সম্মানরক্ষায় বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন। শত্রুর সঙ্গে সম্মানজনক সমঝোতা। বাড়ি ঘর বাহন কেনার যোগ। কর্মে সংস্থাগত ... বিশদ
এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে মালদহ জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী মৌসম নুর বলেন, দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের ভালো ফল করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। আমরা সেইমতো কাজ করেছি। জেলা থেকে আটজন বিধানসভায় যাচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ মন্ত্রিত্ব পেতে পারেন বলে আশা করছি। তবে এ ব্যাপারে দলনেত্রী সিদ্ধান্ত নেবেন। তাঁর সিদ্ধান্ত বিধায়ক সহ সকলেই মেনে নেবেন। উল্লেখ্য, ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদল হয়। ওইসময় জেলায় তৃণমূলের ভালো সংগঠন ছিল। তা সত্ত্বেও একটি আসনেই দল জিতেছিল। ২০১৩ সালের উপনির্বাচনে কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী জেতায় তৃণমূলের আসন সংখ্যা বাড়ে। জেলা থেকে কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী, সাবিত্রী মিত্র মন্ত্রিসভায় জায়গা পান। সেবার কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে তৃণমূল ভোটে লড়েছিল। জোটসঙ্গী কংগ্রেস থেকে সাবিনা ইয়াসমিন মন্ত্রী হন। এবার সাবিনা মোথাবাড়ি আসন থেকে তৃণমূলের টিকিটে জয়লাভ করেছেন। ২০১৬ সালে জেলায় তৃণমূলের কোনও প্রার্থীই জয়ের মুখ দেখেননি। ফলে সেবার জেলা থেকে কেউ মন্ত্রিত্বও পাননি। এবার মালদহ তৃণমূলকে কার্যত ঢেলে ভোট দিয়েছে। ১২টি আসনের মধ্যে ঘাসফুল শিবির আটটিতে জয় পেয়েছে। ভালো ফলের সঙ্গে সঙ্গেই অনেকে মন্ত্রী নিয়ে আশার আলো দেখছেন। নীহাররঞ্জন ঘোষ, আব্দুল গনি, সাবিনা ইয়াসমিন এবং সাবিত্রী মিত্রের নাম এ ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে।
রাজনৈতিক মহলের মতে, যেকোনও সরকারেই কলকাতা ও আশপাশের জেলাগুলি থেকেই বেশি বিধায়ক মন্ত্রিসভায় জায়গা পান। তবে জেলায় জেলায় দু-একজন করে মন্ত্রিত্ব পেয়ে থাকেন। যে জেলায় শাসক দল যত ভালো ফল করে, সেখান থেকে তত বেশি বিধায়ক মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পান। সাধারণত প্রান্তিক জেলাগুলি থেকে পূর্ণমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ একজনই পান। কোনও কোনও জেলা পূর্ণমন্ত্রী না পেলেও দুই বা ততোধিক রাষ্ট্রমন্ত্রী পেয়ে থাকে। তবে সবকিছুই সংশ্লিষ্ট জেলায় শাসক দলের ফলাফলের উপর নির্ভর করে। সেক্ষেত্রে এবার মালদহের সম্ভাবনা প্রবল। কারণ, তৃণমূল জন্মলগ্ন থেকে মালদহে এত ভালো ফল কোনওদিন করেনি। ২০১৬ সালের বিধানসভা এবং ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে জেলায় ঘাসফুল শিবির খাতা খুলতে পারেনি। তৃণমূল সুপ্রিমো জেলা সফরে এসে বিষয়টি নিয়ে বারবার আক্ষেপ করেছিলেন। কী কারণে জেলাবাসী তৃণমূলের উপর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন তা জনসভা থেকে মমতা জানতেও চেয়েছিলেন। এবারের নির্বাচনে অন্তত মালদহবাসী তৃণমূলকে যাতে আশীর্বাদ করেন, সেব্যাপারে দলনেত্রী আবেদন জানান। মাস দু’য়েক আগে মিশন ময়দানের দলীয় সভা থেকে তিনি এ ব্যাপারে জেলাবাসীর প্রতিশ্রুতি আদায় করে নিয়েছিলেন। মালদহবাসী কথা রেখেছেন। এবারের তৃণমূল সরকারে মালদহ থেকে কতজন মন্ত্রী হন, তা নিয়েই শুরু হয়েছে জল্পনা।
জেলা তৃণমূলের এক নেতা বলেন, গত পাঁচ বছর পাশের জেলা মুর্শিদাবাদ এবং দুই দিনাজপুর থেকে বিধায়করা মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেয়েছিলেন। কিন্তু আমাদের জেলা মন্ত্রীহীন অবস্থায় কাটিয়েছে। গত বিধানসভা নির্বাচনে জেলা থেকে কোনও তৃণমূল প্রার্থীই জয় পাননি। পরে অবশ্য বাম-কংগ্রেসের কয়েকজন বিধায়ক আমাদের দলে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা কেউ মন্ত্রিসভায় ছিলেন না। মন্ত্রী না থাকার জন্য অবশ্য আমাদের জেলায় উন্নয়ন থেমে থাকেনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে জেলায় সেতু, রাস্তাঘাট সহ অন্যান্য পরিকাঠামোগত উন্নয়ন ঝড়ের গতিতে হয়েছে। তবে মন্ত্রিসভায় জেলার কোনও প্রতিনিধি থাকলে অনেক সুবিধা হয়। যে কোনও বিষয় নিয়ে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা যেতে পারে। তিনি অন্যান্য দপ্তরের মন্ত্রীদের কাছেও বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে তদ্বির করতে পারেন। যা একজন সাধারণ বিধায়ক বা জেলা নেতার পক্ষে সবসময় সম্ভব হয় না।