নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: হুগলিতে সমঝোতার সূত্র মেনে নতুন-পুরনো মিলিয়ে ব্লক ও টাউন কমিটি ঘোষণা করল তৃণমূল কংগ্রেস। গোষ্ঠীকোন্দলে জেরবার দলের হুগলি জেলা। ফলে কমিটি গঠন করার ক্ষেত্রে সমস্ত গোষ্ঠীকে তুষ্ট করার দায় ছিল নেতৃত্বের। তাই একগুচ্ছ নতুন মুখ আনা হয়েছে কমিটিতে। সূত্রের খবর, অন্তত ২০টি ব্লক ও টাউন কমিটির মাথায় নতুন মুখ বসানো হয়েছে। সহ সভাপতি, সম্পাদক, সাধারণ সম্পাদক পদে পুরনোদের পাশাপাশি নতুন মুখকে প্রধান্য দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দুপুরে কমিটি ঘোষণার সময় ‘বিদ্রোহে’র আশঙ্কা ছিল। সন্ধ্যার মুখে সেই প্রথম বিদ্রোহ দেখান সিঙ্গুরের প্রবীণ বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। ফলে ‘সমঝোতা’র কমিটি দিয়ে দলে গোষ্ঠীকোন্দল বাড়ল না কমল, সেই বিতর্ক অমীমাংসিত রয়ে গেল। নতুন কমিটিতে সিঙ্গুরের ব্লক সভাপতি মহাদেব দাস জায়গা পাননি। রবীন্দ্রনাথবাবুর ঘনিষ্ঠ এই নেতাকে জেলা কমিটিতে রাখা হয়েছে। এনিয়ে ক্ষুব্ধ রবীন্দ্রনাথবাবু সাংবাদিকদের বলেন, দলের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না হলে প্রয়োজনে দল পরিবর্তনের কথা ভাবতে হবে। সিঙ্গুর আন্দোলনের সৈনিকদের উপেক্ষা করা হচ্ছে। যাঁরা অন্যায় করেন না, তাঁদের গুরুত্বহীন করে দেওয়া হচ্ছে। এনিয়ে সাংসদ তথা রাজ্য নেতা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, দলের কাছে কিছু চাইলে তা দলের মধ্যেই বলতে হয়, সাংবাদিক বৈঠকে নয়। রবীন্দ্রনাথবাবু আমাদের শ্রদ্ধেয় নেতা। তবে মনে রাখতে সিঙ্গুর আন্দোলন অনেকেই করেছিলেন। যখন জমি ফেরানো নিয়ে দিনের পর দিন মামলা হয়েছে, একবারও খোঁজ নেননি রবীন্দ্রনাথবাবু। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন বলে সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম আন্দোলন হয়েছে। তিনি না থাকলে কেউ আজ এসবের কৃতিত্ব দাবি করতে পারতেন না।
রবিবার দুপুরে চুঁচুড়ায় দলের নতুন জেলা কমিটি, ব্লক ও টাউন কমিটি ঘোষণা করেন কল্যাণবাবু। দেখা যায়, অনেক দাপুটে নেতার ঘনিষ্ঠদের ব্লক সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আবার অনেককে স্বস্থানে রেখেও দেওয়া হয়েছে। তবে নেতৃত্ব চমক দিয়েছে যুব কমিটিতে। আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রের যুব সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে গোপাল রায়কে। তিনি বর্তমানে জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।