শরীর-স্বাস্থ্যের প্রতি নজর দেওয়া প্রয়োজন। কর্মক্ষেত্রে উন্নতির সম্ভাবনা। গুপ্ত শত্রুতার মোকাবিলায় সতর্কতা প্রয়োজন। উচ্চশিক্ষায় বিলম্বিত ... বিশদ
রাজ্যের কুটির শিল্প মানচিত্রে হাওড়া জেলার উদয়নারায়ণপুর ব্লক অন্যতম স্থান দখল করে আছে। যার মধ্যে অন্যতম এই ব্লকের মাদুর শিল্প। একসময় ব্লকের মনসুকা, খিলা, গড় ভবানীপুর, ভবানীপুর সোনাতলা, বিধিচন্দ্রপুর, কানুপাট, নরনারায়ণচক, কুমারচক সিংটি প্রভৃতি এলাকার কয়েক হাজার পরিবার মাদুর কাঠির চাষ এবং মাদুর বোনার সঙ্গে যুক্ত থাকত। যদিও এখন সেইসব অতীত। বর্তমানে হাতে বোনা মাদুরের জায়গায় প্লাস্টিক মাদুর বাজার দখল করায় অস্তিত্ব সঙ্কটের মুখে এইসব এলাকার হাতে বোনা মাদুর শিল্প। আর যার কারণে বর্তমানে বাজারে হাতে বোনা মাদুরের চাহিদা কমায় মাদুর শিল্প থেকে মুখ ফিরিয়েছে একাধিক পরিবার।
সাধারণত জমিতে মোথা ঘাষ চাষ করে সেটা শুকিয়ে মাদুর কাঠি তৈরি করা হয়। পরে সেগুলি দড়ি দিয়ে এক এক করে গেঁথে মাদুর বোনা হয়। মূলত উদয়নারায়ণপুরে একহারা দোহারা মাদুর তৈরি করেন কারিগররা। মহিলা থেকে পুরুষ সারাদিনে সর্বাধিক চারটে মাদুর তৈরি করতে পারেন একজন কারিগর। পরে এইসব মাদুর হাটে বিক্রি করা হয়। কারিগররা বলছেন, আগে হাতে বোনা মাদুরের চাহিদা ছিল। তাই মাদুর বিক্রি করে লাভ হতো। বর্তমানে চাহিদা কমায় লাভ কমেছে। হাতে বোনা মাদুর শিল্পে সঙ্কট সম্পর্কে উদয়নারায়ণপুরের কুমারচকের বাসিন্দা প্রবোধ পোড়েল জানান, আগে এখন পাইকারির সংখ্যা কম হওয়ায় বাজারে বিক্রি কমেছে। তিনি জানান, আগে সবসময় বাড়িতে ৩০-৪০টা মাদুর মজুত থাকলেও, এখন মাত্র ২-৩টি মাদুর মজুত রাখতে হয়। হাতে বোনা মাদুর অনেক বেশি টেঁকসই ও ঠান্ডা হলেও প্লাস্টিক মাদুরের তুলনায় দাম বেশি। তাই ক্রেতারা প্লাস্টিক মাদুরের দিকেই ঝুঁকছে। অন্যদিকে ছায়া পোড়েল জানান, এখন অধিকাংশ এই পেশা থেকে সরে এসেছেন। যার ফলে মাদুর কাঠি সেভাবে চাষ হচ্ছে না। যদি সরকার এই ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়, তাহলে আবার অনেকেই এই পুরনো পেশায় ফিরে আসবে।
উদয়নারায়ণপুরের বিধায়ক সমীর পাঁজা জানান, ইতিমধ্যে এই শিল্পকে বাঁচাতে খাদি গ্রামোদ্যোগ পর্ষদকে একটি প্রোজেক্ট জমা দেওয়া হয়েছে। আশা করা যায়, এই আর্থিক বছরে এটা বাস্তবায়িত হয়ে যাবে। এছাড়াও গ্রামের মহিলাদের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে মহিলাদের ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।