বিদ্যার্থীদের অধিক পরিশ্রম করতে হবে। অন্যথায় পরীক্ষার ফল ভালো হবে না। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় ভালো ... বিশদ
অশ্বিনীনগর বা বরিশাল কলোনি থেকে কিছুটা দূরে সমাজগড় কলোনি। একতলা-দোতলা বাড়ির ভিড়ের মধ্যে কোথাও কোথাও মাথা তুলছে বহুতল আবাসন। নামে উদ্বাস্তু কলোনি হলেও এলাকার আর্থিক সমৃদ্ধির ছাপ চোখে পড়বে কারও বাড়ির সামনে গাড়ির গ্যারাজ বা সাজানো-গোছানো ঘরবাড়ি দেখে। আবার পলেস্তরা খসে পড়া একতলা বাড়ির অস্তিত্ত্বও রয়েছে। এই এলাকার প্রবীণ মানুষজন এখনও নিজেদের আলাপচারিতায় ফিরে যান দেশোয়ালি উচ্চারণে। সেখানে দাঁড়িয়ে কথা হচ্ছিল স্থানীয় বাসিন্দা কেয়া রায়ের সঙ্গে। একটি স্কুলের শিক্ষিকা তিনি। তাঁর সাফ কথা, এসব নিয়ে এত ‘ইন্টারেস্ট’ নেই। মুখ্যমন্ত্রী তো বলেছেন কিছু হবে না। আর আমরা তো সেই কবে এসেছি। আমার জন্ম এখানে। আমার বাবার জন্মও এখানে। আমরা আবার কী প্রমাণ করব? কেয়াদেবীর বাবা দেবকুমার রায় ১৯৫০ সালে এপারে চলে আসেন বরিশালের ঝালোকাটি থেকে। তারপর বামফ্রন্ট সরকারের সময় জমির পাট্টাও পেয়েছেন। এই নাগরিকত্ব আইন দেশের ‘সংখ্যালঘু অনুপ্রবেশকারী’দের কথা ভেবে করা হয়েছে বলে ধারণা কেয়াদেবীর। এই পাড়ারই যুবক অতনু দাস পেশায় ব্যবসায়ী। বিষয়টি নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের এখানে আপনি সিএবি নিয়ে মানুষের মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাবেন। নানা জল্পনা-কল্পনা, গুজব চলছে। কিন্তু এই আইনই বলুন বা এনআরসি—এসব প্রশাসন কার্যকর করতে শুরু করলে মানুষ বুঝতে পারবে ব্যক্তিগতভাবে সুবিধা বা অসুবিধা কতটা। তার আগে পর্যন্ত আমরা যে উদ্বেগের মধ্যে রয়েছি, একথা ঠিক। যাদবপুরের বিজয়গড় জুড়ে ওপার বাংলা থেকে চলে আসা মানুষের বসবাস বছরের পর বছর ধরে। এখানকার ৮ নম্বর ব্লকের বাসিন্দা অজয়চন্দ্র দাস বলেন, নতুন করে নাগরিকত্বের প্রমাণ দেওয়ার কিছু নেই। আমাদের এখানে বেশিরভাগই তো দেশভাগের পরপরই চলে এসেছে। সাতের দশকেও অল্প কয়েকজন এসেছে। এখানেই সংসার, ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা থেকে চাকরি—সব কিছুই হয়েছে। তাহলে আবার নতুন করে কী প্রমাণ করতে হবে? এই নতুন আইন আদৌ আমাদের জন্য কি না, তাও ঠিকমতো জানি না। এনআরসি, ক্যাব এসব শব্দ আগে তো খুব একটা শুনিনি। আমরা বরং শুনেছি উদ্বাস্তু শিবির, পুনর্বাসন, বিনা শর্তে পাট্টা ইত্যাদি কথা। এসব হয়ে কার কী লাভ হবে, কে জানে! এর চেয়ে বাজারে জিনিসের দাম কমানো, বেকারদের কাজকর্ম নিয়ে সরকার ভাবলে ভালো হতো। এরকমই নানা ভাবনা, জল্পনা, কিছুটা দুশ্চিন্তার দোলাচলে রয়েছেন যাদবপুর এলাকার একাধিক কলোনির হাজার হাজার বাসিন্দা।