পারিবারিক সম্পত্তি বিভাজনে আইনি চাপ বাড়তে পারে। কাজকর্মে যোগাযোগের অভাবে বিঘ্ন। ... বিশদ
মুর্শিদাবাদ এবার নানা কারণে ‘হাইভোল্টেজ’ কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে। বাম-কংগ্রেস জোটের অন্যতম মুখ তথা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম লড়ছেন এখানে। জোট ভেস্তে দিয়ে মুর্শিদাবাদে প্রার্থী দিয়েছেন নওসাদ। ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রাক্তণ জওয়ান হাবিব শেখ আইএসএফ প্রার্থী। তৃণমুল আস্থা রেখেছে দলের পুরনো সেনাপতির ওপরেই। দলের বিদায়ী সাংসদ আবু তাহের খানকে ফের এই কেন্দ্রে প্রার্থী করেছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে, বিজেপির বাজি বিধায়ক গৌরিশঙ্কর ঘোষ। ফাইন্যাল ম্যাচের প্রচার যুদ্ধে কেউ এগিয়ে, কেউ কিছুটা পিছিয়ে থেকে টক্কর দিচ্ছে এই চারটি দল। বাকিদের প্রচারে সেভাবে দেখা না গেলেও মাঠে রয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য বলছে, মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে এবার মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন মোট ২১ জন প্রার্থী। স্ক্রুটিনিতে বাতিল হয়ে যায় ছ’জন। বাকি ১৫ জনের মনোনয়ন পত্র গ্রহণ করা হলেও শেষপর্যন্ত লড়াইয়ের ময়দানে থেকে যান ১১ জন প্রার্থী। তাঁদের মধ্যে নির্দল হিসেবে লড়ছেন চারজন। শাহাবুদ্দিন মল্লিক, রফিকুল ইসলাম, ধনঞ্জয় সরকার ও কৃষ্ণাপ্রসাদ সরকার। সবার প্রতীক ভিন্ন ভিন্ন। এসইউসির প্রার্থী হয়েছেন মাহাফুজুল আলম। এছাড়াও দক্ষিণ ভারতে বেশ চর্চিত রাজনৈতিক দল এসডিপিআই এর হয়ে লড়ছেন তাহেদুল ইসলাম। ভারতীয় লোকমত রাষ্ট্রবাদী পার্টির হয়ে লড়াই করছেন অসীম রায়।
কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, এগারো জন প্রার্থীর মধ্যে ৮ জন প্রার্থীর নামে কোনও ফৌজদারি মামলা নেই। তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপি ও বাম প্রার্থীর বিরূদ্ধে একাধিক ধারায় ফৌজদারি মামলা রয়েছে। তৃণমূল প্রার্থী আবু তাহের খানের নামে একাধিক ধারায় তিনটি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। বিজেপি প্রার্থীর নামে বিভিন্ন ধারায় পাঁচটি মামলা রয়েছে। অপরদিকে, সিপিএম প্রার্থী মহম্মদ সেলিমের নামেও একাধিক ধারায় পাঁচটি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। যদিও সবক’টি রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের দাবি, রাজনীতি করলে নিজের নামে দু’একটা মামলা থাকবেই।
মুর্শিদাবাদ, ভগবানগোলা, রানিনগর, জলঙ্গি, ডোমকল, হরিহরপাড়া ও করিমপুর মোট সাতটি বিধানসভা মিলিয়ে মুর্শিদাবাদ লোকসভা। এর মধ্যে পাঁচটি বিধানসভা তৃণমূলের দখলে। মুর্শিদাবাদ বিধানসভা বিজেপির। সেখানকার বিধায়ক গৌরিশঙ্কর ঘোষকে এবার দিল্লি নিয়ে যেতে চায় বিজেপি। ভগবানগোলা বিধানসভা তৃণমূলের দখলে থাকলেও ফেব্রুয়ারি মাসে বিধায়ক তথা তৃণমূলের প্রবীণ নেতা ইদ্রিস আলী মারা যান। সেখানে পুনর্নির্বাচন হচ্ছে। তৃণমূলের হয়ে সেখানে লড়ছেন রিয়াত হোসেন।
ভগবানগোলার ভাগ্য কার পক্ষে যাবে, তার উপরও নির্ভর করছে মুর্শিদাবাদ জয়ের। সেখানেও আইএসএফ-কাঁটাকে সামলাতে হবে তৃণমূল, বাম-কংগ্রেস জোট এবং বিজেপিকে। আইএসএফ প্রার্থী মুর্শিদুল আলম সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্কে কতখানি থাবা বসাতে পারবে, সেই সমীকরণ কষছে প্রতিদ্বন্দ্বী সবাই। সার্বিকভাবে মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রেও জয়ের জল্পনায় ইন্ধন যোগাচ্ছে নওসাদের দল। তবে, রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ব্যাখ্যা—নিজেদের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করার মতো আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নেবে না নবাবি মুলুকের সাধারণ মানুষ। তারা শান্তি ও নিরাপত্তার স্বার্থে পছন্দের প্রার্থী বিবেচনা করবে।