আগরতলা: নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে পশ্চিম ত্রিপুরার জেলাশাসকের পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন শৈলেশকুমার যাদব। গত ২৬ এপ্রিল করোনা বিধি পালনের কথা মনে করিয়ে দিতে রাতবিরেতে আগরতলার দু’টি বিয়েবাড়িতে অভিযান চালিয়েছিলেন তিনি। এর মধ্যে একটি বিয়েবাড়ি আবার ছিল টিপ্রা চেয়ারম্যান প্রদ্যোৎ দেববর্মার। রাত ১০টার পর থেকে নাইট কার্ফু জারি হওয়া সত্ত্বেও কেন অনুষ্ঠান চলছে, এই প্রশ্ন তুলে পাত্রপক্ষের সঙ্গে একটু কড়া আচরণই করে ফেলেছিলেন তিনি। উপস্থিত ব্যক্তিরা জেলাশাসককে সরকারি অনুমতিপত্র দেখালে তিনি তা ছিঁড়ে ফেলেন। তাঁর রোষ থেকে বাদ যাননি সেখানে উপস্থিত পুরোহিতও। সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়। জেলাশাসকের আচরণের পক্ষে ও বিপক্ষে মতামতের বন্যা বয়ে যায় নেটদুনিয়ায়। সংক্রমণ রুখতে জেলাশাসকের কড়া পদক্ষেপকে অনেকেই সাধুবাদ জানান। উল্টোদিকে সোনু নিগম, বিভিন্ন মানবাধিকার ও সামাজিক সংগঠন এবং বৈদিক ব্রাহ্মণ সমাজ সহ বহু মানুষ জেলাশাসকের ভূমিকার তীব্র নিন্দা করে তাঁকে সাসপেন্ড করার দাবি করেন। তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার দাবিতে সরব হন ত্রিপুরা পশ্চিমের বিজেপি সাংসদ প্রতিমা ভৌমিক সহ বেশ কয়েকজন বিধায়ক। বেশ এরপরই বিষয়টিতে রিপোর্ট চেয়ে পাঠান মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। গত সপ্তাহে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটির সামনে হাজির হয়েছিলেন শৈলেশ। ঘটনার পরের দিনই অবশ্য তাঁর কৃতকর্মের জন্য সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন ওই ‘দাবাং’ জেলাশাসক। একইসঙ্গে শৈলেশকুমার বলেছিলেন, কাউকে আঘাত বা অবমাননা করার জন্য তিনি ওই কাজ করেননি। মানুষের ভালোর জন্যই তিনি ওই কাজ করেছেন।
এদিন রাজ্যের আইনমন্ত্রী রতনলাল নাথ জানান, নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে নিজেই চিঠি লিখে পদ থেকে অব্যহতি চেয়েছিলেন শৈলেশকুমার। তাই যতদিন না তদন্ত শেষ হচ্ছে, ততদিন তাঁকে জেলাশাসকের পদ থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে। তাঁর জায়গায় পশ্চিম ত্রিপুরার জেলাশাসকের দায়িত্ব সামলাবেন রাভেল হেমেন্দ্র কুমার।