রাঁচি, ১২ জুলাই: ¬মাত্র দিন কয়েক আগে এক শিশুকে বলি দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল অসমে। ওই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার ঝাড়খণ্ডে কুসংস্কারের বশে দুই শিশুকে বলি দেওয়ার অভিযোগ উঠল। বৃহস্পতিবার লাতেহার জেলার মানিকা থানার সেমারহাট গ্রামের ঝোপঝাড় দিয়ে আড়াল করা বালির স্তূপের মধ্যে পাওয়া গেল দুই শিশুর মুণ্ডহীন দেহ। তাদের বয়স আনুমানিক ১০ থেকে ১১ বছরের মধ্যে। কুসংস্কারের বশে কোনও তান্ত্রিকের পরামর্শে ওই শিশুদের বলি দেওয়া হয়েছে কি না, খতিয়ে দেখছে পুলিস। এই ঘটনায় এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। স্থানীয় ও পুলিস সূত্রের খবর, বুধবার সন্ধ্যা থেকে সেমারহাট গ্রামের বাসিন্দা নির্মল ওঁরা (১১) এবং শীলা কুমারী (১০) নিখোঁজ ছিল। তারা দু’জনেই পৃথক পরিবারের সদস্য। এদিন সকালে ঝোপের মধ্যে একটি বালির ঢিবি থেকে তাদের পা বেরিয়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। এরপর তাঁরা থানায় খবর দেন। পরে পুলিস এসে দুই শিশুর দেহ উদ্ধার করে। তাদের দেহের পাশে মাটির প্রদীপ, শস্যদানা পড়ে থাকতে দেখা যায়। শিশু দু’টির মাথা অবশ্য পাওয়া যায়নি। নির্মলের বাবা বীরেন্দ্র ওঁরা অবশ্য তাঁর ছেলেকে খুনের জন্য প্রতিবেশী সুনীল ওঁরাকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, সুনীল কালো জাদু করে ছেলেকে মেরে ফেলেছে। আমি ওর কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে শিশু বলির খবর চাউর হতেই গ্রামের মানুষের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়ায়। নিহত দুই শিশুর বাড়িতে ভিড় করেন এলাকার বাসিন্দারা। লাতেহারের এসডিও জয়প্রকাশ ঝা ও এসডিপিও অমরনাথ বিশাল পুলিস বাহিনী নিয়ে দ্রুত ওই গ্রামে পৌঁছে যান। ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সুনীলের বাড়িতে রক্তের দাগ দেখতে পাওয়া যায়। এসডিও জয়প্রকাশ ঝা অবশ্য বলির ঘটনা উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ওই দুই শিশুকে খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। তবে সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি তদন্ত শুরু করেছে ফরেন্সিক টিম। তাঁরা ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছেন। একইসঙ্গে দুই শিশুর মাথার খোঁজ চলছে। জেলার পুলিস সুপার প্রশান্ত আনন্দ বলেন, ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সুনীল ওঁরাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আগেও একটি খুনের অভিযোগ উঠেছিল। এদিকে জেলা পুলিসের তরফে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করে তদন্ত শুরু হয়েছে।