শেয়ার ও বিমা সূত্রে অর্থাগম হতে পারে। কাজের প্রসার ও নতুন কর্মলাভের সম্ভাবনা। বিদ্যা হবে। ... বিশদ
কোচবিহার শহরের সিলভার জুবিলি রোডের বাসিন্দা বছর চৌষট্টির আশিস রায়। তাঁর ঠাকুমা ইন্দিরা রায়কে (নারায়ণ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাধিক চিঠি লিখেছিলেন। তার কিছু তিনি বংশানুক্রমিকভাবে আগলে রেখেছেন। ইন্দিরার মৃত্যুর ৪৬ বছর পরেও কবির লেখা চিঠি, উপহারসামগ্রী, রাজআমলের গ্রামোফোন, মহারাজা ও ইন্দিরার স্বামী ক্যাপ্টেন পূর্ণানন্দ রায়ের সঙ্গে সানি কটেজের ক্যান্ডেল লাইট ডিনার সেট, বাকিংহাম প্যালেস থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া সোনার পাতে মোড়ানো বাইবেল, নন্দলাল বসু ও শান্তিদেব ঘোষের লেখা চিঠি, শচীনদেব বর্মনের নানা উপহার, শান্তিনিকেতনে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ইন্দিরার যোগ দেওয়া বিভিন্ন অনুষ্ঠানের কার্ড, নানান দলিল দস্তাবেজ সামলে রেখেছেন ইন্দিরার নাতি আশিসবাবু।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রাজার শহর কোচবিহারে না এলেও রাজ পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল তাঁর। আশিসবাবুর ঠাকুমা ইন্দিরা রায় (নারায়ণ) কোচবিহারের প্রথম মহিলা স্নাতক ছিলেন। ১৯০২ সালে তাঁর জন্ম। মৃত্যু ১৯৭৮ সালে। স্বামীর নাম পূর্ণানন্দ রায়। যিনি মহারাজার পদস্থ কর্তাদের একজন (এডিসি) ছিলেন। ইতিহাস গবেষকরা জানিয়েছেন, তিরিশের দশকে কোচবিহারের রাজকন্যা গায়ত্রীদেবী ও ইলাদেবী শান্তিনিকেতনে বাংলা শেখার জন্য গিয়েছিলেন। সেখানে তাঁদের অভিভাবিকা হিসেবে ছিলেন ইন্দিরা রায় (নারায়ণ)। সেই সূত্রেই সঙ্গীত ও চিত্রকলার ছাত্রী হিসেবে রবীন্দ্রনাথের স্নেহেরপাত্রী হয়ে উঠেছিলেন ইন্দিরা। পরে কোচবিহারে ফিরে আসার পর তাঁকে একাধিকবার চিঠি পাঠিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। গবেষকদের মতে, রবীন্দ্রনাথ কখনও কোচবিহারে আসেননি। তবে রাজ পরিবারের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ছিল। মহারানি সুনীতিদেবীর সঙ্গে দার্জিলিংয়ে একাধিকবার কবির সাক্ষাৎ হয়েছিল। তিরিশের দশকে ইন্দিরাদেবী শান্তিনিকেতনে থাকার সুবাদে তিনিও কবির স্নেহধন্য হন।
চিঠিতে ইন্দিরা রায়কে (নারায়ণ) রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, ‘... গরম পড়েছে বটে। কিন্তু অত্যন্ত বেশি নয়। তবু শরীরটাকে আর একবার একটুখানি তাজা করে নেওয়ার দরকার আছে। হয়তো শিলং যাওয়া হবে। যদি বাড়ি না পাই তা হলে পুরীতে যাওয়ার চেষ্টা করব। তাও যদি না ঘটে ওঠে তা হলে যেখানে আছি সেখানেই থেকে যাব। কিন্তু জ্যৈষ্ঠ মাসে এখানে থাকবার কথা চিন্তা করলে দেহটা শুকিয়ে আসে...’।
আশিসবাবু বলেন, ওই চিঠি ইতিহাসের দলিল। ফলে সেসব কতদিন রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারব, তা নিয়ে চিন্তা তো রয়েছে। এই চিঠির সঙ্গে কোচবিহারের আবেগ জড়িয়ে আছে।