সম্পত্তিজনিত বিষয়ে অশান্তি বৃদ্ধির আশঙ্কা, আত্মীয়-পরিজনের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি। শেয়ার, ফাটকা, লটারিতে অর্থাগম, কর্মক্ষেত্রে গোলযোগের ... বিশদ
গত ২৪ অক্টোবর মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনের ফল বেরনোর পর থেকেই রাজ্যের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। বিজেপি একক বৃহত্তম দল হলেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকে অনেক দূরে থাকায় সরকার গড়ার জন্য শিবসেনার সমর্থন প্রয়োজন। কিন্তু, দুই শরিক দলই মুখ্যমন্ত্রীর পদ নিয়ে অনড় থাকায় সরকার গড়ার সময়সীমার শেষ সীমাতেও নয়া প্রশাসন পেলেন না মহারাষ্ট্রবাসী। মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করলেন ফড়নবিশ। এদিন রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারির কাছে যান তিনি। এবং ইস্তফাপত্র জমা দেন। পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ফড়নবিশ বলেন, ‘রাজ্যপাল আমার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন। পাঁচ বছর রাজ্যবাসীর সেবা করার সুযোগ দেওয়ার জন্য মহারাষ্ট্রবাসীকে ধন্যবাদ। এই পরিস্থিতিতে নতুন সরকার বা রাষ্ট্রপতি শাসন, যেকোনও একটি বিকল্প হতে পারে।’
ছোট শরিক শিবসেনার অনড় অবস্থান নিয়ে এতদিন কোনও মন্তব্য না করলেও শুক্রবার তা নিয়ে মুখ খোলেন ফড়নবিশ। মুখ্যমন্ত্রী ভাগাভাগি নিয়ে কোনওরকম আলোচনা হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আবার একটা বিষয় পরিষ্কার করে দিতে চাই যে এ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। এমনকী, অমিত শাহজি ও নিতিন গাদকারিজিও বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর ভাগ নিয়ে কথা হয়নি।’ বিভিন্ন সময়ে উদ্ধবজি সঙ্কট কাটালেও ভোটের ফল পরবর্তী সময়ে তাঁর ফোন ধরেননি বলে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মহারাষ্ট্রের সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের অচলাবস্থার জন্য শিবসেনার ‘নীতি’কে দায়ী করে তিনি বলেছেন, ‘ফল প্রকাশের পর উদ্ধবজি বলেছিলেন, সরকার গড়তে সবরকম পথ খোলা রয়েছে। রাজ্যবাসী যখন আমাদের জোট সরকার গড়ার রায় দিয়েছে, তখন তাঁর এ ধরনের মন্তব্য অত্যন্ত হতাশজনক।’
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গাদকারিও এদিন বলেন, ৫০-৫০ মুখ্যমন্ত্রী নিয়ে শিবসেনার সঙ্গে কোনওরকম আলোচনা হয়নি। সেইসঙ্গে বালাসাহেবের অতীতের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি বলেছেন, ‘শিবসেনা-বিজেপির অংশীদারিত্ব নিয়ে উনিও বলেছিলেন যে দলের বিধায়ক বেশি থাকবে, তারাই মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবি করবে।’ এদিনই মহারাষ্ট্রের উচ্চশিক্ষামন্ত্রী বিনোদ তাওদে এবং বিদ্যুৎমন্ত্রী চন্দ্রশেখর বাওয়ানকুলে গাদকারির সঙ্গে দেখা করেন। সঙ্গে ছিলেন, এবারের ভোটে টিকিট না পাওয়া বিজেপি বেশ কয়েকজন নেতা।
এদিকে, ফড়নবিশের দাবি নিয়ে বড় শরিক বিজেপিকে পাল্টা আক্রমণ করেছে শিবেসেনা। বিজেপি নেতৃত্বকে মিথ্যাবাদী আখ্যা দিয়ে শিবসেনা সুপ্রিমো উদ্ধব থ্যাকারে বলেছেন, ‘দেবেন্দ্র ফড়নবিশ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে কথা বলার অভিযোগ এনেছেন। অমিত শাহ ও দেবেন্দ্র ফড়নবিশ আমার কাছে এসেছিলেন। আমি ওদের কাছে যায়নি।’ একধাপ এগিয়ে তিনি আরও বলেছেন, ‘ওঁরা যা বলেছেন, সেই প্রতিশ্রুতি পালন করুন। আমি ওঁদের সঙ্গে কথা বলব না।’ একইসঙ্গে কর্ণাটকে বিজেপির বিরুদ্ধে ঘোড়া কেনা-বেচার অভিযোগ এনে উদ্ধব বলেছেন, ‘মহারাষ্ট্রে বিজেপিকে সরকার গড়তে আমি চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি।’
অন্যদিকে, বৃহস্পতিবারই নিজেদের বিধায়কদের হোটেলবন্দি করেছিল শিবসেনা। শুক্রবার নব নির্বাচিত বিধায়কদের জন্য পুলিসি নিরাপত্তা দাবি করেছে তারা। এছাড়া মহারাষ্ট্রের সঙ্কট মেটাতে এদিন এনসিপি সুপ্রিমো শারদ পাওয়ারের সঙ্গে দেখা করেন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী রামদাস আটাওয়ালে। পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখ হয়ে পাওয়ার বলেন, ‘মহারাষ্ট্রে এরকম পরিস্থিতি থাকা বাঞ্ছনীয় নয়। রাজ্যের সঙ্কট নিয়ে উনি (আটাওয়ালে) উপদেশ চেয়েছিলেন। আমি বলেছি, রাজ্যের মানুষ বিজেপি-শিবসেনাকে সরকার গড়তে রায় দিয়েছে।’