সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। কর্মক্ষেত্রে বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার ... বিশদ
ফাঁসিরঘাট সেতু আন্দোলন কমিটির সভাপতি কৌসর আলম ব্যাপারী বলেন, জলের তোড়ে বাঁশের সেতু ভেঙে গিয়েছে। সেতু দিয়ে যাতায়াত বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বর্ষাকালেও এই সেতু দিয়ে যাতায়াত করা যাবে না। প্রায় ৩৫ হাজার বাসিন্দা রোজ এই সেতু দিয়ে কোচবিহারে শহরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। তাঁরা মারাত্মক সমস্যায় পড়েছেন। এখানে পাকা সেতুর দাবি অবিলম্বে মেটাতে হবে। কোচবিহারের মহকুমা শাসক সঞ্জয় পাল বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা আরও খোঁজখবর নিচ্ছি।
কোচবিহার শহরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ড লাগোয়া ফাঁসিরঘাট থেকে তোর্সা নদীর মাঝামাঝি চর পর্যন্ত প্রতি বছরই বাঁশ দিয়ে একটি সেতু তৈরি করা হয়। বর্ষাকাল না আসা পর্যন্ত এই সেতুটিই বাসিন্দাদের যাতায়াতের অন্যতম ভরসা। একটি সমবায় সমিতি এই সেতুটি তৈরি ও দেখভাল করে। এই সেতুটি পারাপারের জন্য বাসিন্দারা ওই সমিতিকে নির্দিষ্ট টাকাও দেন। সময় ও দূরত্ব কমানোর জন্য রোজ কয়েক হাজার মানুষ এই সেতুটিই ব্যবহার করতেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সোমবার সেতুটির একাংশ আচমকা ভেঙে যায়। এরপর জলের তোড়ে মাঝেমধ্যেই সেতুটির বাঁশ খুলে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবারও প্রচুর মানুষ সেতু পারাপারের জন্য দুই তীরে হাজির হয়েছিলেন। কিন্তু বাধ্য হয়ে তাঁদের ফিরে যেতে হয়েছে। আপাতত নৌকা দিয়ে অস্থায়ীভাবে নদী পারাপারের চেষ্টা হচ্ছে। বাসিন্দাদের দাবি, মোয়ামারি, সুকটাবাড়ি, ঘুঘুমারি, পুঁটিমারি, ফলিমারি সহ নয়টি পঞ্চায়েত এলাকার কয়েক হাজার বাসিন্দা এই বাঁশের সাঁকোর উপর নির্ভরশীল। শীতলকুচি, মাথাভাঙা, মেখলিগঞ্জ, হলদিবাড়ি থেকেও বাসিন্দারা এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে নদী পেরিয়ে সরাসরি কোচবিহার সাগরদিঘি চত্বরে চলে আসেন। এই রাস্তা দিয়ে কোচবিহার শহরে আসতে সময় অনেকটাই কম লাগে। সেকারণেই বাসিন্দারা এই রাস্তাটি ব্যবহার করেন। প্রতিদিনই দেখা যায় হাজার হাজার বাসিন্দা বাইকে চেপে এই সাঁকো দিয়ে কোচবিহার শহরে আসছেন। এই বাঁশের সাঁকো পেরিয়ে অনেকে স্কুল, কলেজে, অফিসে আসেন। রোগীদেরও এই সাঁকো দিয়ে টোটোতে চাপিয়ে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। বাঁশের সাঁকো ভেঙে যাওয়ায় বাসিন্দাদের বর্তমানে ঘুরপথে শহরে পৌঁছতে হচ্ছে।
২০১৬ সালের ১৪ ডিসেম্বর ফাঁসিরঘাটে পাকা সেতু তৈরির দাবিতে প্রথম আন্দোলন দানা বাঁধে। এরপর বাইক র্যা লি, গণস্বাক্ষর অভিযান, গণ কনভেনশন, ডেপুটেশন, দফায় দফায় বৈঠক, বিধায়ক ও সংসদ সদস্যের কাছে দরবার, মুখ্যমন্ত্রী সহ বিভিন্ন মহলে চিঠি পাঠানোর উদ্যোগ কমিটি নিয়েছে। কিন্তু এখনও সেতুর দাবি পূরণ হয়নি। তবে ভোটের মরশুমে নতুন করে এই দাবিকে সামনে আনার চেষ্টা করেছেন বাসিন্দারা। বাঁশের তৈরি সাঁকো দিয়েই রোজ কয়েক হাজার মোটর বাইক, টোটো, সাইকেল চলাচল করে। টোটো ও মোটরবাইক যাতায়াতের জন্য ৮-১০ টাকা করে ইজারাদারকে দিতে হয়। অত্যন্ত বিপজ্জনকভাবেই এখানে সাঁকো পারাপার করা হয়। এবার বর্ষার আগেই নদীর জলের তোড়ে বাঁশের সাঁকোর একাংশ ভেসে গিয়েছে। বাসিন্দাদের দাবি, এখানে পাকা সেতু তৈরি হলে নদী পারাপার হওয়ার সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।