কর্মপ্রার্থীদের বিভিন্ন দিক থেকে শুভ যোগাযোগ ঘটবে। ব্যবসায় যুক্ত হলে ভালোই হবে। প্রেম-প্রণয়ে নতুনত্ব আছে। ... বিশদ
কীভাবে কৃষক গোলমরিচের চাষ করবেন তা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ২-৩টি পর্বযুক্ত লতার কাটিং করে চারা তৈরি করা যায়। ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে মূল গাছ থেকে লতা আলাদা করা হয়। কাটিং ডাইথেন এম ৪৫ দ্রবণে ডুবিয়ে শোধন করে নিতে হবে। কম্পোস্ট সার, বালি ও মাটি মেশানো পলিথিনের প্যাকেটে কাটিং রাখতে হবে। মাঝেমধ্যে জল দিতে হবে। অতিরিক্ত জল যাতে বেরিয়ে যেতে পারে, পলিথিনের প্যাকেটের নীচের দিকে কয়েকটি ছিদ্র করে দিতে হবে। পলিথিনের প্যাকেটে বসানোর ২ মাস পর কাটিং থেকে শিকড় বের হয়। চারা ছায়ায় রাখতে হবে। এক বছর বয়সের চারা জমিতে বসাতে হবে। গর্তে কার্বোফুরান, নিমখোল ও সিঙ্গল সুপার ফসফেট দিয়ে চারা বসাতে হবে। মাটির নীচে যেন একটি গাঁট থাকে। ৩ মিটার দূরত্বে চারা বসাতে হবে।
এক একর জমির জন্য ১২০০ চারা লাগবে। নারকেল গাছের গোড়া থেকে দু’দিকে ৬০ সেন্টিমিটার দূরত্বে গর্ত করে গোলমরিচের চারা বসাতে হবে। বছরে প্রতিটি গাছের জন্য ১০০: ৪০: ১৪০ গ্রাম এনপিকে সার দিতে হবে। মে-জুন ও সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে দু’বার সার দেওয়া উচিত। প্রতি বছর এক ঝুড়ি বা ১০ কেজি গোবর সার বা কম্পোস্ট সার দিতে হবে। তিন বছর পর থেকে গাছ প্রতি এক কেজি নিমখোল দিতে পারলে ফলন ভালো হয়। চারা একটু বড় হলে অবলম্বন গাছের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে দিতে হবে। গরমে গাছে ঠাণ্ডা জল স্প্রে করতে পারলে ভালো। মে-জুন মাসে গোলমরিচে ফুল ফোটে। এবং ফল আসতে শুরু করে। ফল পাকতে ৬-৭ মাস সময় লাগে।
ফুল আসার সময় বৃষ্টি হলে পরাগ মিলন ভালো হয়। পুস্পমঞ্জরিতে ২-৪টি ফল পেকে কমলা রং ধরলে হাত দিয়ে ফলের থোকা পাড়তে হবে। ৯-১০দিন পরিস্কার জায়গায় রোদে শুকিয়ে ঘরে তুলতে হবে গোলমরিচ। গাছ লাগানোর ৩-৪ বছর পর থেকে ফল মিলতে শুরু করে। ৫-১৫ বছরের গাছে সবচেয়ে ভালো ফলন পাওয়া যায়। গাছের বয়স ২০ বছর হয়ে গেলে ফলন কমতে শুরু করে। প্রতিটি গাছে ৫-৮ কেজি কাঁচা ফল পাওয়া যায়। রোদে শুকানোর পর তা থেকে মেলে দেড় থেকে আড়াই কেজি গোলমরিচ। ঠিক সময়ে ফসল তোলা, শুকানোর উপর গোলমরিচের রং, ঝাঁঝ নির্ভর করে। উন্নত পদ্ধতিতে যন্ত্রের মাধ্যমে এখন অনেকে গোলমরিচ শুকনো করে থাকেন। শুকিয়ে যাওয়ার পর গোলমরিচের রং কালো বা ঘন বাদামি হয়ে যায়। রং ভালো না হলে ভালো দাম পাওয়া যায় না। অনেকে গোলমরিচ শুকানোর আগে একটি পাত্রে কয়েক মিনিট জলে ফুটিয়ে নিয়ে থাকেন। এতে ধুলোবালি চলে যায়। এই পদ্ধতিকে ব্লাঞ্চিং বলে।
গোলমরিচে ছত্রাকঘটিত রোগ দেখা দেয়। বর্ষায় এই রোগের প্রকোপ বেশি হয়। আক্রান্ত পাতার উপর জলে ভেজার মতো দাগ দেখা যায়। পাতা হলুদ হয়ে গিয়ে গাছ মারা যায়। প্রতিরোধে ১ শতাংশ বোর্দো মিশ্রণ স্প্রে করতে হবে। এছাড়া ব্লাইটক্স স্প্রে করা যেতে পারে। গোলমরিচে ঢলে পড়া রোগও দেখা যায়। ছত্রাক মাটি থেকে গাছের শিকড়ে ঢুকে যায়। মার্চ মাসে মাটিতে রস কম থাকায় এই রোগ বেশি ছড়ায়। আক্রান্ত গাছ শিকড় সহ তুলে পুড়িয়ে ফেলতে হবে। প্রাথমিকভাবে গাছের গোড়া ব্লাইটক্স দিয়ে ভিজিয়ে দিতে হবে। গোলমরিচে পলুবিটলের আক্রমণ হয়। পোকা গাছের কাণ্ড, পাতা খেয়ে নেয়। নিমজাতীয় কীটনাশক স্প্রে করতে হবে। আঁশপোকার আক্রমণ রুখতে ডাইনিথোয়েট স্প্রে করলে ফল পাওয়া যায়।
আতমা প্রকল্পের সহযোগিতায় উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় নারকেল বাগানে গোলমরিচ চাষের উদ্যোগ নিয়েছে উদ্যানপালন দপ্তর।