দক্ষিণবঙ্গ

মাটির বাড়ি, পান বিক্রি করে সংসার-যাপন, সর্বভারতীয় রিয়েলিটি শোয়ে দাপট শুভজিতের

নিজস্ব প্রতিনিধি, খড়গপুর: ভগ্নপ্রায় একটা মাটির বাড়ি। মেন রোড থেকে সেদিকে কিছুটা এগতেই ভেসে এল গানের কলি— ‘তোমায় হৃদ মাঝারে রাখিব, ছেড়ে দেব না’। গানের জন্যই সেই বাড়ি আজ পশ্চিম মেদিনীপুর তো বটেই, গোটা বাংলায় এমনকী গোটা দেশে সুপরিচিত। খড়গপুর-২ ব্লকের চাঙ্গুয়াল গ্রামের ওই বাড়িরই ছেলে শুভজিৎ চক্রবর্তী। যাঁর গানের ফ্যান আজ শ্রেয়া ঘোষাল থেকে বাদশা পর্যন্ত। শুভজিৎ আজ ‘আইডল পানওয়ালা’। সর্বভারতীয় রিয়েলিটি শো ইন্ডিয়ান আইডলের টপ ফিফটিনে রয়েছেন। দেশজুড়ে তাঁর গানের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে। টিভিতে তাঁর বাড়িও দেখিয়েছে। এতে খুশি গ্রামবাসীরাও। গ্রামের বাজার এলাকার চায়ের দোকান থেকে মিষ্টির দোকান, সর্বত্রই মানুষের মুখে মুখে ঘুরছে পান বিক্রেতা গানওয়ালা শুভজিতের নাম। 
নিম্নবিত্ত পরিবারের ছেলে শুভজিৎ। তাঁর বাবা কৃষ্ণদাস চক্রবর্তী গানের শিক্ষক। তাঁর সামান্য কয়েকটা টিউশনির উপরে নির্ভর করেই গড়ায় সংসারের চাকা। শুভজিতের মা বন্দিতা চক্রবর্তী গৃহবধূ। যদিও একসময়ে তিনিও কৃষ্ণদাসবাবুর সঙ্গে যাত্রাদলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। স্বভাবতই ছোট থেকে গান শুভজিতের শিরায় শিরায় প্রবাহিত হয় রক্তের মতোই। ছোট অবস্থাতেই স্টেজে উঠে গান গেয়েছেন শুভজিৎ। তবে গানের হাতেখড়ি হয় বাবার হাত ধরেই। অল্প বয়স থেকেই বাবার কাছে আধুনিক গানের পাশাপাশি লোকসঙ্গীতের তালিম নিতেন। সংসারে শত অভাব অনটন সত্ত্বেও গানের প্রতি তাঁর ভালোবাসা মরে যায়নি। পরে কৃষ্ণদাসবাবু একটি বাউলের দল প্রতিষ্ঠা করেন। সেই দলেও গান গাইতেন শুভজিৎ। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে সমস্যা বেড়ে গিয়েছিল তাঁদের। কৃষ্ণদাসবাবুর গানের টিউশন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শুরু হয় তীব্র আর্থিক সংকট। এরপরে পানের দোকান খুলে ব্যবসা শুরু করে চক্রবর্তী পরিবার। সেই সময়ে দোকানে বসতেন শুভজিৎ ও তাঁর মা। পানের দোকানে বসেই গলা ছেড়ে গান গাইতেন শুভজিৎ। প্রতিবেশীরা দোকানে ভিড় জমাতেন গান শোনার জন্য। এতে বিক্রি বাড়ত বলেই দাবি পরিবারের সকলের। 
এদিন বাড়িতে বসে গান গাইছিলেন শুভজিতের বাবা। হারমোনিয়াম বাজানোর সময় তিনি বলেন, ও খুব অভাবের মধ্যে বড় হয়েছে। দামি পোশাক, দামি খাবার কোনও সময়ে কিনে দিতে পারিনি। কিন্তু নিয়মিত রেওয়াজ করত। আমি চাই ও দেশের নাম উজ্জ্বল করুক। শুভজিৎ পানের দোকানে বসেও গান গাইত। শুভজিতের মা বলেন, আমরা গাড়ি, বাড়ি কিছুই চাই না। ওর গান মানুষ ভালোবাসছে, এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। বাজার থেকে ধারদেনা করে ছেলেকে গান গাইতে পাঠিয়েছি। প্রার্থনা করি, ও অনেক বড় হোক। মানুষের সাপোর্ট ছাড়া তা কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। 
শুভজিতদের মাটির বাড়ির দেওয়ালে বড় ফ্লেক্স লাগানো হয়েছে। গ্রামবাসীরা আশা করছেন, শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা জয় করেই বাড়ি ফিরবেন শুভজিৎ। তাঁর দাদু কালীকিঙ্কর চট্টোপাধ্যায় শয্যাশায়ী। কিন্তু এদিন তিনি ইশারায় বুঝিয়ে দিলেন নাতির জন্য তিনিও গর্বিত। স্থানীয় বাসিন্দা স্বপন মণ্ডল বলেন, ও আমাদের জেলার গর্ব। ওর গান শোনার জন্য শনিবার ও রবিবার অধীর আগ্রহে বসে থাকি। ও অনেক দূর যাবে। একটি বাংলা রিয়েলিটি শোতেও গান করে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল শুভজিৎ। 
এদিন ফোনে শুভজিৎ বলেন, আরও গান শিখতে চাই। আমাকে আরও এগিয়ে যেতে হবে।
(মাটির বাড়ির সামনে শুভজিতের বাবা-মা। নিজস্ব চিত্র)
20d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পড়ে গিয়ে বা পথ দুর্ঘটনায় আঘাতপ্রাপ্তির যোগ থাকায় সতর্ক হন। কর্মে  উন্নতি ও সাফল্যের যোগ।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৪.২৮ টাকা৮৬.০২ টাকা
পাউন্ড১০৪.৮৬ টাকা১০৮.৫৭ টাকা
ইউরো৮৬.৮৬ টাকা৯০.২০ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
25th     December,   2024
দিন পঞ্জিকা