সম্মানরক্ষায় বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন। শত্রুর সঙ্গে সম্মানজনক সমঝোতা। বাড়ি ঘর বাহন কেনার যোগ। কর্মে সংস্থাগত ... বিশদ
কলকাতা ও সংযুক্ত কলকাতার ১৭টি বিধানসভা আসনে শুধুমাত্র জয়লাভ করেনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল, উপরন্তু বেড়েছে জয়ের মার্জিন। এর মধ্যে বামেদের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে যাদবপুর আসনটি। বাকি ১৬টি আসনের মধ্যে ১৫টিতেই বিপুল পরিমাণে বেড়েছে জয়ের মার্জিন। জয়ের ব্যবধান কমেছে একমাত্র মানিকতলা কেন্দ্রে। সেখানে সাধন পান্ডের মার্জিন সাড়ে চার হাজার কমেছে। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় বিভিন্ন কেন্দ্রে কোথাও দ্বিগুণ, কোথাও পাঁচগুণ পর্যন্ত বেড়েছে জয়ের ব্যবধান। ফল প্রকাশের পর এই তথ্যই সামনে এসেছে।
২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় বালিগঞ্জ কেন্দ্রে সুব্রত মুখোপাধ্যায় ৬০ হাজার ১৩৪টি ভোট বেশি পেয়ে জয়ের ব্যবধান বাড়িয়েছেন প্রায় চারগুণ। বেহালা পশ্চিম কেন্দ্রে ৪১ হাজার ৯৬৮টি ভোট বেশি পেয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মার্জিন বেড়েছে পাঁচগুণ। বেহালা পূর্ব কেন্দ্রে গতবারের তুলনায় এবার রত্না চট্টোপাধ্যায় ১২ হাজার ৪৪৪টি ভোট বেশি পেয়েছেন। ২০১৬ সালের চেয়ে ৪০ হাজার ৯৬১টি ভোট বেশি পেয়েছেন বেলেঘাটার তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী পরেশ পাল। ভবানীপুর কেন্দ্রেও ২০১৬ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা ভোট পেয়েছিলেন, তার থেকে ৩ হাজার ৪১৮টি ভোট বেশি পেয়েছেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। ৩০ হাজার ২৬৯টি ভোট বাড়িয়েছেন এন্টালির তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী স্বর্ণকমল সাহা। জোড়াসাঁকো কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের জয়ের ব্যবধান ৬ হাজার ৪৫৩। গতবারের প্রায় দ্বিগুণ। কসবা কেন্দ্রে আগেরবারের তুলনায় ৫১ হাজার ৭৩৮টি ভোট বেশি পেয়েছেন জাভেদ খান। কাশীপুর-বেলগাছিয়া কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী অতীন ঘোষ ২০১৬ সালের থেকে ৯ হাজার ৫৮০টি ভোট বেশি পেয়েছেন। ৪২ হাজার ৬টি ভোট বাড়তি পেয়ে কলকাতা বন্দর কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন ফিরহাদ হাকিম। শ্যামপুকুর কেন্দ্রে শশী পাঁজা গতবারের তুলনায় ৯ হাজার ৩৬৫টি ভোট বেশি পেয়েছেন। ৩২ হাজার ১২৮টি ভোট পেয়ে প্রায় আড়াই গুণ মার্জিন বাড়িয়েছেন চৌরঙ্গি কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে জোড়াসাঁকো, শ্যামপুকুর ও রাসবিহারী কেন্দ্রে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল কংগ্রেস। এবার রাসবিহারীতে ২১ হাজার ১৪১টি ভোট বেশি পেয়ে জয়ী হয়েছেন দেবাশিস কুমার। ৪০ হাজার ১৪৮টি ভোট বেশি পেয়ে সাড়ে চার গুণ মার্জিন বাড়িয়েছেন টালিগঞ্জের তৃণমূল প্রার্থী অরূপ বিশ্বাস। যাদবপুর আসনটি বামেদের থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। ওই আসনে এবার তৃণমূল প্রার্থী দেবব্রত মজুমদার সুজন চক্রবর্তীর থেকে প্রায় দ্বিগুণেরও বেশি ভোট পেয়ে জয়লাভ করেছেন। মেটিয়াবুরুজ কেন্দ্রেও বিপুল মার্জিন বেড়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের।
এতটা মার্জিন বৃদ্ধির কারণ হিসেবে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম মুখ ফিরহাদ হাকিম বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর মানুষের আস্থার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে এই নির্বাচনে। অন্যদিকে, অতীন ঘোষ মনে করেন, এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতি মানুষের বিশ্বাসের প্রতিফলন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক রাজা গোপালধর চক্রবর্তীর কথায়, এটা বিজেপির দুর্বল সাংগঠনিক কাঠামোর নিদর্শন। বাংলার মাটিতে মেরুকরণ খাটে না। এটা বিজেপি নেতৃত্ব বুঝতে পারেননি। বর্তমান রাজ্য সরকারের থেকে মানুষ নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা পেয়েছেন। গরিব এবং প্রান্তিক মানুষ, মহিলা ভোটার, সব ধর্মের মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঢেলে ভোট দিয়েছেন। কোথাও একটা বাংলাকে বাঁচানোর তাগিদ ছিল।