সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক, কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার বা ... বিশদ
শুধু কম সংখ্যায় বাস নামানোই নয়, কলকাতা এবং শহরতলির বেশ কিছু রুটের বেসরকারি বাসে যাত্রীদের থেকে নেওয়া হয়েছে বাড়তি ভাড়াও। কোনও কোনও রুটে আবার আসন সংখ্যার তুলনায় বেশি যাত্রী নেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে এদিন রাস্তায় নেমেছিলেন পরিবহণ দপ্তরের অফিসার ও কর্মীরা। এই ধরনের ঘটনা তাঁদেরও নজরে আসে। আগামীদিনে ফের এমন ঘটনা ঘটলে পারমিট বাতিলের হুঁশিয়ারি দিয়েছে দপ্তর। এক পরিবহণ কর্তার কথায়, ‘কলকাতা ও শহরতলিতে মোটর ভেহিকেলসের মোট ১০টি দল অভিযানে নেমেছিল। বেশি ভাড়া নেওয়া, অতিরিক্ত যাত্রী তোলার ঘটনা এদিন মহানগরীর বহু রুটেই সামনে এসেছে। কেউ কেউ আবার নিজেদের মতো ভাড়ার চার্ট তৈরি করে ফেলেছিলেন। কয়েকটি বাসে নতুন টিকিট ছাপিয়েও ভাড়া নিতেও দেখা গিয়েছে। ওই বাড়তি ভাড়া অবশ্য যাত্রীদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
বেসরকারি বাসের জ্বালার সঙ্গে জুড়েছে পরিবহণের অন্য সমস্যাও। কারণ, বৃহস্পতিবারও রাস্তায় পর্যাপ্ত সংখ্যায় নামেনি অটো এবং ট্যাক্সি। এদিন কলকাতায় অটো চলেছে ৭ হাজার ১০০টি। মিটার ট্যাক্সি চলেছে ৪ হাজার ৬০০টি। এদিনও গণপরিবহণ ব্যবস্থা সার্বিকভাবে ছন্দে না ফেরায় যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছতে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। বাসের জন্য বিভিন্ন স্টপে যাত্রীদের দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে দেখা গিয়েছে। তবে কলকাতা ও শহরতলিতে সরকারি বাসের সংখ্যা কিছুটা বাড়ায় খানিক সুবিধা হয়েছে যাত্রীদের।
কিন্তু কেন আশ্বাস সত্ত্বেও পর্যাপ্ত সংখ্যায় বেসরকারি বাস রাস্তায় নামল না? উত্তরে বাস মালিক সংগঠনগুলির নেতারা একাধিক যুক্তি দিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, প্রথমত দীর্ঘদিন বসিয়ে রাখার ফলে বেশ কিছু বাসে যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দিচ্ছে। এদিন রুটে নামা কিছু বাসের ক্ষেত্রেও এমন সমস্যা হয়েছে। কাজেই সংশ্লিষ্ট বাসগুলির রক্ষণাবেক্ষণ করানোটা জরুরি। দ্বিতীয়ত, লকডাউনের জন্য বাসকর্মীদের অনেকেই এখনও বাড়ি থেকে ফেরেননি। তাই মালিকরা চাইলেও সব বাস নামানো যাচ্ছে না। তৃতীয়ত, ভিনরাজ্য থেকে ট্রেনে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়িতে ফেরানোর জন্য কিছু বেসরকারি বাস ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব কারণের জন্য একদিনেই বাসের সংখ্যা খুব একটা বাড়ানো যায়নি বলে মত মালিকপক্ষের। তবে মালিকরা এদিন জানিয়েছেন, পর্যায়ক্রমে বেসরকারি বাসের সংখ্যা বাড়ছে। যেমন, গত বুধবার কলকাতায় ৩৪টি রুটে ৫৭০টি বাস চলেছিল। আর বৃহস্পতিবার ৮১টি রুটে এক হাজারেরও বেশি বাস চলেছে। আগামী দিনেও এই সংখ্যা বাড়তে থাকবে। পরিবহণ দপ্তর ভাড়া সংক্রান্ত ব্যাপারে পর্যালোচনার জন্য একটি কমিটি গড়ছে। তারা ভাড়া বাড়ালে বাসের সংখ্যাও বাড়বে।
কোনও কোনও নিত্যযাত্রী কিন্তু অভিযোগ করেছেন, রাজ্য সরকারকে চোখের দেখা দেখানোর জন্য কিছু বাস নামানো হয়েছে। আসলে লাভের গুড় নিশ্চিত করতে না পারলে বেসরকারি বাস বা মিনিবাস রাস্তায় নামবে না। যতদিন এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট কোনও পদক্ষেপ হচ্ছে, মানুষের দুর্ভোগ খুব একটা কমার আশা নেই। - নিজস্ব চিত্র