সম্মানরক্ষায় বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন। শত্রুর সঙ্গে সম্মানজনক সমঝোতা। বাড়ি ঘর বাহন কেনার যোগ। কর্মে সংস্থাগত ... বিশদ
২০১১ সালে বাংলায় পালাবদলের সময়েও মঙ্গলকোটে নিজের গড় ধরে রেখেছিল সিপিএম। সেবার তৃণমূল প্রার্থী করেছিল অপূর্ব চৌধুরীকে। পরিবর্তনের হওয়াতেও তাঁর তীরে তরী ডুবে যায়। মাত্র ১২৬ ভোটে হেরে যান। এরপর ২০১৬ সালে ভোটের কিছুদিন আগে জানতে পারেন মঙ্গলকোট থেকে তৃণমূলের প্রার্থী হচ্ছেন না তিনি। ওই আসনে প্রার্থী হন সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। কিন্তু ২০২১ সালে ফের অচলের উপরেই আস্থা রাখে তৃণমূল। দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কাটোয়ার সভায় এসে বলেছিলেন, ‘অপূর্ব এবার তোকে জিততে হবে।’ রবিবার বিকেলের পরই তাঁর জয় নিশ্চিত হয়ে যায়।
গণনা কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে অপূর্ববাবু বলেন, দিদির ওই কথাটিই আমার সারাক্ষণ কানে বাজছিল। মনে মনে টেনশনও ছিল, যদি দিদির আস্থা অর্জন করতে না পারি। তবে, আমি প্রথম থেকেই জয়ের বিষয়ে আশাবাদী ছিলাম। কারণ বিজেপি যেভাবে আমাদের বিরুদ্ধে কুৎসা ও অপপ্রচার করেছিল, মঙ্গলকোটের মানুষ তার যোগ্য জবাব দিয়েছেন।
ভোটগণনা শুরু হতেই বেশ কয়েক রাউন্ড পিছিয়ে ছিলেন অপূর্ববাবু। তারপর বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর লিড বাড়তে থাকে। মঙ্গলকোটের ৪৯ শতাংশের বেশি মানুষ তৃণমূলের উপরে আস্থা রাখেন। সেই জায়গায় বিজেপি এই কেন্দ্র থেকে ৩৯ শতাংশ ভোট পেয়েছে। সংযুক্ত মোর্চার সিপিএম মনোনীত প্রার্থী শাহজাহান চৌধুরী মাত্র ৭ শতাংশ ভোট পেয়ে পর্যুদস্ত হন।
পরাজিত বিজেপি প্রার্থী রানাপ্রতাপ গোস্বামী বলেন, মানুষ যাঁকে ভালো বুঝেছেন, তাঁকেই ভোট দিয়েছেন। এই রায় আমরা মাথা পেতে নিলাম।
অন্যদিকে এবার কেতুগ্রামে জয়ের হ্যাটট্রিক করলেন তৃণমূল প্রার্থী শেখ শাহনওয়াজ। তিনি ১২ হাজার ৬৮৩ ভোটে বিজেপি প্রার্থীকে পরাজিত করেন। এই নিয়ে টানা তিনবার জয়ী হলেন কেতুগ্রামের ‘ভাইজান’। এই কেন্দ্রেও তৃণমূলের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছিল বিজেপির। যদিও শেষ হাসি হাসে সবুজ শিবির।
ভোট গণনার প্রথম থেকেই চাপা টেনশনের মধ্যে ছিলেন তৃণমূল প্রার্থী। যদিও বিকেলের পর তাঁরও জয় সুনিশ্চিত হওয়ার আভাস পাওয়া যায়। তারপর গণনা কেন্দ্রের মধ্যেই সন্ধ্যার দিকে ইফতার সারেন তিনি। জয়ের খবর পেয়েই তাঁর মুখে হাসি ফুটে ওঠে। শেখ শাহনওয়াজ বলেন, কেতুগ্রামের মানুষ আমাকে ফের কাজের সুযোগ করে দেওয়ায় আমি কৃতজ্ঞ।
এই কেন্দ্রে শাসক দল ভোট পেয়েছে ৪৬ শতাংশের বেশি। বিজেপি প্রার্থী অনাদি ঘোষ ওরফে মথুরা ভোট পেয়েছেন ৪০ শতাংশের একটু বেশি। পাশাপাশি এই কেন্দ্র থেকে সংযুক্ত মোর্চার সিপিএম প্রার্থী মিজানুর কবীর ভোট পেয়েছেন মাত্র ৯ শতাংশ। তিনি খলিপুর গ্রামে নিজের বুথেও পরাজিত হয়েছেন। একদা বামেদের গড় কেতুগ্রামে কার্যত ধরাশায়ী হয়ে গেল সিপিএম।