সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। কর্মক্ষেত্রে বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার ... বিশদ
জায়গাটি নিউ দিল্লি লোকসভা কেন্দ্রের আওতাধীন। দিল্লি ক্যান্টনমেন্ট মেট্রো স্টেশন থেকে দুপা হাঁটলেই ব্রার স্কোয়ার। সেই চত্বরেই রয়েছে এই ব্রার স্লাম ক্যাম্প। এলাকায় ঢোকার ঠিক মুখেই থমকে দাঁড়াতে হয়। লোকসভা নির্বাচন বয়কটের ডাক দিয়ে বড় করে আটকানো রয়েছে ফেস্টুন। তাতে লেখা, ‘বিজলি নেহি তো ভোট নেহি’। বিদ্যুৎ নেই, তাই ভোটও নেই। ব্যাখ্যা করে বলা হয়েছে ফেস্টুনে, গত ১৯ বছর ধরে ব্রার স্কোয়ার বস্তিবাসীরা এই বঞ্চনার শিকার। তাই এবার তাঁদের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত, ভোট বয়কট। কেন নেই বিদ্যুৎ? ঘরের বাইরে রাখা খাটিয়ায় বসে মহম্মদ আক্রম, বিশাল, রাজীব চিন্ডালিয়ারা বলছেন, ‘অনেক আগে এখানে বিদ্যুৎ ছিল। তারপর হঠাৎ করে সরকারের মনে হল এটা আর্মির এলাকা, তাই সেনাবাহিনীর নো অবজেকশন সার্টিফিকেট লাগবে। আর্মি বলছে, আমরা বেআইনিভাবে বাস করছি এখন। তাই এনওসি দেওয়া যাবে না। দুইয়ের জাঁতাকলে গত ১৯ বছর ধরে রোজ পিষে মরছি আমরা।’
গোটা এলাকায় সার সার বাড়ি। ইটের। ইটগুলি নীল রঙ করা। ঘিঞ্জি এলাকা হওয়ার দরুণ সূর্যের আলো ঘরের মধ্যে সেভাবে ঢোকে না। তাই দরজা খোলা থাকে সর্বক্ষণ। ঘরের ভিতর অন্ধকার। দৈন্যদশা প্রকট। প্রত্যেকটি বাড়ির সামনে খাটিয়া রাখা। নিচে উদোম গায়ে খেলা করে বেড়াচ্ছে শিশুরা। তাদের দেখিয়েই সংশ্লিষ্ট বস্তি এলাকার প্রধান ব্রিজেশ যাদব বললেন, ‘বিদ্যুৎহীন বস্তিতে সবথেকে বেশি সমস্যায় পড়ছে এই বাচ্চারা। আমরা বড়রা সহ্য করে নিচ্ছি। এরা কীভাবে করবে? এমন গরম। আলো নেই, পাখা নেই। গরমে লাল লাল গোটা বেরিয়ে যাচ্ছে বাচ্চাগুলোর শরীর জুড়ে। বমি হচ্ছে। শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছে সবাই। তাও কারও হুঁশ নেই। এবার ভোট বয়কট করে আমরা হুঁশ ফেরানোর চেষ্টা করছি। তাতেও যদি না হয়, আগামী দিল্লি বিধানসভা ভোটও বয়কট করব আমরা।’ বাসিন্দারা জানালেন, নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার পর বিজেপি, কংগ্রেস এবং আম আদমি পার্টি থেকে প্রচার করতে এসেছিল। কিন্তু পার্টির নেতাদের প্রচার করতেই দেওয়া হয়নি। ব্রিজেশ যাদব বললেন, ‘আমরা সকলকেই দেখে নিয়েছি। কেউ কথা রাখেনি। ২০১৫ সালের ভোটের আগে অরবিন্দ কেজরিওয়াল নিজে ব্রার বস্তিতে এসে প্রতিশ্রুতি দিয়ে গিয়েছিলেন, ক্ষমতায় আসার ১৫ দিনের মধ্যে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করবেন এখানে। সাড়ে চার বছর কেটে গিয়েছে। কিচ্ছু আসেনি।’ ভোট আসবে, ভোট যাবে। কিন্তু ইলেকট্রিকের ‘মিটার’ না বসলে সেই ভোট উৎসবের অংশীদার হতে আর রাজি নন বস্তির বাসিন্দারা।