সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: হাউজিং ফর অল প্রকল্পে আলিপুরদুয়ার পুরসভার ২০টি ওয়ার্ডে ১৯০০ ঘর বিতরণে দলবাজির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে বিরোধীরা। পুরসভা তিনটি পর্যায়ে গরিব বাসিন্দাদের ঘর দিচ্ছে। ইতিমধ্যেই প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছে। এখন তৃতীয় পর্যায়ে ১৯০০ ঘর দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। বিরোধীদের অভিযোগ, এই ঘর বিতরণ সঠিকভাবে হয়নি। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বোর্ড ঘর বিতরণে দলবাজি করেছে। পাশাপাশি এই ঘর বিতরণে গরিব মানুষের ওয়ার্ডগুলিকেও অগ্রাধিকার দেওয়া হয়নি। অন্যদিকে, এই প্রকল্পে দ্বিতীয় পর্যায়ে আসা ১০০০টি ঘরের নির্মাণ কাজ অত্যন্ত ঢিমেতালে চলছে বলেও উপভোক্তাদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। যদিও পুরসভার বিদায়ী বোর্ড বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। পুরসভার হাউস ফর অল প্রকল্পের ইনচার্জ জয়দীপ সেনগুপ্ত বলেন, বিরোধী কাউন্সিলাররা আমার কাছেও এনিয়ে অভিযোগ করেছেন। তৃতীয় পর্যায়ে আসা ঘরের জন্য উপভোক্তা নির্বাচনের কাজ এখনও শেষ হয়নি। এই প্রক্রিয়া এখনও চলছে। বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে। পুরসভার পূর্বতন বোর্ডের চেয়ারম্যান তৃণমূল কংগ্রেসের আশিস দত্ত বলেন, বিরোধীদের অভিযোগ ঠিক নয়। দ্বিতীয় পর্যায়ের ঘর বিতরণের সময় প্রতিটি ওয়ার্ডে ৫০টি করে ঘর দেওয়া হয়েছে। ২০১৫-১৬ আর্থিক বছরে আলিপুরদুয়ার পুরসভা প্রথম পর্যায়ে এই প্রকল্পে ৪০০টি ঘর পেয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০১৭-১৮ আর্থিক বছরে পুরসভা এই প্রকল্পে আরও ১০০০টি ঘর পায়। দ্বিতীয় পর্যায়ের ঘরের নির্মাণ কাজের ৫০ শতাংশ কাজ এখনও বাকি। গত অক্টোবরে এই প্রকল্পে তৃতীয় পর্যায়ে আরও ১৯০০টি ঘরের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের অ্যাপ্রুভাল পেয়েছে। কিন্তু কিছু কাজ বাকি থাকায় রাজ্যের অ্যাপ্রুভাল এখনও আসেনি। এই তৃতীয় পর্যায়ের ঘর বণ্টনেই স্বজনপোষণ ও অসম বণ্টনের অভিযোগ উঠেছে। গত বছরের ২১ অক্টোবর পুরসভার তৃণমূল পরিচালিত বোর্ডের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই হাউসিং ফর অল প্রকল্পে তৃতীয় পর্যায়ে এই ঘরের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন পায় পুরসভা। সময়ে ভোট না হওয়ায় পরের দিন ২২ অক্টোবর থেকে পুরসভায় প্রশাসক বসে।
পুরসভার বিরোধী দলনেতা সিপিএমের অনিন্দ্য ভৌমিক বলেন, তৃতীয় পর্যায়ে আসা ঘরের ক্ষেত্রে দলবাজি করেছে বিদায়ী বোর্ড। ২০টি ওয়ার্ডে ১০০টি করে ঘর পাওয়ার কথা। কিন্তু সেখানে বিরোধীদের ওয়ার্ডে মাত্র ৫৫টি করে ঘর দেওয়া হয়েছে। পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার সিপিআইয়ের সুভাষ কর চৌধুরী বলেন, পুরসভার ৩, ৪, ৮, ৯, ১১ এবং ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে গরিব মানুষের সংখ্যা বেশি।
প্রসঙ্গত, হাউস ফর অল প্রকল্পে প্রতিটি ঘরের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ৩ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা। এরমধ্যে একজন উপভোক্তাকে ২৫ হাজার টাকা দিতে হয়। কেন্দ্রীয় সরকার দেয় ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। বাকি টাকা দেয় রাজ্য সরকার।