাকি ভার্চুয়াল জগতের কিছু চরিত্রের মতো বিপুল সম্পদের মালিক ও অত্যন্ত প্রভাবশালী হয়ে ওঠার প্রবল ইচ্ছা, নাকি তার চেয়েও বড় কোনও স্বপ্ন আসিফকে অল্প বয়সেই নৃশংস ‘খুনি’ করে তুলল সেই প্রশ্নের সঠিক উত্তর খুঁজছে পুলিস থেকে আমজনতা। বিশেষত উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় আগ্নেয়াস্ত্র মজুত করার পিছনে শুধুই কি দখলিকৃত সম্পদ রক্ষা করার উদ্দেশ্য, নাকি একই সঙ্গে মাফিয়া গ্যাং লিডার হয়ে ওঠারও প্রবল বাসনা ছিল— সেসব দিকও খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে।