নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: সোশ্যাল মিডিয়ায় রিলস, শর্টসের নাচ, অভিনয়ের ভিডিও দেখে শখ জন্মায় অভিনয়ের। আর সেই স্বপ্নের হাতছানিতেই বাড়ি ছেড়ে কলকাতায় পাড়ি জমায় জলপাইগুড়ির দুই নাবালিকা অ্যাথলিট। যা নিয়ে হুলুস্থল বেঁধে যায় দুই অ্যাথলিটের পরিবারে। জল গড়ায় থানা পুলিসেও। শেষ পর্যন্ত শনিবার নাবালিকারা ঘরে ফিরতেই যেন ধড়ে প্রাণ ফিরে পেল দুই অ্যাথলিটের পরিবার। মেয়েরা ফিরে আসায় একদিকে যেমন স্বস্তি পেল পরিবার দু’টি, অন্যদিকে মেয়েদের খেয়ালখুশির কথা জানতে পেরে তাঁরাও কি করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না। এদিকে, কোতোয়ালি থানার পুলিস দুই নাবালিকার বয়ান নিয়েছে। পুলিসের খাতায় নিখোঁজ থাকা কেউ বাড়ি ফেরার পর যা আইনি প্রক্রিয়া প্রয়োজন তা এই দুই নাবালিকার ক্ষেত্রেও সম্পন্ন করার কাজ শুরু হয়েছে।
এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহে জলপাইগুড়ি শহর ও সংলগ্ন ফোল্ডিং মোড় এলাকার দুই নাবালিকা বাড়ি থেকে উধাও হয়ে যায়। এদের মধ্যে একজন কদমতলা বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী, অপরজন সেন্ট্রাল গার্লসের। দু’জনেই বন্ধু। একসঙ্গে অ্যাথলেটিক্স একই মাঠে অনুশীলন করে। দু’জনই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে এবার। দু’জনই শিক্ষাগত যোগ্যতার শংসাপত্র, আধারকার্ড, ভোটের কার্ড, নগদ কিছু টাকা সহ কিছু জামাকাপড় নিয়ে বাড়ি থেকে উধাও হয়ে যায়। এদিকে, মেয়েদের খুঁজে না পেয়ে তন্নতন্ন করে খুঁজে বেড়ায় দুই পরিবার। স্বাভাবিকভাবেই কোতোয়ালি থানার পুলিসেরও দ্বারস্থ হন তাঁরা। মিসিং ডায়েরি করেন। এর মাঝে এক-দু’বার অপরিচিত নম্বর থেকে মেয়েদের ফোন পেয়ে পরিবার জানতে পারে তারা কলকাতায় আছে। কিন্তু কলকাতা গিয়েও মেয়েদের হদিশ মেলেনি। ব্যর্থ হয়েই কলকাতা থেকে কার্যত জলপাইগুড়িতে ফেরে ওই দুই নাবালিকার পরিবার।
১০ দিন বাদে শনিবার নিজেরাই বাড়ি ফিরে আসে। নাবালিকারা জানায় রিলস, শর্টসের নাচ, অভিনয়ের ভিডিও দেখে তাদের অভিনয় করার ইচ্ছা হয়। কিন্তু বাড়িতে জানালে বকাঝকা খেতে হতে পারে। তাই তারা পরিবারের কাউকে কিছু না জানিয়ে পালিয়ে যায়। ওই নাবালিকাদের বক্তব্য, সল্টলেকে একটি বহুজাতিক সিরিয়াল, সিনেমা প্রোডাকশন সংস্থার অফিসে তারা অডিশন দিতে গিয়েছিল। শিয়ালদহ স্টেশনে তারা রাত কাটিয়েছে। কিন্তু সেখানে কাজ না পেয়ে ফিরে এসেছে। এদিকে, নাবালিকাদের মা ও অন্যান্য আত্মীয়রা বলেন, ওরা যে সুস্থভাবে বাড়ি ফিরেছে এতেই আমরা শান্তি পেয়েছি। কোতোয়ালি থানার আইসি সঞ্জয় দত্ত বলেন, মিসিং ডায়েরি হয়েছিল। তার ভিত্তিতে আমরা দুই নাবালিকার বয়ান নিচ্ছি। প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে। a