কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। উপার্জন ভাগ্য ভালো। কর্মে উন্নতির যোগ আছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা মিলবে। ব্যবসা ... বিশদ
খড়গ্রাম বিধানসভা এলাকা কান্দি মহকুমার অন্তর্গত হলেও, জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে। খড়গ্রাম ব্লকের ১২টি পঞ্চায়েত ছাড়াও বড়ঞা ব্লকের দু’টি পঞ্চায়েতও ওই লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে। এই বিধানসভা কেন্দ্রে প্রায় ২ লক্ষ ২২ হাজার ভোটার রয়েছেন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে এলাকার সবকটি পঞ্চায়েত, খড়গ্রাম পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদের আসনগুলি তৃণমূলের দখলে চলে এসেছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর খড়গ্রামের বিধায়ক কংগ্রেসের আশিস মার্জিত তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। আশিসবাবু ২০১৬-এর বিধানসভা নির্বাচনে ৫৪.৯৩ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন। তৃণমূল প্রার্থী মাধব মার্জিত পেয়েছিলেন ৩৪.৪৪ শতাংশ ভোট। মোট ৩৩ হাজার ১৭৩ ভোটের ব্যবধানে আশিসবাবু জয়ী হয়েছিলেন।
বিধানসভা নির্বাচনের পর সেখানে কংগ্রেসের শক্তি কমেছে। কারণ, কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি থেকে বিধায়ক, পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধি থেকে সাধারণ বহু কর্মী তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। যার ফলে ওই বিধানসভা এলাকায় গত দু’বছরে কংগ্রেসের কোনও বড় সভা কিংবা বড় মিছিল দেখা যায়নি। কংগ্রেসের মতো সিপিএম থেকেও ওই এলাকায় তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন অনেকে। যার ফলে তৃণমূলের ওই এলাকায় শক্তি বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
বহরমপুর কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণার পর অনেকটা সিপিএমের আদলে কর্মী বৈঠক করছে তৃণমূল। নির্বাচনী সভা, পথসভা, এমনকী প্রার্থীর রোড-শো তো চলছেই। বামেদের আদলে সন্ধ্যায় কর্মী বৈঠক শুরু করে বিরোধীদের টেক্কা দেওয়ার ছক কষেছে রাজ্যের শাসকদল।
ব্লক তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ২০দিন ধরে এলাকার প্রতিটি গ্রামে সন্ধ্যায় কর্মী বৈঠক করা হচ্ছে। সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা থেকে ঘণ্টা দুয়েক ধরে বৈঠক চলছে। সেখানে আলোচনায় উঠে আসছে এলাকার সমস্যা ও সমাধানের রাস্তা। উন্নয়নের খতিয়ান যাচাই করা হচ্ছে। গ্রামে কোনও উন্নয়নমূলক কাজের প্রয়োজন রয়েছে কি না, থাকলে তা ভোটের পরে করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে। এমনকী, এলাকার বিভিন্ন পরিবারে সাংসারিক অশান্তির বিষয়ও ওই কর্মী বৈঠকে উঠে আসছে। তবে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে লোকসভা ভোট নিয়ে। কোন বাড়ির ভোটার কোন দলের দিকে ঝুঁকে রয়েছেন, থাকলে কী কারণ হতে পারে, তাঁদের ম্যানেজ করার জন্য কী প্রয়োজন প্রভৃতি আলোচনা করা হচ্ছে।
ওই সব বৈঠকে কোথাও ১০ জন হাজির হচ্ছেন তো কোথাও আবার ৫০ জনকেও দেখা যাচ্ছে। বৈঠকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন দলের যুব নেতৃত্ব থেকে মাদার কমিটির সদস্যরা। শাশ্বত মুখোপাধ্যায়, জ্যোর্তিময় মণ্ডল, সুপ্রিয় ঘোষ, গোকুল ঘোষের মতো যুব নেতৃত্ব প্রতিদিন ওই এলাকার কোনও না কোনও গ্রামে গিয়ে বৈঠক করছেন।
শাশ্বতবাবু বলেন, সিপিএমের থেকে আমাদের কৌশল অনেকটাই আলাদা। ওরা শুধু ভোট নিয়ে আলোচনা করে। আমরা বৈঠকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি মানুষের সমস্যার উপর।
খড়গ্রাম ব্লক তৃণমূল সভাপতি মফিজউদ্দিন মণ্ডল বলেন, দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করতে প্রতি সন্ধ্যায় কর্মী বৈঠক করা হচ্ছে। ভোটের পর পরিসংখ্যান দেখে নেবেন। তৃণমূলের ধারে কাছে থাকবে না বিরোধী দলগুলি।
যদিও এ ব্যাপারে কংগ্রেসের কান্দি মহকুমা সভাপতি সফিউল আলম খান বলেন, গত একমাস ধরে তৃণমূল সেখানে সভা-বৈঠক শুরু করেছে শুধু ভোটের জন্য। এর আগে ওই এলাকার তৃণমৃল নেতাদের দেখাই যেত না। এলাকার মানুষ এটা খুব ভালো করে বোঝেন। এলাকার ভোটাররা ইভিএমে ওদের যোগ্য জবাব দেবেন। তখন তৃণমূলের সব হিসেব বদলে যাবে।