বিদ্যায় অধিক পরিশ্রম করতে হবে। ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তির পক্ষে দিনটি শুভ। প্রেম-প্রীতিতে আগ্রহ বাড়বে। নতুন ... বিশদ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের বাবা পেশায় চটকল কর্মী কানাইলাল শর্মা। এদিন তিনি বলেন, মেয়েটার ডেঙ্গু হয়েছিল তা স্থানীয় পরীক্ষাতেই ধরা পড়েছিল। ভালো চিকিৎসার জন্যে কলকাতাতেও গিয়েছিলাম। কিন্তু মেয়েটা বাঁচল না। আমরা বাইরে কোথাও যাইনি। এলাকা থেকেই ওকে ডেঙ্গু মশা কামড়েছে। শিশুটির মৃত্যুর খবর পেয়ে এলাকায় গিয়েছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলার তাপস মৈত্র। তিনি বলেন, এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা ঠিকই আছে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও আমরা নিয়মিত নিই। যে কোনও মৃত্যুই দুঃখজনক। তবে আমরা এলাকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখব।
এদিকে, ডেঙ্গুতে মৃত্যু নিয়ে ঘোলাজলে মাছ ধরতে নেমে পড়েছে গেরুয়া শিবির। মশা দমনে পুরসভার সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। দলের শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শ্যামল দাস বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত পুরসভাগুলি ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কোনও ভূমিকাই নেয়নি। এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা থেকে শুরু করে মশা নিয়ন্ত্রণে কোনও পদক্ষেপই নেওয়া হয় না। লার্ভানাশক থেকে ধোঁয়া দেওয়ার ব্যবস্থাও নেই। শুধু জনসচেতনতায় প্রচার করে বাসিন্দাদের নিরাপত্তা দেওয়া যায় না। এই মৃত্যুর দায় পুরকর্তাদেরই নিতে হবে। পুরসভার চেয়ারম্যান অমিয় মুখোপাধ্যায়কে বারবার ফোন করা হলেও সাড়া মেলেনি।
স্থানীয় ও মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্রীরামপুরের কে এল গোস্বামী স্ট্রিটে চটকল কর্মী কানাইলালবাবু দুই মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন। তাঁর দুই মেয়ের মধ্যে সুনিধিই ছিল ছোট। গত ১২ নভেম্বর ওই শিশুটি জ্বরে পড়ে। সেদিনই তাকে ওয়ালশ হাসপাতালে ভরতি করা হয়। কিন্তু, সেখানে রোগীর চাপ থাকায় ওই পরিবার শিশুটিকে একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যায়। এরই মধ্যে রক্ত পরীক্ষায় শিশুর শরীরে ডেঙ্গু ভাইরাসের অস্তিত্ব মেলে। এরপর গত ১৭ নভেম্বর শিশুটিকে কলকাতা মেডিক্যালে ভরতি করা হয়। ততক্ষণে তার শরীরে প্রবল ব্যথা সহ তৃতীয় পর্যায়ের ডেঙ্গু সংক্রমণের যাবতীয় লক্ষণ দেখা দিতে শুরু করে। মঙ্গলবার ভোররাতে সে মারা যায়।
মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে মৃত্যুর শংসাপত্রে লেখা হয়েছে যে, ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে ওই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। ফলে একদিকে ফুটফুটে একটি শিশুর মৃত্যু এবং তার সঙ্গে ডেঙ্গু যোগ থাকায় শ্রীরামপুর পুরসভা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এমনিতেই ডেঙ্গু প্রতিরোধের পুরসভার ভূমিকা নিয়ে নানান প্রশ্ন ছিলই। এই মৃত্যু সেসব নিয়ে ক্ষোভের আগুন কার্যত উস্কে দিয়েছে। পুরকর্তারা অস্বীকার করলেও মশা নিয়ন্ত্রণে আধুনিক কোনও পদক্ষেপই এই পুরসভায় হয়নি। এমনকী কোথায় কোথায় ডেঙ্গুবাহী মশা আছে তা সমীক্ষার কাজও পুরসভা করেনি বলেই অভিযোগ। যে কারণে ইতিমধ্যেই জ্বরে আক্রান্ত পরিবার তো বটেই আমজনতার মধ্যেও ডেঙ্গু নিয়ে প্রবল আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। পুরসভার উদাসীনতা যা আরও বাড়িয়ে তুলছে।