মানস মহন্ত  শিলিগুড়ি, বিএনএ, শিলিগুড়ি: শিলিগুড়িতে গাড়ির পলিউশন চেক করাতে যানবাহন মালিকদের ব্যাপক হ্যাপা পোহাতে হচ্ছে। সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী পলিউশন সেন্টারগুলিতে এখন অনলাইনে যানবাহনের দূষণ পরীক্ষা শুরু হয়েছে। তাই যাঁদের গাড়ির তথ্য মোটরযান দপ্তরে ঠিকঠাক নথিভুক্ত নেই তাঁরাই সমস্যায় পড়ছেন। শিলিগুড়ি আঞ্চলিক পরিবহণ দপ্তরের (এআরটিও) অধীনে এমন গাড়ির সংখ্যা দু’লক্ষাধিক। সংশ্লিষ্ট গাড়িগুলির পলিউশন টেস্ট এখন বন্ধ আছে। মোটরযান দপ্তর ওসব যানের মালিকদের কাছ থেকে গাড়ির প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ শুরু করেছে। একে আরটিও দপ্তর বলছে, কেওয়াইসি। সকাল থেকে এআরটিও অফিসে কেওয়াইসি জমা দিতে লাইন পড়ছে। দপ্তর একজন কর্মীকে ওসব অবেদন জমা নিতে বসিয়ে রেখেছে। তবে কবে ডেটা এন্ট্রি হবে এবং গাড়ির পলিউশন টেস্ট করা যাবে সেটা অবশ্য অনিশ্চিত। পুলিসের ধরপাকড়ের ভয়ে অনেকেই গাড়ি চালাতে ভয় পাচ্ছেন। এদিকে অভিযোগ উঠেছে, দ্রুত কাজ করে দেওয়ার নামে একাংশ পলিউশন সেন্টার ৬০০ টাকা নিয়ে ১০ দিনের গ্যারান্টি দিয়ে গোটা কাজটি করিয়ে আনছে।
এআরটিও নবীন অধিকারী বলেন, ই-বাহনে গাড়ির সমস্ত ডেটা নথিভুক্ত থাকা বাধ্যতামূলক হয়েছে। তাই ২০১৭ সালে অনলাইন প্রক্রিয়া চালু হওয়ার আগে বিক্রি গাড়ির ক্ষেত্রে নতুন কিছু তথ্য আপলোড করার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। আমরা কেওয়াইসি নিচ্ছি। ওসবই আপলোড চলছে। আমাদের কর্মীদের দপ্তরের অন্য কাজের পাশাপাশি একাজটিও করতে হচ্ছে। গোটা প্রক্রিয়াটি সময় সাপেক্ষ ব্যাপার।
শিলিগুড়ি এআরটিও দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৭ সাল থেকে দপ্তরের সমস্ত কাজ অনলাইনে শুরু হয়েছে। ওই সময়ের আগে পর্যন্ত কিছু গাড়ির ডেটা সংরক্ষিত হয়নি। অনলাইন সিস্টেম চালু হওয়ার পর শোরুম থেকে বিক্রি হওয়া গাড়ি, গাড়ির মালিক সহ অন্যান্য আনুষাঙ্গিক তথ্য সংগ্রহ শুরু হয়েছে। কিন্তু তার আগে কিছু ডেটা তখন সংগ্রহের প্রয়োজন ছিল না। ওসব ডেটাই পরিবহণ দপ্তর এখন সরাসরি সংশ্লিষ্ট গাড়ির মালিকের কাছ থেকে নিচ্ছে। অতিরিক্ত ডেটা প্রয়োজন এমন গাড়ির সংখ্যা দু’লক্ষেরও বেশি। সিস্টেমে ডেটা আপডেট না থাকা মোটর বাইক, স্কুটার, ছোট গাড়ি সহ সমস্ত ধরনের যানবাহন চালকরা বিপাকে পড়ছেন।
এখন এআরটিও অফিসে গাড়ির রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট সহ আবেদন করতে হচ্ছে। তারসঙ্গে আগের পলিউশন সার্টিফিকেট, ইন্সুরেন্স সার্টিফিকেটের ফটোকপিও দিতে হচ্ছে। পাশাপাশি মোবাইল ফোন নম্বর বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। দপ্তরের একটি নির্দিষ্ট জায়গায় খাতা রাখা হয়েছে। সেখানে যিনি আবেদন করছেন তাঁর নাম, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বর, ফোন নম্বর লেখার পাশপাশি কাগজগুলি জমা দিয়ে রিসিভ করিয়ে নিতে হচ্ছে। যেজন্য লম্বা লাইন পড়ছে। কাছারি রোডের একাধিক সাইবার ক্যাফেতে ২০ টাকার বিনিময়ে মিলছে আবেদন করার জন্য বয়ান।
লাইনে দাঁড়িয়ে কাগজপত্র জমা দিতে হ্যাপার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একাংশ পলিউশন সেন্টার মোটা টাকার বিনিময়ে কাগজপত্র নিয়ে তা করিয়ে আনছে।
নর্থবেঙ্গল পলিউশন টেস্টিং সেন্টার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কমল দত্ত বলেন, ২০০৪ থেকে কমিশন বৃদ্ধি হয়নি। মানবিক আবেদন জানিয়েই দু’চাকার বাহনের ক্ষেত্রে সরকারি রেট ৮০ টাকা সহ অতিরিক্ত ২০ টাকা এবং অন্যান্য গাড়ির ক্ষেত্রে ১০০ টাকা ছাড়াও অতিরিক্ত ৫০ টাকা চাইছি। তবে কেউ পলিউশনের কাগজপত্র নিয়ে এআরটিও অফিস থেকে কাজ করিয়ে আনে সেটা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার। এরসঙ্গে সংগঠনের যোগ নেই।