সম্পত্তিজনিত বিষয়ে অশান্তি বৃদ্ধির আশঙ্কা, আত্মীয়-পরিজনের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি। শেয়ার, ফাটকা, লটারিতে অর্থাগম, কর্মক্ষেত্রে গোলযোগের ... বিশদ
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শরৎ বোস রোডে ফুটপাতের উপর একটি খাবারের স্টল রয়েছে। সেখানেই কাজ করত বিহারের বাসিন্দা লালবাবু। শনিবার দোকান খোলাই ছিল। ঝড়বৃষ্টির কারণে খরিদ্দার কম থাকায়, দোকান একটু তাড়াতাড়ি বন্ধ করে দেন মালিক। রাতে সেখানেই থাকত কর্মচারী লালবাবু। দোকান বন্ধ হওয়ার পর প্রতিদিন সেখানে সে মদের আসর বসাত। তার পরিচিতরা হাজির হতো। অনেক রাত পর্যন্ত খাওয়াদাওয়া চলত। দোকানে বিক্রি না হওয়া জিনিস মদের চাট হিসেবে ব্যবহার করা হতো। শনিবার সেখানে আসেন মনোজ। তাঁর ইস্ত্রির দোকান কাছাকাছি হওয়ায় লালবাবুর সঙ্গে তাঁর আগে থেকেই পরিচয় ছিল। বন্ধুত্বও গড়ে উঠেছিল। আগেও বেশ কয়েকবার এসে খাওয়াদাওয়া করেছেন অভিযুক্তের সঙ্গে। অভিযোগ, নিয়মিত মদ খেতেন মনোজ বৈঠা। এদিনও দু’জনে বসে মদ্যপান শুরু করে। এই সময় মনোজ খাবার চান লালবাবুর কাছে। অভিযুক্ত তা দিতে রাজি হয়নি। এই নিয়ে দু’জনের মধ্যে বচসা বেধে যায়। এমনকী হাতাহাতিও হয় বলে জানা গিয়েছে। ধাক্কাধাক্কিতে মাটিতে পড়ে যান মনোজ। দোকানে মশলা বাটার শিলনোড়া দিয়ে মনোজের মাথায় অনবরত আঘাত করতে থাকে অভিযুক্ত। ভারী জিনিস দিয়ে আঘাত করায় তাঁর মাথা থেকে রক্তক্ষরণ হতে শুরু করে। অচৈতন্য হয়ে পড়েন ইস্ত্রির দোকানের মালিক মনোজ। ওই অবস্থায় তাঁকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় লালবাবু। রাত ১১টা নাগাদ টালিগঞ্জ থানায় একটি ফোন আসে। বলা হয়, শরৎ বোস রোডে পড়ে রয়েছেন এক ব্যক্তি। তাঁর মাথায় আঘাত রয়েছে। রক্তে ভেসে গিয়েছে চারপাশ। খবর পেয়ে আসেন তদন্তকারী অফিসাররা। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসকরা মনোজকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয় রক্তমাখা শিলনোড়া। তা দেখে পুলিস নিশ্চিত হয়, এটি দিয়েই খুন করা হয়েছে মনোজকে।
কে তার খুনি, তা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে পুলিস। জোগাড় করা হয় সিসিটিভির ফুটেজ। এলাকার বাসিন্দারা জানান, রাতে দু’জনকে একসঙ্গে মদ্যপান করতে দেখেছিলেন তাঁরা। ঘটনার পর লালবাবু বেপাত্তা হওয়ায় তার প্রতি সন্দেহ জাগে অফিসারদের। জানা যায়, এলাকাতেই তার ডেরা রয়েছে। এরপর সেখানে হানা দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিসের দাবি, জেরায় ধৃত জানিয়েছে, সে এই খুনের ঘটনা ঘটিয়েছে। খাবার না দেওয়াকে কেন্দ্র করেই এই ঘটনা ঘটেছে।