নয়াদিল্লি, ২৪ মে: করোনা মোকাবিলায় লকডাউন একটি সামাজিক টিকা। অন্তত এমনটাই মনে করেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন। কিন্তু তা সত্ত্বেও রাশ টানা যাচ্ছে না সংক্রমণে। নতুন আক্রান্তের সংখ্যায় রেকর্ড ভাঙছে প্রতিদিন। গত এক সপ্তাহের কথা বাদ দিলেও, তিনদিনে রোজ ৬ হাজারের বেশি মানুষ সংক্রমণের শিকার হয়েছেন। রবিবার ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৬ হাজার ৭৬৭। যা এখনও পর্যন্ত সর্বাধিক। গতকালের চেয়ে ১১৩ জন বেশি। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের হিসেবে এদিন সকাল পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ১ লক্ষ ৩১ হাজার ৮৬৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ১৪৭ জনের। দেশে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার ৮৬৭ জন। তবে আশার খবর, মোট ৫৪ হাজার ৪৪০ জন করোনার সঙ্গে লড়াই করে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। অর্থাৎ সক্রিয় আক্রান্ত ৭৩ হাজার ৫৬০ জন। সুস্থতার হার ৪১.২৮ শতাংশ। কিন্তু এই পরিসংখ্যান সকাল ৮টার। বিকেলে রাজ্য সরকারগুলি থেকে পাওয়া রিপোর্টে দেশে আরও হাজার পাঁচেক সংক্রামিত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। মহারাষ্ট্র সরকারের বিকেলের হিসেব হল, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ৪১ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। যা সেই রাজ্যে এখনও পর্যন্ত একদিনে সবচেয়ে বেশি। এর ফলে সেখানে আক্রান্ত সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫০ হাজার ২৩১। শুধু মুম্বইতেই আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে ৩০ হাজারের কাছাকাছি। একদিনে ৫৮ জনের মৃত্যু হয়েছে সে রাজ্যে। মোট মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৬৩৫। রাজ্য সরকারের হিসেবে দিল্লিও এদিন সংক্রামিতের সংখ্যায় সাড়ে ১৩ হাজারের কাছাকাছি পৌঁছেছে। সেখানে মৃতের সংখ্যা মোট ২৬১ জন। তবে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের ওয়েবসাইটে এই হিসেব এখনও তোলা হয়নি। এদিকে, সিকিমে এতদিন পর এই প্রথম করোনা রোগীর খোঁজ মিলেছে। মন্ত্রকের হিসেবে মহারাষ্ট্রের পরে রয়েছে তামিলনাড়ু। এই রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে ১৫ হাজার ছাড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ১০৩ জনের। গুজরাতে আক্রান্ত ১৩ হাজার ৬৬৪ এবং মারা গিয়েছেন ৮২৯ জন। পরিসংখ্যান বলছে, ভারতের মোট করোনা আক্রান্তের ৬৭ শতাংশ রয়েছে মহারাষ্ট্র, গুজরাত, তামিলনাড়ু এবং দিল্লি—এই চার রাজ্যে। সংক্রামিত বাড়ার প্রধান কারণ হিসেবে টেস্টের সংখ্যা বৃদ্ধির কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। এদিন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধনও জানিয়েছেন, সঠিক সময়েই সারা দেশে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল। তাই করোনা সংক্রমণ ঠেকানোর পরিকল্পনায় আশাজনক ফল পাওয়া যাচ্ছে। গত ২৫ মার্চ লকডাউন ঘোষণার আগে সারা দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ার সময় ছিল ৩.৪ দিন। রবিবার যা ১৩ দিনে ঠেকেছে। তাঁর আরও দাবি, বিশ্বের অনেক দেশ এই সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করেছে। পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ার পর তারা লকডাউনের পথে হাঁটতে শুরু করে। অধিকাংশ দেশ আংশিক লকডাউন ঘোষণা কর। সামাজিক ভ্যাকসিন লকডাউনের পাশাপাশি করোনার চারটি সম্ভাব্য ভ্যাকসিন শীঘ্রই ট্রায়ালে যেতে চলেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
দিল্লিতে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেসের (এইমস) পালমোনলজি বিভাগের বর্ষীয়ান চিকিৎসক জিতেন্দ্রনাথ পাণ্ডের।