উপস্থিত বুদ্ধি ও সময়োচিত সিদ্ধান্তে শত্রুদমন ও কর্মে সাফল্য। ব্যবসায় গোলযোগ। প্রিয়জনের শরীর-স্বাস্থ্যে অবনতি। উচ্চশিক্ষায় ... বিশদ
সিআইডি সূত্রে জানা যাচ্ছে, ২০১৬ সালে পশ্চিম মেদিনীপুরে একটি গাড়ি দুর্ঘটনা হয়। সেই গাড়িতে করেই ৪৫ লক্ষ টাকা নিয়ে যাচ্ছিলেন গোরু কারবারি ইউনিস। কয়েকদিন পর ইউনিস পুলিসকে জানান, ওই গাড়িতে থাকা ৪৫ লক্ষ টাকা লোপাট হয়ে গিয়েছে। তাঁর দাবি ছিল, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার তদানীন্তন পুলিস সুপার ভারতী ঘোষের নির্দেশেই অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে খড়্গপুর টাউন থানা। পুলিসের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ এনে ইউনিস হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। আদালত জেলা পুলিসের শীর্ষকর্তাকে বিষয়টি অনুসন্ধান করতে বলেন। ভারতীদেবী এক অফিসারকে দিয়ে তদন্ত করান। তদন্ত শেষে রিপোর্ট জমা পড়ে ভারতীদেবীর কাছে। তাতে বলা হয়, গাড়িতে কোনও টাকা ছিল না। পরে ইউনিস হাইকোর্টে রিট পিটিশন প্রত্যাহার করে নেন। অভিযোগ, ভারতীদেবীর চাপেই তিনি তা করতে বাধ্য হয়েছেন।
ভারতী ঘোষ চাকরি থেকে স্বেচ্ছাবসর নেওয়ার পর ইউনিস সিআইডিকে গোটা ঘটনার কথা জানান। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে তারা একটি মামলা রুজু করে। তাতে ডাকে পড়ে খড়্গপুর থানার তদানীন্তন সাব ইন্সপেক্টর রাজশেখর পাইনের। সিআইডির দাবি, তদন্তকারী অফিসারদের সামনে রাজশেখরবাবু মেনে নেন যে, গাড়িতে ৪৫ লক্ষ টাকা ছিল। তা সরিয়ে ফেলা হয়েছে। পুলিস সুপারের নির্দেশেই সেদিন অভিযোগ নেওয়া হয়নি। গোটা ঘটনার জন্য তিনি তৎকালীন পুলিস সুপারের দিকেই অভিযোগের আঙুল তোলেন।
তখনই সিআইডি অফিসাররা সন্দেহ করেন এর পিছনে ভারতীদেবীর মদত থাকতে পারে। সেই মামলায় ডেকে পাঠানো হয় ঘাটালের বিজেপি প্রার্থীকে। তদন্তকারী সংস্থার নোটিস পেয়ে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ ভারতীদেবী ভবানী ভবনে হাজির হন। তাঁর কাছে অফিসাররা জানতে চান, ওই গাড়িতে থাকা ৪৫ লক্ষ টাকা কোথায়? ভারতী ঘোষ তাঁদের পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, টাকা থাকার প্রমাণ ও কাগজপত্র কী রয়েছে। আর ইউনুস কোন ব্যাঙ্ক থেকে এই টাকা তুলেছিলেন, সেই নথি কি সিআইডির কাছে রয়েছে? অভিযোগকারী কি তা জমা দিয়েছেন তদন্তকারী অফিসারদের? পাল্টা প্রশ্নে খানিকটা অস্বস্তিতে পড়লেও পরে তা সামলে নিয়ে অফিসাররা বলেন, বিভিন্ন লোকের এ সংক্রান্ত বয়ান তাঁদের কাছে রয়েছে। কীভাবে টাকা সরানো হয়েছিল এবং তার ভাগ কে কে পেয়েছিলেন, সেই নথিও হাতে পেয়েছেন তদন্তকারীরা। নির্দিষ্ট সময়েই তা আদালতে পেশ করা হবে। অভিযোগ কেন নেওয়া হয়নি, এই প্রশ্নও করা হয় ভারতীদেবীকে। এই প্রাক্তন পুলিস সুপারের যুক্তি ছিল, ইউনিস জেলার পুলিস সুপার বা অন্য শীর্ষকর্তার কাছে এই নিয়ে কোনও অভিযোগ জানাননি। ২০১৬ সালের ঘটনার কথা তিনি কেন ২০১৮ সালে সিআইডিকে জানালেন। ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই তো তিনি অভিযোগ জানাতে পারতেন। তদন্তকারী অফিসারদের দাবি, ইউনিস ওই সময়ে অভিযোগ জানিয়ে কোনও ফল পাননি, সেই কপি তাঁদের হাতে রয়েছে। এদিকে, জেরার বিষয়ে ভারতীদেবীকে জিজ্ঞাসা করা হলে তাঁর বক্তব্য, মিথ্যা মামলায় সিআইডি তাঁকে ফাঁসাতে চাইছে। পুরোটাই রাজনৈতিক চক্রান্ত।