উচ্চতর বিদ্যায় সফলতা আসবে। সরকারি ক্ষেত্রে কর্মলাভের সম্ভাবনা। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসবে। প্রেম-প্রণয়ে মানসিক অস্থিরতা ... বিশদ
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালের নভেম্বর থেকে এ বছরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে ধাপে ধাপে এই কেলেঙ্কারি সংগঠিত হয়েছে। ২০১৯ সালে গোখেল রোডে দি ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে গিয়েছিলেন অরুণ পাণ্ডে ও কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী নামের দু’জন। তাঁরা বউবাজারে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের প্রতিনিধি বলে পরিচয় দেন। বলেন, তাঁদের ব্যাঙ্কে ফিক্সড ডিপোজিট করলে অন্য ব্যাঙ্কের তুলনায় বাড়তি সুদ মিলবে। সংস্থার কর্তাদের এমনভাবে বোঝানো হয় যে, তাঁরা আশ্বস্ত হন। বউবাজারে এই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় ওই ইনস্টিটিউটের অ্যাকাউন্ট রয়েছে। কথা মতো, প্রথম দফায় তারা সেখানে এক কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট করে। এরজন্য ফর্ম ফিলআপ থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহ করেন ওই দুই ব্যক্তি। এরপর আরটিজিএস-এর মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা ট্রান্সফার করা হয় এফডি অ্যাকাউন্টে। এরপর সেখান থেকে ওই টাকা বেরিয়ে যায় অন্য দুটি অ্যাকাউন্টে। টানা আট-ন’ মাস ধরে এভাবেই ধাপে ধাপে ৩৫ কোটি টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করা হয়। বিনিময়ে ওই সংস্থাকে দেওয়া হয় নকল এফডি সার্টিফিকেট। গোটা ঘটনাটি ঘটে ওই ব্যাঙ্কের তদানীন্তন সিনিয়র ম্যানেজার সম্রাট পালের সময়কালে। তিনি জানতেন এফডি’র ওই টাকা সরানো হয়েছে দুটি ভুয়ো অ্যাকাউন্টে। এমনকী টাকা ট্রান্সফার হওয়ার সময়ও ওই ম্যানেজার সংস্থার কর্তাদের বিষয়টি জানাননি। পরবর্তীকালে তিনি ওই শাখা থেকে বদলি হয়ে যান। নতুন ম্যানেজার আসার পর বিষয়টি জানা যায়। তিনি দেখেন, ওই সংস্থার টাকা প্রথম দু’-একবার এফডি অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে। তারপর নিয়ম ভেঙে সেই টাকা চলে গিয়েছে অন্য দুটি অ্যাকাউন্টে। ওই অ্যাকাউন্ট দুটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার নামে খোলা। পরবর্তীকালে যে এফডিগুলি করা হয়েছে, সেই টাকা ইনস্টিটিউটের অ্যাকাউন্টে নয়, সরাসরি জমা পড়েছে ওই দুটি ভুয়ো অ্যাকাউন্টে। অথচ প্রতিটি ক্ষেত্রে জাল সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে ইনস্টিটিউটকে। তাতে ব্যাঙ্কের লোগো, ম্যানেজারের সই—সবই আছে। ফর্ম ঘেঁটে দেখা যায়, এফডি অ্যাকাউন্টগুলি আসলে ওই সংস্থার নামেই নয়, রয়েছে অন্য নামে। দি ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতারণার শিকার হয়েছে। ব্যাঙ্কে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলতে সাহায্য করেছেন তদানীন্তন ম্যানেজার স্বয়ং। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অ্যাকাউন্ট থেকে আবার ওই টাকা ঘুরেছে একাধিক অ্যাকাউন্টে। সেইসব অ্যাকাউন্টও জাল নথির ভিত্তিতে খোলা হয়েছে। অভিযোগ, ব্যাঙ্ক ম্যানেজারকে এই কাজে সাহায্য করেছেন আরও অনেকে। বিনিময়ে তাঁরা আর্থিক সুবিধা পেয়েছেন।
নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ২ নভেম্বর প্রতারণা, জালিয়াতি সহ একাধিক ধারায় কেস রুজু হয়েছে। তদন্তে সেই ম্যানেজার সহ ব্যাঙ্কের ভুয়ো প্রতিনিধি বলে পরিচয় দেওয়া ব্যক্তিদের যোগ নিশ্চিত হওয়ার পর তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।