নতুন কোনও কর্ম পরিকল্পনায় সাফল্যের ইঙ্গিত। লটারি বা ফাটকায় প্রাপ্তি যোগ। খেলাধূলায় কৃতিত্ব। বাক্যে ও ... বিশদ
তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর ভিলেজ পুলিস পদটি তৈরি করা হয়। মূলত প্রত্যন্ত এলাকায় খোঁজখবর চালানো এবং অপরাধীদের সম্পর্কে তথ্য জোগাড় করাই ছিল তাঁদের কাজ। নিয়োগও হয় কয়েকহাজার ভিলেজ পুলিসকর্মী। নিয়োগ হওয়া ভিলেজ পুলিসকর্মীদের জেলার পুলিস লাইনে দেড় মাসের একটা প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তাতে তাঁদের কাজের ধরণ সম্পর্কে জানানো হয়। কীভাবে খবর সংগ্রহ করতে হয়, তার কিছু কৌশল শেখানো হয়। যেহেতু বাহিনীর সঙ্গে তাঁরা কাজ করবেন, তাই ড্রিল ও পিটি শেখানো হয়।
প্রথমদিকে তাঁদের দিয়ে এলাকার তথ্য জোগাড়ের কাজই করানো হত। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই থানার পুলিসকর্মীদের সঙ্গে তাঁদের তল্লাশিতেও নিয়ে যাওয়া শুরু হয়। শুধু তাই নয়, আইনশৃঙ্খলা জনিত ডিউটি বা থানায় লকআপ পাহারার ডিউটিও তাঁরা করতে শুরু করেন। অথচ এই নিয়ে তাঁদের কোনও প্রশিক্ষণই হয়নি। আসলে রাজ্য পুলিসের অধিকাংশ থানাতেই পর্যাপ্ত সংখ্যায় পুলিসকর্মী নেই। একাধিক পদ খালি পড়ে রয়েছে। যে কারণে পুলিসের একাধিক কাজ ভিলেজ পুলিসদের দিয়ে করাতে বাধ্য হচ্ছেন থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসাররা। এতদিন এই নিয়ে কোনও সমস্যাই হয়নি। কিন্তু বিশ্বজিতের মৃত্যুর পর পুলিসমহলের একাংশ এই নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। তাঁদের বক্তব্য, যে সমস্ত কাজ তাঁদের দিয়ে করানো হচ্ছে, তার প্রতিটির আলাদা আলাদা প্রশিক্ষণ হয়ে থাকে। যা মাত্র দেড় মাসে সম্ভব নয়। কোনও জায়গায় তল্লাশিতে গেলে অপরাধীরা যদি তাড়া করে, তাহলে সেখান থেকে কীভাবে বেরিয়ে আসতে হয়, তার কৌশল জানা অত্যন্ত জরুরি। আর ভিলেজ পুলিসে কর্মরতদের হাতে কোনও আগ্নেয়াস্ত্রও নেই। এমনকী এই সংক্রান্ত কোনও প্রশিক্ষণও হয়নি। তাই তল্লাশি অভিযানের সময় অপরাধী যদি কোনও ভিলেজ পুলিসকর্মীকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়, তার প্রত্যুত্তর দেওয়া তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়। যে কারণে জীবনের ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ডিউটিতে গেলে উত্তেজিত জনতাকে নিয়ন্ত্রণ করার কৌশলও রয়েছে। কিন্তু তাঁদের সেই প্রশিক্ষণও না থাকায় অনেক জায়গাতেই এই ডিউটিতে গিয়ে তাঁদের রীতিমতো সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এমনকী জনতার হাতে প্রহৃত হওয়ার ঘটনাও ঘটছে।
বিষয়টি নিয়ে এতদিনে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছেন রাজ্য পুলিসের কর্তারা। প্রশিক্ষণ ছাড়াই এই ধরনের কাজে তাঁদের ব্যবহারের যে ঝুঁকি রয়েছে, তা বুঝতে পারছেন। সেই কারণেই ভিলেজ পুলিসকর্মীদের এই সংক্রান্ত কাজে দক্ষ করে তোলার জন্য প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে খবর। কী কী ধরনের প্রশিক্ষণের প্রয়োজন, তার একটি তালিকাও তৈরি করা হচ্ছে। আধিকারিকরা চাইছেন, একজন পুলিসকর্মীর যে ধরনের প্রশিক্ষণ থাকে, তার অন্তত অর্ধেকটা পান ভিলেজ পুলিসে কর্মরতরাও। দ্রুত যাতে তা কার্যকর করা যায়, তার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন কর্তারা।