সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক, কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার বা ... বিশদ
রাজপরিবারের সদস্য হরপ্রসাদ গর্গ বলেন, ঝড়ে রাজবাড়ির তেমন কোনও ক্ষতি না হলেও প্রচুর গাছ নষ্ট হয়েছে। একশো বছরের বেশি পুরনো পামগাছের সারি ছিল রাজরাড়ির সৌন্দর্য। বেশির ভাগ গাছই ঝড়ে ভেঙে গিয়েছে বা উপড়ে পড়ছে। ফুলবাগ প্রাসাদের সামনে রাজা সতীপ্রসাদ গর্গের মূর্তি ঝড়ে ভেঙে পড়েছে। গাছ পড়ে ঐতিহ্যবাহী দুর্গামণ্ডপের ক্ষতি হয়েছে। রাজবাড়ির পর্যটন কেন্দ্রের সৌন্দর্য ফেরাতে সবাইকে দায়িত্ব নেওয়ার আবেদন জানান হরপ্রসাদবাবু। রাজবাড়ির কর্মচারী স্বপন চক্রবর্তী বলেন, রাজবাড়ির কুলদেবতা মদনগোপালজিউর মন্দির প্রাঙ্গণে একটি পঞ্চবটি বাগান ছিল। প্রায় দু’শো বছরের পুরনো বট, অশ্বত্থ, বেল, অশোক ও আমলকী, পাঁচটি গাছের সমাহারে একটি বিশাল ছায়াঘেরা বনবীথি ছিল। কয়েকটি গাছ মরে গেলেও বট ও অশ্বত্থ গাছটি বহু বিপর্যয় সামলে দিয়েছে দশকের পর দশক ধরে। এবারের ঝড়ে সেই পঞ্চবটি উপড়ে পড়ায় সকলেরই মন খারাপ।
মহিষাদলের উদ্যোগপতি দেবাশিস মাইতি, চিকিৎসক নীলাঞ্জন চক্রবর্তী, স্থানীয় বাসিন্দা সন্দীপ গুড়িয়া বলেন, ঝড়ের পর আর রাজবাড়ির বাগানের দিকে তাকানো যাচ্ছে না। আমবাগান বা পামের বীথি স্থানীয়দের কাছে শুধু নয়, পর্যটকদেরও খুবই প্রিয়। রাজবাড়িকে ঘিরে সিনেমার শ্যুটিংয়ে এই বাগানগুলির বহু স্মৃতি রয়েছে। দশকের পর দশক ধরে এখানে সাহিত্যিক জলধর সেন, নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর মতো সাহিত্য ও সংস্কৃতি জগতের বহু নামী ব্যক্তিত্ব এসেছেন। হিন্দি সাহিত্যের প্রখ্যাত কবি নিরালার স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে এখানে। ঝড়ের তাণ্ডবে মুহূর্তে সেই ইতিহাস লোপাট হয়ে গেল।
মহিষাদল ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গেঁওখালি ত্রিবেণী নদী সঙ্গম, বাঙালি পর্তুগিজ গ্রাম ও মহিষাদল রাজবাড়িকে ঘিরে সার্কিট ট্যুরিজমের পরিকল্পনা করেছে রাজ্য পর্যটন দপ্তর ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। রাজবাড়ির অধিগৃহীত কয়েক একর জমি হলদিয়া উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কিছুদিন আগে পর্যটন দপ্তরকে হস্তান্তর করে। এখানে পর্যটনের উন্নয়নে কয়েক কোটি টাকাও দেয় হলদিয়া উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। দু’শো বছরের পুরনো রাজবাড়ি রঙ্গীবসান প্যালেসকে হেরিটেজ ঘোষণা করে এর মেরামতির জন্য ৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। তবে নতুন রাজবাড়ি ফুলবাগ প্যালেস সহ রাজবাড়ির জমির একাংশ রাজপরিবারের হাতেই রয়েছে।
মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি তিলক চক্রবর্তী বলেন, উম-পুনের ক্ষতিপূরণ দেওয়া এবং বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ শেষ হলেই কিছুদিনের মধ্যে রাজবাড়ি চত্বর পরিষ্কার করা হবে। মহিষাদলের গর্বের পর্যটনের জায়গা বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছে। প্রশাসন দ্রুত এর পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেবে। রাজবাড়ি চত্বর সবুজায়নে এগিয়ে এসেছে স্থানীয় ছাত্র সমন্বয় ও মহিষাদলের মাইগ্রেন্ট ওয়ার্কার্স সলিডারিটি নেটওয়ার্ক নামে দুই সংগঠন। ছাত্র সমন্বয়ের পক্ষে শ্যামসুন্দর সামন্ত ও বিক্রম চট্টোপাধ্যায় বলেন, রাজবাড়ি প্রাঙ্গণে ছাতিম, বট, বকুল গাছ লাগানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।