সম্মানরক্ষায় বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন। শত্রুর সঙ্গে সম্মানজনক সমঝোতা। বাড়ি ঘর বাহন কেনার যোগ। কর্মে সংস্থাগত ... বিশদ
মহিষাদল বিধানসভায় বিজেপি না তৃণমূল কে জিতবে তা নিয়ে গণনার শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ছিল টানটান উত্তেজনা। ভোট গণনা শুরু হতেই প্রথম রাউন্ডে তৃণমূল ১৫৬ ভোটে পিছিয়ে পড়ায় উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে গেরুয়াশিবির। পর পর দু’রাউন্ড পিছিয়ে থেকে তারপর এগতে শুরু করেন তিলকবাবু। দশম রাউন্ডে গিয়ে বিজেপির প্রার্থী বিশ্বনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর ব্যবধান কমে দাঁড়ায় মাত্র ২৪২ ভোটের। উত্তেজনার পারদ চড়তে থাকে। তেরোতম রাউন্ডে বিজেপি সাড়ে পাঁচশো ভোটে এগিয়ে যেতেই চাপে পড়েন তিলকবাবু। শেষ হাসি অবশ্য হাসেন তিনিই। তিলকবাবু পেয়েছেন ১ লক্ষ ৭৬৮ ভোট অর্থাৎ ৪৬.৪৩ শতাংশ ভোট এবং বিশ্বনাথবাবু পেয়েছেন ৯৮ হাজার ৬৩৫ ভোট অর্থাৎ ৪৫.৪৪ শতাংশ ভোট। সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী বিক্রম চট্টোপাধ্যায় পেয়েছেন ১৩ হাজার ৬৬৫ ভোট অর্থাৎ ৬ শতাংশ ভোট।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, মহিষাদলে লোকসভা নির্বাচনের সময় বামের ১৮-২০ শতাংশ ভোট পদ্মশিবিরে চলে যাওয়ায় বিজেপির পালে হাওয়া লাগে। গ্রামেগঞ্জে সর্বত্র তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বিজেপির প্রতি প্রবল ঝোঁক মাথাব্যথার কারণ ছিল তৃণমূলের কাছে। পঞ্চায়েতে নানা দুর্নীতি, স্বজনপোষণ, উমপুনের ক্ষতিপূরণ নিয়ে অসন্তোষও ভোটের ইস্যু হয়ে উঠেছিল মহিষাদলে। অন্যদিকে, তৃণমূলের ইস্যু ছিল দুয়ারে সরকারের মতো পঞ্চাশ দফা উন্নয়নের ফিরিস্তি। নির্বাচন শেষে জয় নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপি দু’পক্ষই ছিল আশাবাদী। সামান্য ভোটের ব্যবধানে যে জয় পরাজয়ের ফয়সলা হবে তা আগেই বুঝেছিলেন দু’দলের সমর্থকরা। তৃণমূল জয়ী হলেও বিধানসভার মোট ১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৮টি পঞ্চায়েতে লিড পেয়েছে বিজেপি এবং তৃণমূল ৭টিতে। বিজেপি সবচেয়ে বেশি ১৪৬৫ ভোটের লিড পেয়েছে নাটশাল ১ পঞ্চায়েতে। অন্যদিকে, তৃণমূল প্রার্থী তিলকবাবু তাঁর নিজের পঞ্চায়েত কিসমৎ নাইকুণ্ডি এলাকায় সবচেয়ে বেশি ২৫১৬ ভোটের লিড পেয়ে জয় ছিনিয়ে নিতে পেরেছেন বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা। কোভিড বিধির কারণে জয়ের উচ্ছ্বাসে জমায়েতে বাধা থাকলেও কর্মী সমর্থকদের আবেগ থামিয়ে রাখা যায়নি। সোমবার সকালবেলা তাঁরা অভিনন্দন জানাতে হাজির হন প্রার্থীর বাড়িতে। তারপর সেখান থেকে দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে সবুজ আবির ও ফুল দিয়ে তৃণমূল প্রার্থীকে অভিনন্দন জানান সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীরা। তবে আবেগে না ভেসে কোভিড যুদ্ধের কঠিন সময়ে মানুষের পাশে থাকার বার্তা দেন তিলকবাবু। তবে তৃণমূল ভবনে মিটিং থাকায় এদিন সকাল সকাল তিনি আলুসেদ্ধ, ডাল, ভাত খেয়েই রওনা দেন কলকাতায়। এদিকে, মহিষাদলে বিজেপির বিধানসভার নির্বাচনী কার্যালয় ও অফিস সকাল থেকেই শুনশান। বেলার দিকে এক নেতা এসে অফিস খুললেও কারও দেখা মেলেনি। মহিষাদলের বিজেপি নেতা তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মহিষাদলে জয়ের ব্যাপারে তাঁরা নিশ্চিত ছিলেন। তবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে। কেন পরাজয় ঘটল তা নিয়ে পর্যালোচনা করা হবে। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, মহিষাদলে বিজেপির আদি ও নব্যর লড়াই প্রভাব ফেলেছে ভোট বাক্সে।