সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। কর্মক্ষেত্রে বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার ... বিশদ
চম্পাই অর্থাৎ চম্পাই মাহত। ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) তথা মহাজোটের প্রার্থী। পাশাপাশি এখানকার বিজেপি প্রার্থী বিদ্যুৎবরণের গুরুও বটে। যে সমীকরণ কি না এই কেন্দ্রে ভোটযুদ্ধের আবহটাকেই অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছে। এবং দু’তরফেরই এক লক্ষ্য—আদিবাসী ভোট। এই লোকসভার ছ’টি বিধানসভার মধ্যে চারটিই গ্রামীণ এবং অধিকাংশ আদিবাসী ভোটার। বাকি দু’টি শহরকেন্দ্রিক বিধানসভায় এই ভোটারদের সংখ্যা কম। আর তাই আদিবাসী ভোটারদের নিজেদের দিকে টানতে সব রকম প্রচেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছেন শাসক ও বিরোধী প্রার্থীরা। প্রার্থী ঘোষণার পর থেকেই এই কেন্দ্রে গুরু-শিষ্যের লড়াই দেখার জন্যই মুখিয়ে জামশেদপুর। এক সময় রাজ্যে একাধিক আন্দোলনে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দু’জনই লড়েছেন। এখন তাঁরা একে অপরের বিরুদ্ধে ভোটের ময়দানে।
ফাঁকতালে শুনে ফেলা বিজেপি কর্মীদের আলোচনার সঙ্গে বাস্তবের যে বিলক্ষণ মিল আছে, তা অবশ্য বিষ্টুপুর, কাসিডি, বারদোয়ারির মতো শহরকেন্দ্রিক এলাকায় ঘুরেই বোঝা গেল। সাধারণ মানুষের কথাতেও ‘আদিবাসী ভোট যার, আসন তার’ প্রসঙ্গ উঠে এল। বিষ্টুপুর থানার কাছেই ফুটপাথে সান্ধ্যভ্রমণে বেরনো প্রবীণ ব্যক্তিদের এই প্রশ্ন করতেই তাঁরা বলে উঠলেন, ‘শুধু শহরের ভোটে কি আর লোকসভা জেতা যায়? আগেরবার কোনও জোট ছিল না। আদিবাসী ভোট ভাগ হয়েছে। এবার বিজেপিকে সতর্ক থাকতে হবে। ওই ভোট নিজের দিকে না টানতে পারলে কিন্তু ফল অন্যরকম হতে পারে।’ একইভাবে জুবিলি পার্ক গেটের কাছে কয়েকজন অটোওয়ালার সঙ্গে কথাবার্তাতেও এই একই যুক্তি শোনা গেল। তাঁদের আরও সংযোজন, ‘জামশেদপুর টাউনে প্রার্থীর উপস্থিতি কম, তাঁদের হয়ে মাইকিং করেই প্রচার বেশি। প্রার্থীরা তো সব গ্রামে।’
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেই ফেললেন, ‘বাহারগোরা. পটকা, ঘাটশিলার মতো জায়গায় আমাদের দাঁত ফোটাতে গেলে ভালো প্রচার দরকার। কারণ এই সিটে হার-জিতের মধ্যে দাঁড়িয়ে রয়েছে আদিবাসী ভোটব্যাঙ্ক। জেএমএম প্রার্থী প্রচারের বেশি সময়টাই যে ওই অঞ্চলে দিচ্ছেন, তাও মানছেন বিজেপি নেতারা। জেএমএম নেতৃত্বও মানছে, আদিবাসীদের ভোটই ফারাক গড়ে দেবে। দলের মুখপাত্র সুপ্রিয় ভট্টাচার্যের কথায়, সব ভোটই দরকার। তবে এখানে যা রাজনৈতিক চিত্র, তাতে আদিবাসী ভোটারদের টেনে নিতে পারলে জয় নিশ্চিত।
২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ঘাটশিলা এবং জুগসালাইয়ে জোর লড়াই দিয়েছিল জেএমএম। রানার আপ হয়েছিল জেএমএম জুগসালাই, পটকা এবং ঘাটশিলায়। এককভাবে লড়াই করে জুগসালাইয়ে ৫৭,২৫৭, পটকায় ৬১,৪৮৫ এবং ঘাটশিলায় ৪৬,১০৩টি ভোট পেয়েছিল। সেই সব মাথায় রেখেই গ্রামীণ ভোটের উপরই ভরসা রাখছে জেএমএম। তবে তাদের চিন্তার কারণও রয়েছে। জামশেদপুর পূর্ব এবং পশ্চিম বিজেপির শক্ত জমি বলেই পরিচিত। কারণ সেখানকার শহরাঞ্চলের ভোটের একটা বড় অংশই গেরুয়া শিবিরের পক্ষে। মোর্চার মতে, সেই ভোট তাদের দিকে চলে এলে, এই আসনে বিজেপিকে পরাস্ত করা সহজ হবে।